এইচ এম জহিরুল ইসলাম মারুফ পবিত্র কুরআনুল কারীমে ইলম ও আমলের পূর্ণতার ভিত্তিতে চার প্রকার ব্যক্তিদের সফলতার ও সৌভাগ্যশীলতার কথা বর্ণিত হয়েছে। যেমন,আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেন-
وَمَن يُطِعِ اللَّهَ وَالرَّسُولَ فَأُولَٰئِكَ مَعَ الَّذِينَ أَنْعَمَ اللَّهُ عَلَيْهِم مِّنَ النَّبِيِّينَ وَالصِّدِّيقِينَ وَالشُّهَدَاءِ وَالصَّالِحِينَ
অর্থঃ- যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করবে তারা ওই সমস্ত ব্যক্তিদের অর্থাৎ নবী সিদ্দিক শহীদ ও সালেহীনদের সাথে থাকবে যাদের উপর আল্লাহ নেয়ামত দান করেছেন।"(সূরা-নিসা,আয়াত-৬৯)
এখানে নবী সিদ্দিক শহীদ ও সালেহ এই চার প্রকার এর কথা উল্লেখ করা হয়েছে।উক্ত আয়াতে গভীরভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে,এই চার প্রকার ইলম ও আমলের দৃষ্টিকোণ থেকে দু’প্রকার।অর্থাৎ নবী ও সিদ্দিক হলেন ইলমের দুটি প্রকার।আর শহীদ ও সালেহ হল আমলের দুটি প্রকার।
ইলম সর্বপ্রথম নবীদের উপর অবতীর্ণ হওয়ার কারণে তাঁরা হলেন মূল।আর যারা তাকে সত্যায়ন করেছেন তারা হলেন সিদ্দিকগণ।
তারা নবীদেরই অনুগামী।
নবী শব্দটি نبأ (নাবায়ুন) থেকে নির্গত হয়েছে।যার অর্থ হলো সংবাদ দেয়া আর সিদ্দিক গান হলেন ঐ সংবাদ সত্যায়নকারী।সুতরাং সত্যায়নও ইলমের একটি প্রকার।মূলকথা হলো, নবী ও সিদ্দিক উভয়ই ইলমের দুটি প্রকার।
এমনিভাবে আমলেরও দুটি অংশ রয়েছে। ১.শহীদ ২.সালেহ। আমলের ক্ষেত্রে শহীদ মূল আর সালে তার অনুগামী। শহীদ হলেন,যিনি আল্লাহর রাস্তায় নিজের প্রবৃত্তিকে বিসর্জন দিয়েছেন।
আর সালেহ হলেন, যিনি নেকির পথ গ্রহণ করে নিজের প্রবৃত্তিকে বিসর্জন দিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টিকে প্রাধান্য দিয়েছেন। সুতরাং শহীদ যদি জীবন দিয়ে পৃথিবীর পথকে মসূণ না করতেন তাহলে যিনি সালেহ তিনি আর সালেহ হতে পারতেন না।
সালেহ এ পথে তখনই চলতে পারেন যখন পৃথিবীর পথ নিরাপদ ও ফেতনামুক্ত থাকে। শহীদ নিজের জীবন দিয়ে পৃথিবীকে ফেতনামুক্ত করেন যাতে সালেহ তার সততার পথে চলতে পারে। এজন্য আমলের উচ্চতর স্তর শহীদদের এবং সালেহগণ তার অনুগামী। সুতরাং ইলমের দুটি অংশ এবং আমলের দুটি অংশ।
মোটকথা বোঝা গেল দুনিয়াতে সৌভাগ্যের বৃত্তি ইলম ও আমল। প্রকৃতপক্ষে নবুয়তের ভিত্তিও এ দুটি জিনিসের উপর। নবীগণ ইলম ও আমলের পূর্ণতা নিয়ে আগমন করেন যাকে আখলাক বলা হয় আর আখলাক হলো আমলের ভিত্তি। কেননা আখলাক না থাকলে আমল কার্যকর হতে পারে না এবং পূর্ণতা লাভ করতে পারে না।
যদি কারো মাঝে সাহসিকতা ও বীরত্বের আখলাক থাকে তাহলে সে যুদ্ধ ও জিহাদে শরীক হবে। যদি দানশীলতার আখলাক থাকে তাহলে গরীবদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিবে। আর যদি কৃপণতার স্বভাব থাকে তাহলে কাউকে সাহায্য করবে না। যদি ভীরুতার স্বভাব থাকে তাহলে যুদ্ধর ময়দান হতে পালায়ন করবে।
সুতরাং অভ্যন্তরীণ শক্তি বাহ্যিক কাজ কে পরিচালিত করে। এই অভ্যান্তরীন শক্তিকেই আখলাক বলা হয়। আল্লাহ আমাদেরকে আখলাকের ময়দানে জামাল ও সৌন্দর্য। ইলমের ময়দানে কামাল ও পূর্ণতা। আমলের ময়দানে ইখলাস ও লিল্লাহিয়াত দান করুন। আমীন!
লেখক, শিক্ষার্থী, তাকমীল (দাওরায়ে হাদীস)জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম দিলুরোড মাদরাসা-মগবাজার, ঢাকা।
-এটি
 
                              
                           
                              
                           
                         
                              
                           
                        
                                                 
                      
                                                  
                                               
                                                  
                                               
                                      
                                         
                                      
                                         
                                      
                                        