সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫ ।। ২৫ কার্তিক ১৪৩২ ।। ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
‘তারেকের নামের সমান আল্লাহর নাম নিলে বেহেশতের কাছাকাছি চলে যেতাম’ ২০২৬ সালে সরকারি যত ছুটি পবিত্র কোরআনের কসম, বিজেপির সঙ্গে আঁতাত করিনি: ওমর আবদুল্লাহ যুদ্ধবাজ ইসরাইলকে ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনীর কড়া হুঁশিয়ারি ‘ জুলাই বিপ্লবীদের ধৈর্য পরীক্ষা করবেন না, এটা নতুন বাংলাদেশ: প্রেস সচিব  ছেলে ছাত্রদল, সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা জামায়াত প্রার্থীর ২০১৪ সালে গাজায় নিহত সেনা কর্মকর্তার মরদেহ ফেরত পেল ইসরায়েল ভারতীয় আধিপত্য ও ফ্যাসিবাদ মুক্ত সংসদ চাই: হাসনাত  মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত সুদানের এল-ফাশার, ৮৯ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূতদের জয়জয়কার

সবুজ স্মৃতিতে হজরত গহরপুরীই গোলাপ-বকুল!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

হুমায়ুন আইয়ুব

সবার মতো আমার শৈশবও জলরঙে আঁকা। শৈশবের স্মৃতিরা খেলা করে শব্দের মিছিলে। কখনও জেগে থাকে মনে। মনের আকাশে। একান্তে। আজ একান্ত স্মৃতির কথাই বলি। বলি সুবাসিত এক বিকেলের গল্প।

তাইসির বা ৫ম শ্রেণিতে পড়ি। কিশোরগঞ্জ ভাগলপুর জামিয়া ইসলামিয়া মাযাহির উলুম মাদরাসায়। এক বিকালে বাবা এলেন মাদরাসায়। সঙ্গে বড়চাচা আব্দুল আলী। বাবার চেহারা বেশ ফুরফুরে। গায়ের জামা কাপড়ও পরিচ্ছন্ন। কে জানে গুলে লাইলা আতরও মেখেছেন কি না?

আমাকে কোথাও নিয়ে যাবেন বলে-মাদারাস থেকে ছুটি নিয়েছেন। আমার মনে বসন্তের আমেজ। আজ পড়াশোনা নেই! ছুটি।

বাবার আঙুল ধরে হাঁটছি। সাপের মতো বয়ে চলা রেল লাইন ঘেঁষে। কুলিয়ারচর যাবো। যাবো- কুলিয়ারচরের নুরুল উলুমের সুবাসতি মজমায়। পথে পথে বাবার মুখে বাঙ্মময় হয়ে ওঠছে একটি নাম- মাওলানা নূরউদ্দীন আহমদ গহরপুরী রহ.। উম্মাহর হৃদয়ের দরদি রাখাল। যিনি মানুষের হৃদয়ে চাষবাস করেন ইলাল্লাহর বীজ। পথভুলা মানুষের বধ্যভূমি সজীব করে তুলেন আল্লাহ প্রেমের শারানান তাহুরায়।

বাবা কবে কোথায় মাওলানা নূরউদ্দীন গহরপুরী রহ.-এর হাতে আত্মশুদ্ধির পাঠ নিয়েছেন জানা নেই। তবে তিনি গহরপুরী রহ.-এর চিন্তার দাস। আশেক! হজরতের হাতে বায়াত।

 সকাল বিকাল নিয়ম করে আজিফা আদায়; আশপাশের কোথাও হজরত গহরপুরীর মাহফিল হলে ছুটে চলা একান্তই বাবার নিয়মিত রুটিন।

আজ কুলিয়ারচরের পথে। বাবা পুরোনো কত কথাই বলছেন। গল্পের পর গল্প। মাওলানা নূরউদ্দীন গহরপুরী রহ. কুলিয়ারচরের নুরুল উলুমে আজ বুখারি শরিফের সবক পড়াবেন। বিকাল-সন্ধ্যায় ভক্ত-মুরিদের উদ্দেশে বয়ানও করবেন। আলতু মনে তখন বয়ান শুনলেও স্মৃতির পাতায় ধুলো পড়ে আছে। চোখে মুখে ফুটে আছে ফুল। গোলাপ-বকুল। আমার কাঁচাচোখের গোলাপ-বকুলই মাওলানা নূরউদ্দীন গহরপুরী রহ.। তিনি আজও আমার সবুজ অতীতে জবা-বকুল হয়ে ফোটে আছেন।

 সেদিন প্রচণ্ড ভিড় ঠেলে বাবা আমাকে নিয়ে গেলেন মাওলানা নূরউদ্দীন গহরপুরী রহ.-এর কাছে। খুব কাছে।

বাবা বললেন, হুজুর! আমার ছেলে! মাদরাসায় পড়ে! মুখে হালকা জড়তা আছে!

-পাথর আর তালমিছরি নিয়ে আসেন! বললেন গহরপুরী!

পাশেই বাজার। ছুটে এলেন পাথর আর তালমেছরি নিয়ে।

বিড়বিড় করে কী পড়ে পাথর আর তাল মেছরিতে ফুঁ দিলেন গহরপুরী! বললেন- মিছরি চুষে খাবে, পাথর জিহ্বের নিচে রেখে দেবে!

-কোন ছেলেটা আপনার, দেখি!

-আমি কাছে গেলাম। টুপি খুলে মাথা পেতে দিলাম। মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। সঙ্গে ফুঁ। বুকে দুটি আলতু থাপ্পর।

-যাও, আল্লাহর ওপর ভরসা করো! ঠিক হয়ে যাবে! 

আমার সবুজ স্মৃতিতে হজরত গহরপুরী রহ. গোলাপ-বকুল হয়ে ফুটে আছেন। তাঁর মুখের শব্দগুলোও আমার হৃদয়ের প্রহরী।

লেখক : সম্পাদক আওয়ার ইসলাম, উস্তাদ, শেখ জনূরুদ্দিন রহ. দারুল কুরআন চৌধুরীপাড়া মাদরাসা ঢাকা।

আরএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ