শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫


কোরআনের আলোয় আলোকিত হোক রমজান

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

জামীল আহমাদ।।

কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অধিক সাওয়াব লাভ করার জন্য রমজানই হচ্ছে শ্রেষ্ঠ সময়। কোরআন শরিফের বিশেষত্ব হচ্ছে, একটি হরফ তেলাওয়াতে দশটি নেকি হাসিল হয়। রমজানের বিশেষত্ব হচ্ছে, একটি নেকি দশ থেকে সাতশত পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।

এখন ধরুন আপনি মাহে রমজানে কোরআন শরিফের একটি হরফ তেলাওয়াত করলেন। দশটি নেকি পেলেন। অতঃপর রমজানের কারণে তা দশ থেকে সাতশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেলেন। সুতরাং, যারা মাহে রমজানে কোরআন শরিফ তেলাওয়াত করেন নিঃসন্দেহে তারা অফুরন্ত-অগণনীয় সাওয়াবের অধিকারিই হয়ে থাকেন। ‘রমজান ও কুরআন’ এই দুইয়ের বিশেষত্বকে এক সুথোয় গাঁথা যায় শুধুমাত্র একটি মাধ্যমে। তা হলো, ‘রমজান মাসে কুরআন তেলাওয়াত করা’।

আরবি মাসসমূহের মধ্যে ‘মাহে রমজান’ অন্যতম শ্রেষ্ঠ। এই শ্রেষ্ঠত্বের অন্যতম কারণ বা মাধ্যম পবিত্র কোরআন। এই রমজানেই আল্লাহ তায়ালা তাঁর প্রিয় হাবিবের ওপর সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ আল কোরআন অবতীর্ণ করেন।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘রমজান এমন একটি মাস যার মধ্যে কোরআন অবতীর্ণ করা হয়েছে।’ (সুরা বাকারা : ১৮৫) এই আয়াতে আল্লাহ তাআলা রমজানের পরিচয়ই দিচ্ছেন কোরআনের মাধ্যমে। তাই এই কোরআন অবতীর্ণের মাধ্যমেই মাহে রমজানের ফজিলত বেড়েছে বহুগুণে।

হাদিসে রয়েছে- অন্যান্য মাসসমূহে যে আয়াতসমূহ অবতীর্ণ হতো রমজান মাসে সব একসাথে নবীজি (সা.) জিবরাইল আলাইহিস সালামকে শোনাতেন। আবার জিবরাইল নবীজিকে শানাতেন। এভাবে একে অপরকে কোরআন তেলাওয়াত করে শোনাতেন। (বুখারি)

ইসলামি ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, আগের যুগের ওলামায়ে কেরামরা রমজান মাসেই অধিক পরিমাণে কোরআন তেলাওয়াত করতেন। ইমাম আবু হানিফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি রমজান মাসে সবচেয়ে বেশি কোরআন খতম দিতেন।

মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রাপ্ত এই বিশেষ নেয়ামতের শুকরিয়া আদায়ের নিমিত্তে হলেও রমজান মাসে অধিক পরিমাণে কোরআন তেলাওয়াত করা উচিত। আর রমজানে কোরআন তেলাওয়াত অতি উত্তম একটি আমল। যে আমলের আলোয় আলোকিত হবে রমজান।

আমরা যেহেতু রমজানের রোজাগুলো সঠিকভাবেই রাখছি, তেমনিভাবে যদি কোরআন পাঠের প্রতি এবং এর মর্মার্থ উপলব্ধি করার দিকে মনোযোগী হই তাহলে এ কোরআনই আমাদের সুপারিশের কারণ হবে। এছাড়া রোজা রেখে কোরআন করিম পাঠ করা, এর অর্থ বুঝতে চেষ্টা করা এবং এর অনুশাসনাদি পালন করার মাধ্যমে মানুষের আধ্যাত্মিক দর্শনশক্তি সতেজ হয়। আমরা যদি কোরআন পাঠ করি, চর্চা করি এবং এর শিক্ষার ওপর আমল করি, তাহলে শয়তানি চিন্তাভাবনা এবং মন্দ কাজ থেকে নিরাপদ থাকব।

প্রিয় পাঠক! আমরা কোরআন নাজিলের মাসে অধিক পরিমাণে কোরআন তেলাওয়াত করার চেষ্টা করি। কোরআন শিক্ষা নিই। কোরআনের ওপর আমল করি। কোরআনময় জীবন গড়ি। কোরআনের আলোয় আলোকিত হোক আমাদের মাহে রমজান।

লেখক: উস্তাযুল হাদীস, দারুল উলূম রামপুরা বনশ্রী মাদরাসা, ঢাকা

-এটি


সম্পর্কিত খবর