শনিবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫ ।। ৪ মাঘ ১৪৩১ ।। ১৮ রজব ১৪৪৬


ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে রায়পুরে বিক্ষোভ  সমাবেশ


নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

হাবিব মুহাম্মাদ 
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি 

ফিলিস্তিনে ইসরাইলের আগ্রাসনের প্রতিবাদে রায়পুর, লক্ষ্মীপুর ইত্তেহাদুল উম্মাহ পরিষদের  বিক্ষোভ  সমাবেশ   অনুষ্ঠিত হয় । বুধবার (১৮ অক্টোবর) বাদ আসর রায়পুর বড় মসজিদ প্রাঙ্গণে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশগ্রহণ করেন সংগঠনের সদস্যবৃন্দ , স্থানীয় আলেম-উলামা সহ  সর্বস্তরের জনগণ।

সমাবেশে  ফিলিস্তিনি মুসলমানদের ওপর ইসরায়েলের হত্যাযজ্ঞ, নির্যাতন, বোমাহামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান নেতাকর্মীরা। এসময় ইত্তেহাদুল উম্মাহ পরিষদের  সভাপতি মাওলানা নূরুল ইসলাম কাসেমী ইসরায়েলের আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়ে বলেন,  আমাদের মাজলুম নির্যাতিত মুসলিম ভাই বোনদেরর ডাকে সাড়া দিয়ে মুসলিম উম্মাহকে শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে হবে। এটা মহান রবের নির্দেশ।

তিনি আরো বলেন, আমরিকা সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইলকে অস্ত্র দিয়ে প্রমাণ করেছে তারা সন্ত্রাসীদের মিত্রু এবং তাদের জাতিসংঘ কাফেরদের জাতিসংঘ, মুসলিমদের জাতিসংঘ নয়। তিনি  ইসরায়েলের পক্ষ নেওয়া তথাকথিত আলেমদের ব্যাপারে হুশিয়ারি দিয়ে  তাদের থেকে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়েছেন।

সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আব্দুল করিম  ইসরায়েলে বিরুদ্ধে পুরো মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান করে বলেন, যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী ইসরায়েলের বিরুদ্ধে  এবং ফিলিস্তিনের পাশে দাড়ানো প্রত্যেকের ঈমানী দায়িত্ব। সঞ্চালক মুফতি নূরুদ্দীন ইসরায়েলের পণ্য বয়কট করার আহবান জানান। প্রতিবাদ সভার পর বিক্ষোভ মিছিল করার কথা থাকলেও প্রশাসন অনুমতি না দেওয়ায় তা স্থগিত করা হয়। বক্তব্য শেষে   মাওলানা নুরুল ইসলাম  কাসেমীর  মোনাজাতের মাধ্যমে বিক্ষোভ সভা সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়। 

উল্লেখ্য : প্রায় আট  দশক পূর্বে জায়নবাদিরা একটি  ইহুদি রাস্ট্র প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করে। এর জন্য তারা বেচে নেয় মধ্যপ্রাচ্যের ফিলিস্তিন ভূমি। তারই বাস্তবায়নে তারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা ইহুদিদেরকে ফিলিস্তিনে একত্রিত করতে শুরু করে। খুব অল্প সময়ে ইহুদি শূন্য একটি এলাকা বিপুল ইহুদির বসতিতে পরিণত হয়। ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদিদের  সহযোগিতায় জায়নবাদিরা একটি সশস্ত্র  সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে তাদের মাধ্যমে শুরু করে ফিলিস্তিনবাসীর উপর  আগ্রাসন। তাদেরকে মাতৃভূমি থেকে বিতাড়ন করে নিজেরা সেখানে অবৈধভ বসতি স্থাপন করতে থাকে। এক পর্যায়ে  তারা একটি ইহুদি রাষ্ট্রেরও ঘোষণা দেয়। ক্রমান্বয়ে ফিলিস্তুিনিরা নিজেদের মাতৃভূমিতে হয়ে পড়ে ভিনদেশী । তবে ইহুদিদের এই অবৈধ দখল এবং আগ্রাসন মেনে নিতে পারেনি ফিলিস্তিনবাসী। নিজেদের পূর্বসূরি ও ইসলামের ঐতিহাসিক ভূমি এবং শত  নবী-রাসূলের স্মৃতিধন্য বাইতুল মাকদিসকে ঘিরে রয়েছে তাদের আবেগ ও ঈমানি চেতনা।  ফলে ইহুদি ও ফিলিস্তিনের মাঝে দীর্ঘ আট  দশক ধরে সংঘত লেগে থাকে। তবে মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের আধিপত্য  টিকিয়ে রাখতে  পশ্চিমাদেশগুলো ইজরাইলকে শুরু থেকেই সহযোগিতা করে আসছে। পশ্চিমাদের মদদ এবং আরবদের নীরবতায় ফিলিস্তিন সমস্যা জটিলাকার ধারণ করেছে। এই দীর্ঘ সময় ফিলিস্তিনরা বর্বরোচিত ধ্বংসযজ্ঞের স্বীকার হয়ে আসছে।  সাম্প্রতিক  গত ৭অক্টোবরে ইসরাইলী আগ্রাসন থেকে মুক্তি এবং নিজেদের অধিকার আদায়ে এই প্রথম ফিলিস্তিনের গাজা এলাকার স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস  ইসরায়েলে একটি বড় ধরনের আক্রমণ করেছে। এর ফলে শুরু হয় উভয়ের মাঝে সংঘাত যা পরবর্তীতে যুদ্ধে রূপ নেয়। দীর্ঘ ১২ অতিবাহিত হলেও এখনো তা বন্ধ হয়নি। তবে গাজা একটি ঘনবসতি হওয়ায় ইসরলাইলের বর্বোর হামলায় তা মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বাড়ি-ঘর ও আশ্রয় কেন্দ্র । শহীদ হয়েছে হাজরো নিরীহ নারী ও শিশু। তারা বন্দি করেছে  বহু বেসামরিক নাগরিক। অবরোদ্ধ করে রেখেছে পুরো গাজা এলাকা। বন্ধ করে দিয়েছে গাজার একমাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ও পানির লাইন। বাধাগ্রস্ত করেছে ত্রাণসামগ্রী ও জরুরি চিকিৎসাসেবা পৌঁছতে। ফলে গাজাবাসী এখন মানবেতর জীবন যাপন করছে। এত সংকটময় পরিস্থিতি  অতিক্রম করলেও  ফিলিস্তিনবাসী  অবৈধ দখলদারদের  কাছে মাথা নত করবেনা বলে ঘোষণা দিয়েছে। তারা শাহাদাত বরণ করবে তবু নত স্বীকার করতে রাজি নয়। ইতোমধ্যে হামাসের সামরিক নেতা   তাদের শেষ শক্তি পর্যন্ত লড়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

কেএল/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ