বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫ ।। ১৯ আষাঢ় ১৪৩২ ।। ৮ মহর্‌রম ১৪৪৭

শিরোনাম :
খেলাফত আন্দোলনের সাথে সমমনা ইসলামি দলসমূহের বৈঠক অনুষ্ঠিত কুরআনের মহব্বত থেকেই আমার রাজনীতিতে আসা: শায়খ নেছার আহমদ জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে: আখতার হোসেন ৪৯ অনুচ্ছেদ সংশোধন, বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণ বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও শহীদ দিবস পালনের নির্দেশ নাশরুস সীরাহ’র সীরাত প্রতিযোগিতা, চলছে ফ্রি রেজিস্ট্রেশন ঢাকায় জাতিসংঘের কার্যালয়: তীব্র নিন্দা ধর্মীয় নেতাদের মহাসমাবেশে আসার পথে আহত কর্মীদের দেখতে হাসপাতালে শায়খে চরমোনাই  ইবনে শাইখুল হাদিস এর আগমন উপলক্ষে শৈলকুপায় ব্যাপক প্রস্তুতি পবিত্র আশুরা উপলক্ষে বেতুয়া হুজুরের বাড়িতে ইসলাহি মাহফিল

‘ব্যক্তি পরিচয়ে নয় মেধাকে প্রাধান্য দিয়ে মাদরাসার শিক্ষক নিয়োগ জরুরি’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

প্রতি বছর কওমি শিক্ষাব্যবস্থা থেকে হাজার হাজার শিক্ষার্থী দাওরায়ে হাদীস (তাকমিল) পাস করে বের হচ্ছে। এবারও কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ অথরটি আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের অধিনে পরীক্ষা দিচ্ছে ২৫ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী।

দীর্ঘ ১২ থেকে ১৬ বছরের শিক্ষাজীবন শেষে তারা কর্মের ময়দানে আসছে। নিজেদের মেধা, শ্রম ও চিন্তাশক্তিকে বিকাশ করার জন্য প্রয়োজনীয় প্লাটফরমের দিকে নজর দিচ্ছে। কর্মজীবনে পা রাখছে এ সকল মেধাবী ও চৌকোস নবীন আলেমরা। কিন্তু তারা তাদের চাহিদা মোতাবেক কর্মসংস্থান পাচ্ছে কি? কিংবা নিজেদের পরিশ্রমে অর্জিত ইলেমকে যথাযথ বিকাশের জায়গা কি পাচ্ছে? নাকি হতাশায় ভুগছে?

এসব আশা-নিরাশা আর হতাশার বেড়াজালে আঁটকে থাকা শিক্ষার্থীদের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কতটুকু ভূমিকা পালন করছেন এসব বিষয়ে কথা হয় কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড (বেফাক) এর সহকারী মহাসচিব, ইসলামবাগ মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা মুনজুরুল ইসলাম আফেন্দীর সঙ্গে। কথা বলেছেন আওয়ার ইসলামের নিউজরুম এডিটর সাংবাদিক মোস্তফা ওয়াদুদ

আওয়ার ইসলাম: তরুণ আলেমদের কর্মসংস্থান নিয়ে আপনি কী ভাবছেন?

মাওলানা মুনজুরুল ইসলাম আফেন্দী: আমার দৃষ্টিতে তরুণদের কর্মসংস্থানের জন্য মুরুব্বিদের ভাবা উচিত। ফারেগীন যত বেশি তাদেরকে নিয়ে ভাবনার পরিধিও ততোবেশি বিস্তৃত হওয়া উচিত। এদের কর্মসংস্থানের জন্য যার যে যোগ্যতা আছে, সে যোগ্যতার আলোকে কর্মসংস্থানও তৈরি করা দরকার।

যেমন: যাদের কিতাব পড়ানোর যোগ্যতা আছে তাদেরকে মাদরাসায় কর্মসংস্থান তৈরি করা। যাদের ইমামতের যোগ্যতা আছে তাদের ইমাম হিসেবে যথা জায়গায় নিয়োগ দেয়া। যারা খতিব হতে পারে তাদেরকে খতিব হিসেবে নিয়োগ দেয়া। যারা লেখক তাদেরকে লেখালেখির অঙ্গনে জায়গা করে দেয়া। অর্থাৎ যোগ্যতার আলোকে পথ তৈরি করে দেয়া।

আওয়ার ইসলাম: নতুন আলেমদের কর্মসংস্থান তৈরিতে সমষ্টিগত উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে কি?

মাওলানা মুনজুরুল ইসলাম আফেন্দী: সামষ্টিগত উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাবো। যদি কেউ গ্রহণ করে তবে তাকে মোবারকবাদ। এখনও সমষ্টিগত কোনো উদ্যোগ আমাদের নজরে পড়েনি। যদি কেউ এগিয়ে আসে তাহলে উম্মতের বিশাল উপকার হবে। মুরুব্বিগণ মিলে একটা ফোরাম গঠন করে নতুন আলেমদের কিংবা তরুণ প্রজন্মের কর্মসংস্থান নিয়ে চিন্তা ভাবনা করা উচিত। বিষয়টি নিয়ে এখনই মনযোগী হওয়া দরকার। মাদরাসায় ন্যায় ইনসাফের ভিত্তিতে ও পরামর্শ সাপেক্ষে নিয়োগ দেয়াটা খুব বেশি জরুরি বলে মনে করি।

আওয়ার ইসলাম: মাদরাসার শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধাকে প্রাধান্য দেয়া জরুরি নাকি ব্যক্তি পরিচয়?

মাওলানা মুনজুরুল ইসলাম আফেন্দী: মেধার বিকাশে তথা মেধাভিত্তিক জাতিসত্তা তৈরির স্বার্থে অবশ্যই মেধাকে প্রাধান্য দিয়ে মাদরাসার শিক্ষকসহ কওমি অঙ্গনের সকল নিয়োগ হওয়া উচিত। ব্যক্তি পরিচয় আর খাদেম নিয়োগ প্রথা আমাদের জন্য সুফল বয়ে আনবে না।

আওয়ার ইসলাম: ছাত্ররা যখন ফারেগ হয় তখন অনেকটাই হতাশায় ভোগে। কী করবে এ নিয়ে পেরেশানীতে থাকে। প্রশ্ন হলো কেউ যদি চাকুরি করতে চায় তাহলে কিভাবে প্রস্তুতি নিবে?

মাওলানা মুনজুরুল ইসলাম আফেন্দী: আসলে হতাশা বা নিরাশা বলতে কোনো কিছু না থাকা উচিত। কারণ রিজিকের ব্যবস্থা আল্লাহ কোনো না কোনোভাবে করবেই। এ বিশ্বাস নিয়েই ছাত্রজীবন অতিবাহিত করা দরকার। এরপরেও যদি কারো হতাশা বা নিরাশা থেকে থাকে তাহলে যাদের কাছে পড়া-লেখা তাদের দায়িত্ব, এদের হতাশা, নিরাশা দূর করা। তাদের ভরসা দিয়ে সম্মুখে এগিয়ে যাওয়ার সাহস দেয়া।

আওয়ার ইসলাম: ছাত্ররা ফারেগ হয়ে কি শুধু চাকুরি খোঁজবে নাকি উদ্যোক্তও হবে?

মাওলানা মুনজুরুল ইসলাম আফেন্দী: আমি মনে করি যাদের যোগ্যতা আছে উদ্যোক্তা হওয়ার তারা উদ্যোক্তা হবে। কেউ প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করতে পারলে করুক। এটা ভালো উদ্যোগ। মক্তব হেফজ খানা কায়েম করে নিজের পাশাপাশি আরো কয়েকজনকে চাকুরি দিচ্ছে এটা অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে।

তবে প্রতিষ্ঠান তৈরির ব্যাপারে আপত্তির যথেষ্ঠ সুযোগ রয়েছে। কেননা একটা ছেলে মাদরাসার পরীক্ষার পাশ করেনি। বরং ফেল করে বসলো। সে যদি আরেকটি প্রতিষ্ঠান করে তাহলে সেখানে কাঙ্খিত ফলাফল বয়ে আনে না। সুতরাং প্রতিষ্ঠান করার ব্যাপারে একটু সচেতনতা অবলম্বন জরুরি।

-এএ


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ