বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫ ।। ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ ।। ২ জিলহজ ১৪৪৬

শিরোনাম :
সিরীয়ার উপর থেকে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলো ইউরোপীয় ইউনিয়ন রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে সাসাকাওয়ার সহযোগিতা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা ঈদুল আজহা উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয় মুফতী বোর্ডের মতবিনিময় অনুষ্ঠিত আবরার ফাহাদকে হত্যা বৈধ ছিল : ছাত্র ইউনিয়ন নেতা ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধাপরাধ হচ্ছে: ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ‘ভারতের দালালরা ছোবল মারতে দেশের মধ্যেেই ঘাঁপটি মেরে আছে’ হেফাজতের মামলা সংখ্যা ৪৪টি নয়, ২২০টি কাজী নজরুল বাংলার সার্বজনীন কবি: অভিনেতা আবদুল আজিজ বাংলাদেশের আকাশে জিলহজের চাঁদ, ঈদুল আজহা ৭ জুন শাপলার গণহত্যার সমর্থক শাহবাগীদেরও বিচার করতে হবে: হেফাজতে ইসলাম

মাদ্রাসা ছাত্র থেকে পাকিস্তানের ফিল্ড মার্শাল


নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ছবি: সংগৃহীত

ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক যুদ্ধে সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে ফের শিরোনামে উঠে এসেছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির। বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে দেশের সর্বোচ্চ সামরিক পদ ফিল্ড মার্শালে উন্নীত করেছে পাকিস্তান সরকার। এ পদোন্নতির পর তার ব্যক্তিগত জীবন ও শুরুর পথচলা নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে শুরু হয়েছে আলোচনা। বিশেষ করে তার সাধারণ পরিবার থেকে উঠে আসা এবং মাদ্রাসা শিক্ষার পটভূমি তাকে আলাদা মাত্রা দিয়েছে।

সংবাদমাধ্যম মানি কন্ট্রোল–এর এক প্রতিবেদনে (প্রকাশিত ২ মে) জানানো হয়েছে, পাকিস্তানের ইতিহাসে অধিকাংশ সেনাপ্রধান এসেছেন সামরিক, আমলাতান্ত্রিক বা উচ্চপদস্থ প্রভাবশালী পরিবার থেকে। তবে সদ্য ফিল্ড মার্শাল পদে উন্নীত হওয়া আসিম মুনির এর ব্যতিক্রম। তিনি বেড়ে উঠেছেন এক সাধারণ পরিবারে।

তার বাবা ছিলেন একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় তিনি ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের জালান্দার থেকে পাকিস্তানে চলে আসেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি মসজিদে ইমামের দায়িত্বও পালন করতেন।

ধর্মীয় পরিবেশে বেড়ে ওঠা আসিম মুনির তার শিক্ষাজীবন শুরু করেন রাওয়ালপিন্ডির মারকাজ মাদরাসা দারুল তাওহীদে। সেখান থেকেই তার জীবনযাত্রায় ইসলামী মূল্যবোধের প্রভাব গড়ে ওঠে।

মাদরাসায় পড়াশোনা সত্ত্বেও তিনি অ্যাবাটোবাদের পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি থেকে নিজের গ্র্যাজুয়েশেন সম্পন্ন করেন। এরপর ফ্রন্টিয়ার ফোর্স রেজিমেন্টের ২৩নং ব্যাটালিয়নে প্রথম কমিশন পান তিনি।

এরপর তাকে সৌদি আরবে পাঠায় পাক সেনাবাহিনী। সেখানেই তিনি সম্পূর্ণ কোরআন মুখস্ত করে কোরআনে হাফেজ হন। তিনি তার বক্তব্যে প্রায় সময়ই কোরআনের আয়াত উদ্ধৃত করে কথা বলেন। ফিল্ড মার্শাল মুনির উর্দু, ইংরেজির পাশাপাশি আরবিতেও কথা বলতে পারেন।

তিনিই পাকিস্তানের ইতিহাসে একমাত্র সেনাপ্রধান যিনি মাদরাসার ছাত্র থেকে সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ পদে আসীন হয়েছেন।

আসিম মুনির তার সামরিক ক্যারিয়ার শুরু করেন জেনারেল জিয়ার আমলে ১৯৮৬ সালে। তিনি ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সামরিক গোয়েন্দা প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০১৮ সালে দেশটির প্রধান গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের মহাপরিচালক হিসেবে নিযুক্ত হন। কিন্তু তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে মাত্র ৮ মাসের মাথায় এ পদ হারান তিনি। তাদের দ্বন্দ্ব এতটাই বেশি ছিল যে ইমরান খান প্রকাশ্যে মুনিরের সমালোচনা শুরু করেন।

আইএসআই প্রধানের পদ থেকে অপসারণের পর তাকে ট্রিপল এক্স কর্পসের কমান্ডারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরবর্তীতে কোয়ার্টার মাস্টার হন তিনি। তবে ২০২২ সালে অনাস্থা ভোটে ইমরান খান প্রধানমন্ত্রিত্ব হারালে তাকে সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ দেয় শেহবাজ শরিফ সরকার। এরপর তিনি দেশটির সবচেয়ে ক্ষমতাবান মানুষে পরিণত হন।

২০২৪ সালে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে ইমরান খানের দলকে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করতে দেওয়া হয়নি। এছাড়া ইমরানের দলের নেতাকর্মীদের ওপর ব্যাপক ধরপাকড় ও নির্যাতন চালানো হয়। এসবের পিছনে আসিম মুনিরের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ আছে। ইমরানকে কারারুদ্ধ করে রাখা এবং তার সমর্থকদের ওপর নির্যাতনের কারণে সেনাবাহিনী ও মুনির ইমেজ সংকটে পড়ে। তবে ভারতের বিরুদ্ধ গত ১৫ দিনে লড়াই পাকিস্তানের হয়েয়ে সেটির পর সেনাবাহিনী ও মুনির উভয়ই আবার জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন।

সূত্র: মানি কন্ট্রোল

এসএকে/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ