মুহাম্মদ মিজানুর রহমান
অনেকেই মাঝেমধ্যে হঠাৎ করে ঘুমের মধ্যে বা বিশ্রামের সময় পায়ের পেশিতে তীব্র টান বা খিঁচ ধরার অভিজ্ঞতা অনুভব করেন। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় মাসল ক্র্যাম্প বা স্পাজম। বিশেষ করে পায়ের পেছনের অংশ (কাফ মাসল) বা পায়ের পাতায় এ সমস্যা বেশি দেখা যায়।
কেন এই টান পড়ে?
১. পানি ও লবণের ঘাটতি:
ঘাম, ডায়রিয়া বা পর্যাপ্ত পানি না খেলে শরীরে ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য নষ্ট হয়। এতে পেশি সংকোচনে সমস্যা হয়।
২. পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতি:
এই খনিজগুলোর অভাবে পেশি ঠিকভাবে কাজ করতে পারে না, ফলে খিঁচ ধরে।
৩. হঠাৎ অতিরিক্ত ব্যায়াম:
নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যস্ত না হয়ে হঠাৎ বেশি হাঁটা, দৌড়ানো বা ভারী কাজ করলে পেশিতে টান পড়ে।
৪. রক্ত চলাচলের সমস্যা:
রক্ত সঞ্চালন ভালো না হলে পেশিতে অক্সিজেন কম পৌঁছে, ফলে খিঁচ ধরা শুরু হয়।
৫. গর্ভাবস্থা ও বয়স:
গর্ভবতী নারীরা ও বয়স্করা এ সমস্যায় বেশি ভোগেন, কারণ শরীরে চাপ ও পেশি দুর্বলতা বাড়ে।
৬. নির্দিষ্ট ওষুধ:
যেমন ডিউরেটিক, স্ট্যাটিন ইত্যাদি কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় মাসল ক্র্যাম্প হতে পারে।
করণীয় : পর্যাপ্ত পানি পান করুন , প্রতিদিন হালকা স্ট্রেচিং করুন, ম্যাগনেশিয়াম বা পটাশিয়ামসমৃদ্ধ খাবার খান (যেমন কলা, খেজুর, নারকেল পানি) , খিঁচ ধরা অবস্থায় আক্রান্ত জায়গা ধীরে ধীরে টেনে ধরে রাখুন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন ।
পায়ের পেশিতে টান পড়া একটি অস্বস্তিকর কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে অস্থায়ী ও নিরীহ সমস্যা। তবে বারবার বা দীর্ঘস্থায়ী টান অনুভূত হলে এটি শরীরের ভেতরে বিদ্যমান কোনো পুষ্টিহীনতা, স্নায়বিক সমস্যা কিংবা রক্ত সঞ্চালনের জটিলতার ইঙ্গিত হতে পারে। তাই সময়মতো সঠিক জীবনযাপন, পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ, পর্যাপ্ত পানি পান এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণের মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব।