জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এক জরুরি বৈঠকে ইরানের ওপর ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসনের কড়া সমালোচনা করেছে পাকিস্তান, চীন, রাশিয়া ও আলজেরিয়া। এই চারটি দেশ একযোগে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে জানিয়েছে—ইরানের ওপর এই হামলা কেবল একটি দেশের নিরাপত্তাই নয়, পুরো মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতাকেই হুমকির মুখে ফেলছে।
শনিবার (২১ জুন) সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড সূত্রে জানা যায়, এই বৈঠক মূলত এই চার দেশের আহ্বানে অনুষ্ঠিত হয়। তারা জাতিসংঘের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানায়—ইসরায়েল একতরফাভাবে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে এবং পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার বিপজ্জনক নজির স্থাপন করছে।
রাশিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া বলেন—“ইরানের শান্তিপূর্ণ বেসামরিক পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু বানানো হচ্ছে। এতে ভয়াবহ পারমাণবিক বিপর্যয়ের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এমন স্থাপনায় হামলা চালানো যায় না।”
চীনের প্রতিনিধি ফু কং বলেন“ইসরায়েলের এই হামলা আন্তর্জাতিক আইন ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের স্বীকৃত নিয়ম লঙ্ঘন করেছে। এটি ইরানের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তাকে ক্ষুণ্ন করছে এবং গোটা অঞ্চলের শান্তি বিপন্ন করছে।”
পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত আসিম ইফতিখার আহমদ বলেন“ইসরায়েলের প্রকাশ্য সামরিক আগ্রাসন ও হামলাগুলোকে আমরা নিঃসন্দেহে নিন্দা জানাই। এটি কেবল ইরানের জন্য নয়, গোটা অঞ্চলের এবং বিশ্বশান্তির জন্য গভীর হুমকি।”
আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত আমার বেনদজামা বলেন“বিনা উসকানিতে ও অযৌক্তিকভাবে চালানো এই হামলা জাতিসংঘ সনদের প্রকাশ্য লঙ্ঘন।”
বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনা এখন এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে একটি বড় ধরনের সংঘাত প্রায় অনিবার্য হয়ে উঠেছে। পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার মতো স্পর্শকাতর ইস্যু গোটা বিশ্বের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জাতিসংঘের এই আলোচনার পর মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক মানচিত্র ও নিরাপত্তা কাঠামো আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। পশ্চিমা বিশ্ব এখনো এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক অবস্থান জানায়নি, তবে তীব্র সমালোচনার মুখে ইসরায়েল কূটনৈতিকভাবে চাপে পড়েছে বলেই মনে করছেন কূটনীতিকরা।
এনএইচ/