বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫ ।। ১৯ আষাঢ় ১৪৩২ ।। ৮ মহর্‌রম ১৪৪৭

শিরোনাম :
খেলাফত আন্দোলনের সাথে সমমনা ইসলামি দলসমূহের বৈঠক অনুষ্ঠিত কুরআনের মহব্বত থেকেই আমার রাজনীতিতে আসা: শায়খ নেছার আহমদ জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে: আখতার হোসেন ৪৯ অনুচ্ছেদ সংশোধন, বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণ বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও শহীদ দিবস পালনের নির্দেশ নাশরুস সীরাহ’র সীরাত প্রতিযোগিতা, চলছে ফ্রি রেজিস্ট্রেশন ঢাকায় জাতিসংঘের কার্যালয়: তীব্র নিন্দা ধর্মীয় নেতাদের মহাসমাবেশে আসার পথে আহত কর্মীদের দেখতে হাসপাতালে শায়খে চরমোনাই  ইবনে শাইখুল হাদিস এর আগমন উপলক্ষে শৈলকুপায় ব্যাপক প্রস্তুতি পবিত্র আশুরা উপলক্ষে বেতুয়া হুজুরের বাড়িতে ইসলাহি মাহফিল

নোট-গাইডমুখী হচ্ছে কেন মাদরাসা শিক্ষার্থীরা?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মাহফুজ বিন হামিদ
বিশেষ প্রতিবেদক

দরসে নিজামী একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাব্যবস্থা। যার উপর ভর করে ইসলামী জ্ঞান শাস্ত্রের নানা শাখা প্রশাখা পৃথিবীর দেশে দেশে দাঁড়িয়ে আছে। নিজস্ব আঙ্গিকে গতি -ধারা ঠিক রেখে আজও সে চেষ্টা করছে আলো বিলিয়ে যেতে। দরসে নেজামীর প্রাণ হলো মূল কিতাব থেকেই সরাসরি মাসয়ালা উদঘাটন করা। তবে, ইদানীং শিক্ষার্থীদের দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। তারা মূল কিতাব থেকে ইলম না নিয়ে নোট-গাইড নির্ভর হচ্ছে। কেন তারা নোট-গাইডের উপর নির্ভর হচ্ছে সেসব নিয়ে আওয়ার ইসলামের সঙ্গে কথা বলেছেন দেশের প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ আলেমগণ।

গাইড নোটের প্রতি কারা ঝুঁকছে এবং এর জন্য কারা দায়ী? এমন প্রশ্নে কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক বলেন, দরসে নিজামীতে কিতাব ভিত্তিক দীর্ঘমেয়াদী ব্যাপক পড়াশোনা করতে হয় । কিন্তু দুঃখের ব্যাপার হলো এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের মাঝে অনাগ্রহ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এদের মধ্যে কেউ  সারা বছর না পড়লেও পরীক্ষা এলে শর্টকাট পড়ে পাস করতে চায় । তারাই মূলত গাইড নোটের প্রতি বেশী ঝুকছে।

এছাড়া মাদরাসাওয়ালাদের অবহেলা, পরীক্ষা কেন্দ্রিক পড়ালেখা এবং প্রকাশকদের বাণিজ্যিক মনোভাবও অনেকটা দায়ী বলে মনে করেন তিনি।  

বেফাক মহাসচিব জানান, বেফাক ও আল হাইয়াতুল উলয়ার দায়িত্বশীল ওলামায়ে কেরামগণ এ ব্যাপারে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছেন। মাদরাসাগুলোয় সচেতনতা তৈরি এবং বোর্ড কর্তৃক প্রশ্নপত্রের ধরনে পরিবর্তন আনায়ন ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে।

বেফাকের প্রশ্ন সম্পাদনা পরিষদের অন্যতম সদস্য আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মইনুল ইসলাম হাটহাজারীর শিক্ষা পরিচালক মুফতি কেফায়েতুল্লাহ বলেন, শুনেছি বেফাকের প্রশ্ন নীতিমালায় কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। বলা আছে, যারা প্রশ্ন করবেন তাদের সামনে কোন গাইড থাকতে পারবে না। আমি মনে করি এতোটুকু যথেষ্ট নয়। এক্ষেত্রে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য এমনভাবে প্রশ্ন করতে হবে যাতে করে শিক্ষার্থীরা কিতাব পড়তে বাধ্য হয়।

এদিকে জামিয়া রাহমানিয়া আজিজিয়ার তরুণ শিক্ষাবিদ আলেম মুফতি মোশারফ হোসেন বলেন, চার শ্রেণীর মানুষের অবহেলা বাড়াবাড়ি এবং লক্ষ্যহীন পথ চলার কারণে আজকালকার শিক্ষার্থীরা নোট-গাইডের দিকে ঝুঁকছে।

১। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ মনে করে রেজাল্ট ভালো হলে মাদরাসার সুনাম ছড়িয়ে পড়বে। এতে করে মাদরাসায় ছাত্রসংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।

২। ছাত্ররা চাচ্ছে নোট-গাইড পড়ে হলেও ভালো রেজাল্ট করে সুন্দর ভবিষ্যৎ গোছাবে।

৩। নোট-গাইড প্রকাশ করে প্রকাশকরা চাচ্ছে রাতারাতি ধনী হয়ে যেতে।

৪। নোট-গাইড বন্ধে বোর্ডগুলোর কার্যকরী কোন পদক্ষেপ না নেওয়া।

 এ তরুণ শিক্ষকের মতে, প্রচলিত নোট-গাইড থেকে বের হয়ে আসার জন্য দরকার হলো সকলের সদিচ্ছা এবং প্রশ্ন নীতিমালায় বোর্ডসমূহের শক্ত অবস্থান। কিতাব ভিত্তিক সৃজনশীল প্রশ্ন করলে আপনা আপনি নোট গাইড বন্ধ হয়ে যাবে।

হাআমা/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ