সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫ ।। ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ ।। ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
আগুন-ককটেল হামলাকারীকে গুলির নির্দেশ ডিএমপি কমিশনারের রূপসায় হাতপাখার গণসংযোগে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন করতে দেওয়া হবে না : নেতানিয়াহু বিশ্ব অপরিণত নবজাতক দিবস ২০২৫: জীবন রক্ষায় সচেতনতার নতুন অঙ্গীকার মাওলানা ফজলুর রহমানের সিলেট আগমন উপলক্ষে ইস্তেকবাল প্রস্তুতি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বাস–ট্রাকের সংঘর্ষে নিহত ৪ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ইসিকে ইসলামী আন্দোলনের ১২টি প্রস্তাবনা অপরাধ কমাতে প্রয়োজন সঠিক ধর্মীয় শিক্ষা: ড. এম এ কাইয়ুম জমিয়তের সুধী সমাবেশ মঙ্গলবার, প্রধান অতিথি মাওলানা ফজলুর রহমান মারকাযু দিরাসাতিল ইকতিসাদিল ইসলামী পরিদর্শনে মুফতি তাকী উসমানীর সাহেবজাদা

শাপলা চত্বরে হত্যাকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা ও অপরাধীদের বিচারে ৫ দাবি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা ও অপরাধীদের বিচারের দাবিতে ৫ দফা সুপারিশ করা হয়েছে।

শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত শাপলা চত্বরের হত্যাকাণ্ড নিয়ে ছায়া সংসদে এসব দাবি তোলা হয়।

বিতর্ক প্রতিযোগিতায় উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম। এছাড়া বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, অ্যাডভোকেট মো. শফিকুল ইসলাম শফিক, সাংবাদিক মনিরুজ্জামান মিশন ও সাংবাদিক সাইদুর রহমান। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।

এসময় শাপলাচত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা ও অপরাধীদের বিচারের দাবিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির পক্ষ থেকে ৫ দফা সুপারিশ করা হয়।

১) হেফাজতের সমাবেশে নির্মর্ম হত্যাকান্ডের প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটনের লক্ষ্যে অতি দ্রুত একটি তদন্ত কমিশন গঠন করা।

২) শাপলা চত্বরের হত্যাকান্ডে নির্দেশদাতাসহ জড়িতদের নাম প্রকাশের মাধ্যমে বিচারের মুখোমুখি করা। 

৩) বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে শাপলা চত্বরের নিহত ও আহত ব্যক্তিদের নামের তালিকা প্রকাশ করা। 

৪) গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশসহ জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে শাপলা চত্বরে নিহত ও আহতদের তালিকা প্রণয়ন করা।

৫) নিহত ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারকে উপযুক্ত আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদান করা ।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা কাভার করা ছিল আমার সাংবাদিকতা জীবনে এক ভয়ংকর অভিজ্ঞতা। সেই রাতে বারাকাহ, ইসলামী হাসপাতাল ও সিদ্ধিরগঞ্জের হাসপাতালগুলোতে গুলিবিদ্ধ অনেকের লাশ পাওয়া গেলেও সরকার তা স্বীকার করেনি। হেফাজতের সমাবেশে কতজনের মৃত্যু হয়েছে তার সঠিক তথ্য আমরা এখনো জানতে পারিনি। এ বিষয়ে সরকারের পাশাপাশি হেফাজতে ইসলাম নিজেরাও প্রকৃত আহত ও নিহতের তথ্য অনুসন্ধান করতে পারে।

প্রেস সচিব বলেন, পতিত আওয়ামী সরকার বরাবরই হত্যার রাজনীতির মাধ্যমে ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার কৌশল অবলম্বন করেছিল। ২০১৩ সালে হেফাজতের ওপর ক্র্যাকডাউন করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সরকার নিজেদের জঙ্গিবাদ বিরোধী প্রমাণের চেষ্টা করেছে। জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদী তকমা দিয়ে ভিন্নমত দমনের লক্ষ্যে গুম ও খুন করাই ছিল পতিত সরকারের অন্যতম কৌশল। ২০১৪ সালের নির্বাচনকে নির্বিঘ্ন করার জন্য ২০১৩ সাল ছিল আওয়ামী লীগের গুম ও খুনের এক মহোৎসব

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘মতিঝিলের শাপলা চত্বরে ৫ মে গভীর রাতে হেফাজতে ইসলামের গণসমাবেশে যৌথবাহিনীর অভিযানে যে হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল তা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কলঙ্কময় অধ্যায়। ঘুমন্ত মুসল্লিদের উপর এই বর্বর গণহত্যার বিচার এখন সময়ের দাবি। ৫ মে রাত ৩টার দিকে বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশের অভিযানের পূর্বে সমাবেশস্থলের আশপাশের এলাকায় বিদ্যুতের লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। ঘুটঘুটে অন্ধকারে যৌথবাহিনী মুহুর্মুহু গুলি চালিয়ে ২০ মিনিটের মধ্যেই দখল করে নেয় হেফাজতে ইসলামের সমাবেশস্থল শাপলাচত্বর। এই বর্বরোচিত হামলার সংবাদ প্রচার অব্যাহত রাখায় দিগন্ত ও ইসলামিক টিভির সম্প্রচারও বন্ধ করে দেওয়া হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘হেফাজতের সমাবেশে যৌথবাহিনীর অপারেশনের পর শাপলাচত্বরের আশপাশে সাদা পাঞ্জাবি পরা বহু মানুষকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। পড়ে থাকা লাশ সিটি করপোরেশনের ময়লাবাহী গাড়িতে করে বিভিন্ন স্থানে গুম করার তথ্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। দমকল বাহিনীর সদস্যরা পানি দিয়ে রাস্তায় জমে থাকা রক্ত পরিষ্কার করার কথাও শোনা গিয়েছিল। ৭ ও ৮ মে ভোরে জুরাইন কবরস্থানে হেফাজত কর্মীদের বহু মৃতদেহ দাফন করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে, যা সাভারের রানা প্লাজার অজ্ঞাত লাশ হিসেবে চালিয়ে দেওয়া হয়েছিল।’

কিরণ বলেন, মাদ্রাসার যেসব শিশু-কিশোর ও ওলামায়ে কেরামরা শাপলাচত্বরে হত্যার শিকার হন তাদের পরিবার র‌্যাব-পুলিশের ভয়ে গোপনে নিহতদের লাশ দাফন-কাফন করতে বাধ্য হয়। পরিস্থিতি এমন হয়েছিল, যাদের পরিবারের সদস্যরা শাপলা চত্বরে হত্যার শিকার হয়েছিল তাদের বিরুদ্ধেও অগণিত মামলা করা হয়েছিল। গ্রেপ্তারের ভয়ে পালিয়েছিলেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে “ক্ষমতা হারানোর ভয়েই আওয়ামী সরকার শাপলা চত্বর হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে” শীর্ষক ছায়া সংসদে তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসা বিতার্কিকদের পরাজিত করে তানযীমুল উম্মাহ আলিম মাদরাসার বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়।

হাআমা/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ