শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫


রাসুল সা. এর শহর মদিনার টুকরো স্মৃতি: মুফতি তাকি উসমানি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

[জামিয়া দারুল উলুম করাচির মুখপাত্র ‘ماہنامہ البلاغ মাহনামা আল-বালাগ’ এ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত বিশ্বনন্দিত আলেম, স্কলার আল্লামা তাকি উসমানির আত্মজীবনী আওয়ার ইসলামে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ হচ্ছে আলহামদুলিল্লাহ।

এ বিষয়ে আল্লামা তাকি উসমানি আনুষ্ঠানকিভাবে আওয়ার ইসলামকে ভাষান্তর করে প্রকাশের অনুমতি দিয়েছেন। গত ২ জানুয়ারি জামিয়া দারুল উলুম করাচির তাখাসসুস ফিল ইফতার শিক্ষার্থী, আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকমের শুভাকাঙ্ক্ষি উমর ফারুক ইবরাহীমীর মাধ্যমে আল্লামা তাকি উসমানি ও পত্রিকা কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মজীবনী ‘ইয়াদে’ অনুবাদের অনুমতি চাওয়া হলে তারা খুশি মনে রাজি হন এবং আওয়ার ইসলামকে ধন্যবাদ জানান বাংলাভাষায় ইসলামের প্রচার ও প্রসারের জন্য।

আল্লামা তাকি উসমানির নতুন ধারাবাহিক আত্মজীবনী “یادیں ইয়াদেঁ ” মাহনামা আল-বালাগে সফর ১৪৩৯ হিজরি, নভেম্বর ২০১৭ ইংরেজি মাস থেকে। আওয়ার ইসলামে লেখাটি প্রতি রোববার ও বুধবার প্রকাশ হবে ইনশাল্লাহ। আজ ছাপা হলো ৩৬ তম কিস্তি। অনুবাদ করেছেন মুহাম্মদ উমর ফারুক ইবরাহীমী।]


পূর্ব প্রকাশের পর: মদীনা মুনাওয়ারার রানওয়ে তখন পাকা ছিলনা বরং পাথরবালু নির্মিত ছিল। বিমানের চাকা রানওয়ে স্পর্শ করতেই অনেক পাথরবালু হাওয়ায় মিশে চারিদিক অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে গেছে। ফলে বিমান অবতরণ না করে ফের উর্ধ্বমুখী হয়ে গেল। কিছুটা উঁচুতে গিয়ে দ্বিতীয়বার তার চাকা রানওয়ে স্পর্শ করেছে।

কিন্তু এবারো ল্যান্ড করা গেলোনা, আবারো ব্যর্থ। ফের উপরে যেতে হয়েছে। এভাবে অন্তত তিন-চারবার হল। তিন-চারবার চেষ্টার পর বিমান যমীনে অবতরণে সক্ষম হয়েছে। আমি তো ভাবছিলাম, বিমান হয়তো সবসময় এভাবেই অবতরণ করে। পরবর্তীতে জানা গেল বিমানে কোন যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল, যার জন্য জরুরি অবস্থাও তৈরি হতে পারতো। আল্লাহ তাআলার পরম করুণা ছিল যে তৃতীয় বা চতুর্থ দফায় বিমান সফলভাবে ল্যান্ড করতে পেরেছে। নীচে নেমে দেখলাম মদীনা মুনাওয়ারার বিমানবন্দরে একটি ছোট্ট কামরা ছাড়া আর কোন ভবন নেই!

আমার বয়স তখন আটবছর। কচিমনে মদীনা মুনাওয়ার প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা দানাবেঁধে ছিল এবং এই পবিত্র শহরে হাজিরির সুখস্বপ্ন সর্বদাই আমাকে তাড়িয়ে বেড়াতো। সেসময় মসজিদে নববী'র ( তাঁর উপর শান্তি বর্ষিত হোক) উত্তরের ফটক যেটাকে "বাবুল মাজিদ" বলা হতো সেটা তুর্কি ভবনের প্রথম চত্তরের সীমান্তে ছিল। অর্থাৎ সেসময়ে মসজিদের দৈর্ঘ বর্তমানের দৈর্ঘের তুলনায় ছয়ভাগের একভাগ ছিল।

দরজার সামনে সামান্য খোলা অংশের পর একটি সুরঙ্গের মত রাস্তা ছিল, যার উভয় পাশে দোকানপাটও ছিলো। এরপর "ইসতফা মনযিল" নামে একটি ভবন ছিল। ভবনটি আব্বাজানের একজন বন্ধু, লক্ষ্ণৌও'র দ্বীনদার ব্যবসায়ী মরহুম হাজী ইসতফা খান সাহেব রহ. হজের উদ্দেশ্যে আগত মেহমান ও দর্শনার্থীদের ফ্রি অবস্থানের জন্য নির্মান করেছিলেন।

আমাদের অবস্থান সেই মনযিলের আন্ডারগ্রাউন্ডে ছিল। এই আন্ডারগ্রাউন্ডের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট ছিলো, এতে একটি কূপ ছিলো। এটিই সেই কূপ যেটি হযরত আবু আইয়ূব আনসারী রা এর বাগানে অবস্থিত ছিল। এবং এটিকে "بیر حإ " অথবা " بٸر طلحہ " বলা হত। সূরায়ে আলে ইমরানের নিন্মোক্ত আয়াত নাযিল হলে, যেখানে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
لن تنالوا البر حتی تنفقوا مما تحبون

তোমরা কখনোও নেকি হাসিল করতে পারবেনা যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা নিজেদের প্রিয় বস্তু আল্লাহ তাআলার রাহে খরচ না করবে।

সাহাবায়ে কেরাম রা. সবসময় বুকভরা আগ্রহ নিয়ে মুখিয়ে থাকতেন, নেকির একটি সুযোগও যেন তাদের হাতছাড়া হতে না পারে। সুতরাং উপরোক্ত আয়াত নাযিল হবার পর সবাই পরখ করতে লাগলেন যে, তাদের নিজের সম্পদের মধ্যে সবচে প্রিয় সম্পদ কোনটি।

প্রত্যেক সাহাবী রা. নিজের সর্বাদিক পছন্দনীয় সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় সদকা করতে শুরু করে দিলেন। এই ব্যাপারে অসংখ্য ঘটনা হাদীস শরীফে বর্ণিত রয়েছে। (সকল রেওয়াতের সবিস্তর আলোচনা মা'আরিফুল কুরআনে'র দ্বিতীয় খন্ডের ১০৮ নং পৃষ্টায় চতুর্থ পারার প্রথম আয়াতের অধীনে করা হয়েছে।)

চলবে ইনশাআল্লাহ....

-এটি


সম্পর্কিত খবর