শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫


বেফাকে চলমান সংকট দূর হওয়া পর্যন্ত চাঁদা দেয়া বন্ধ থাকবে: দেওনার পীর

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আন্দমান নওশাদ: বেফাকে চলমান সংকট দূর হওয়া পর্যন্ত মাদরাসায় ছাত্রভর্তিকালীন ছাত্রদের থেকে নেয়া চাঁদা দেয়া বন্ধ থাকবে উল্লেখ করে দেওনার পীর অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেছেন, ‘যে সকল কওমির গরীব ছাত্রদের চাঁদা দিয়ে বেফাক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যে ছাত্রদের টাকা দিয়ে বেফাক এ পর্যন্ত এসেছে। যাদের টাকা দিয়ে বেফাকের কর্মকর্তারা দূর্নীতির আখড়া বানাচ্ছে বেফাককে। যতদিন পর্যন্ত বেফাকের চলমান এ সংকট দূর না হবে ততদিন পর্যন্ত বেফাকে চাঁদা দেয়া বন্ধ থাকবে। কারণ তারা আমাদের টাকা আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে।’

গত শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) কওমী মাদরাসায় চলমান সংকট থেকে উত্তরণে দেশের শীর্ষ উলামায়ে কেরামের উপস্থিতিতে কামরাঙ্গীরচর মাদরাসায় গুরুত্বপূর্ণ ইসলাহী মাহফিলে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘বেফাক একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান। এখানে আমাদের অনেক আকাবির বুযুর্গগণ দায়িত্ব পালন করেছেন। তাদের কারো বিরুদ্ধে কোনো ধরণের মন্তব্য করার সুযোগ কারো হয়নি। কিন্তু বর্তমান দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে এতো অভিযোগের কারণ কী? এর কারণ হলো স্বেচ্ছাচারিতা। আর এ স্বেচ্ছাচারিতা দূর করার জন্য স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রয়োজন। কারণ জবাবদিহিতা না থাকলে কাজে স্বচ্ছতা থাকে না। আমাদের প্রতিষ্ঠানে জবাবদিহিতা না থাকার কারণেই আজ দুর্নীতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। স্বচ্ছতা আর জবাবদিহিতা না থাকায় বেফাকের সমস্যা আজ এত বড় আকার ধারণ করেছে। বেফাক নিয়ে মানুষ এখন হাসাহাসি করে। রাস্তাঘাটে গীবত শেকায়েত করা হয়। যাদের কারণে এসব হচ্ছে তারাই এর জন্য গুনাহগার হচ্ছেন।’

তিনি প্রস্তাবনা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমাদের নিকট অতীতের ইতিহাস খুব বেশি ভালো না। আমরা খুব বেশিদিন একসাথে চলতে পারি না। একসাথে কিছুদিন চলার পরেই আমাদের মাঝে একটা বিভক্তি এসে যায়। যাদের সাথে কাজ করেছি, যাদের সাথে চলেছি, সামান্য কিছু কারণে তাদের সাথে আমাদের বিভক্তি এসে যায়। এজন্য আমি বলবো, বর্তমানে আমাদের যারা আকাবির আছেন, আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী, আজকের সভাপতি আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জীসহ আকাবিরদের সমন্বয়ে একটি শুরা কমিটি গঠন হওয়া দরকার। সে শুরা কমিটির সমন্বয়ে বেফাকের কার্যক্রম পরিচালিত হোক। তারা চিন্তা করবেন কিভাবে দীনের অনুসরণে, সুন্নাতের অনুসরণে বেফাকের চলমান সংকট কাটিয়ে উঠতে পারেন। বেফাকের বর্তমান সংকটের কারণে উলামায়ে কেরামের মান-সম্মান-ইজ্জত যা গেছে! আর যাতে না যায় সেজন্য পরামর্শমূলক সিদ্ধান্ত নিয়ে যেনো বেফাকের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। সে চেষ্টা করবেন তারা।’

মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী ও মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবীর যৌত সঞ্চালনায় ইসলাহী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য দেন, খিলগাঁও মাখজানুল উলুম মাদরাসার আল্লামা নূরুল ইসলাম জিহাদী, দেওনার পীর অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধূরী, ময়মনসিংহের মাওলানা আব্দুর রহমান হাফেজ্জী, বারিধারা মাদরাসার শায়খে ছানী মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, নারায়ণগঞ্জ ডিআইটি মসজিদের খতীব মাওলানা আব্দুল আউয়াল, রামপুরার মাদরাসার শায়খুল হাদিস মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, ময়মনসিংহের মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ সাদী, আরজাবাদ মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া।

বারিধারা মাদরাসার নায়েবে মুহতামিম মাওলানা নাজমুল হাসান, জামিয়া রাহমানিয়ার মুহতামিম মাওলানা মাহফুজুল হক, ইসলামবাগ মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা মুঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, বি.বাড়ীয়া প্রতিনিধি মাওলানা লিয়াকত উসমানী, হাফেজ্জী হুজুর রহ. এর মাওলানা হাবীবুল্লাহ মিয়াজী, মাওলানা শওকত হোসেন সরদার, মাওলানা মাসউদুল করীম, নাজিরহাট মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত মুহতামিম মাওলানা হাবীবুর রহমান, বেফাকের সহকারী মহাসচিব মাওলানা কেফায়েতুল্লাহ আজহারী, মাওলানা লোকমান মাজহারী, টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি মুফতি আব্দুর রহমান, কওমী ঐতিহ্যের মাওলানা মুসা বিন ইজহার।

এমডব্লিউ/


সম্পর্কিত খবর