শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫


হিফজ শিক্ষকদের মানবেতর জীবনযাপন; কী বললেন দুই আলেম

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সুফিয়ান ফারাবী
ভ্রাম্যমাণ প্রতিবেদক

সর্বোত্তম গ্রন্থ আল কুরআন। মহান রাব্বুল আলামীনের পবিত্র কথামালার সমষ্টি হলো পবিত্র এই কিতাব। এ গ্রন্থটির সবচে বড় বৈশিষ্ট্য এঁর মাঝে কোন ভুল নেই এবং নেই কোন সন্দেহের অবকাশ।

আর সে হিসেবে পবিত্র এ কিতাবটিকে যারা বুকে ধারণ করে, পুরো ত্রিশ পারা মুখস্থ করে তাঁদেরকে হাফেজ বলা হয়৷ হাদিস শরিফে তাদের এবং তাদের পরিবারের জন্য রয়েছে বিশেষ সু সংবাদ।

এই গ্রন্থটি মুখস্থ করতে প্রতিজন হাফেজকে অনেক কষ্ট ক্লেশে পড়তে হয়। একবছর থেকে তিন-চার বছর পর্যন্ত লেগে যায় কারো কারো।

হাফেজে কুরআনদের সবক চলাকালীন সময় একমাত্র কাজ থাকে প্রতিদিন মুখস্থ করা। আর তাঁদেরকে নেগরানি করেন মাদরাসার শিক্ষকবৃন্দ। বিশেষকরে একজন শিক্ষক সর্বদাই তাঁদের প্রতি দৃষ্টি দিয়ে রাখেন।

অবশ্য বর্তমানে প্রতিটি হিফজ বিভাগে একাধিক শিক্ষক থাকলেও প্রতিজন শিক্ষকই চব্বিশঘণ্টা ডিউটিতে থাকেন। এরফলে মানসিকভাবে কিছুটা চাপে পড়েন হিফজখানার মুদাররিসগণ।

বিশিষ্ট ওয়ায়েজ ও মারকাজুত তারবিয়াহ সাভারের প্রিন্সিপাল মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী বলেন, বিষয়টি নিয়ে ভাবা দরকার। একজন মানুষের পক্ষে সারাদিন পরিশ্রম করা খুবই কষ্টকর আমাদের সমাজের হাফেজ শিক্ষকগণ একপ্রকার মানবেতর জীবনযাপন করেন। আমার মনে হয় হিফজ বিভাগগুলোকে একটা সিস্টেমে আনা দরকার।

কাতার ধর্মমন্ত্রনালয়ের খতিব মাওলানা ইউসুফ নূর বলেন, আমাদের দেশের হিফজ বিভাগের শিক্ষকরা এক কথায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন। দিনরাত চব্বিশঘণ্টা তারা যে পরিমাণ নেহনত করেন, এরকম মেহনত আর কোন পেশায় আছে বলে মনে হয় না।

হিফজ বিভাগে শিক্ষকদের কাজের শিডিউল ঠিক করা দরকার। আট ঘন্টা পরপর উস্তাদদের ছুটির ব্যবস্থা করা দরকার। তাতে তাদের উপর প্রেশার কমবে। তাঁরা স্বতস্ফূর্তভাবে কাজ করতে পারবেন।

শুধু কর্মঘন্টা বন্টন নয়। তিনি হিফজ খানার শিক্ষকদের পক্ষে আরও কিছু দাবি জানিয়েছেন। তাঁর ভাষায়

" হিফজ বিভাগের শিক্ষকদের জন্য কোয়াটার নির্মাণের ব্যাপক প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। সাধারণত তারা দুই সপ্তাহ বা একমাসের নীচে ছুটি পান না। তাই তারা যেন স্ত্রী ও পরিবার নিয়ে থাকতে পারেন, এ বিষয়টা গুরুত্ব দিয়ে দেখা দরকার।

সর্বশেষে বলবো, তারা সামান্য বেতন পান। তাতে দুবেলা আহারের ব্যবস্থা হলেও এখান থেকে সঞ্চয় করা সম্ভব হয় না। নানা সময়ে মানুষের সামনে বিপদাপদ আসে। তা থেকে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য হিফজ শিক্ষকদের জন্য একটা ফান্ড করা দরকার। যাতে দুঃসময়ে সাহায্য নিতে পারেন। "

দীর্ঘদিন যাবৎ বাংলাদেশের ছাত্ররা কুরআন প্রতিযোগিতায় সুনাম অর্জন করেছে। বিশেষভাবে গত একযুগ ধরে শীর্ষ রেজাল্ট আসছে বাংলাদেশের হাফেজদের পক্ষে।

এটি নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের গৌরব। আর এই গৌরব প্রতিনিয়ত করতে হিফজ বিভাগ ও হিফজ বিভাগের উস্তাদের প্রতি সু দৃষ্টি কামনা করছেন দেশের বিচক্ষণ আলেম সমাজ।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ