শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫


মাওলানা ত্বলহা কান্ধলভীর শয্যা পাশে পীর যুলফিকার আহমাদ নক্বশবন্দী

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

তাওহীদ আদনান
ইন্ডিয়া থেকে

ভারতের ঐতিহ্যবাহী ইসলামি বিদ্যাপিঠ মাযাহেরে উলুম সাহরানপুরের অন্যতম রুকনে শুরা, শাইখুল হাদীস মাওলানা যাকারিয়া কান্ধলবী রহ.-এর ছেলে ও খলীফা মাওলানা ত্বলহাকে দেখতে গতকাল মক্কার হাসপাতালে যান বিশ্বখ্যাত ইসলামি ব্যক্তিত্ব পীর মাওলানা যুলফিকার আহমাদ নক্বশবন্দী৷

মাওলানা ত্বলহার অসুস্থতার খবর পেয়ে প্রতিনিয়তই মক্কা নগরীতে তাকে এক নজর দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন ভক্তবৃন্দ ৷ ছুটে আসছেন বিভিন্ন রাষ্ট্রের ইসলামি ব্যক্তিবর্গও৷ নিয়মিত তাকে দেখতে আসতেছেন বিশিষ্ট আলেমে দ্বীনগণও৷

মাওলানা ত্বলহার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মাওলানা ত্বলহা অসুস্থ হওয়ার পর থেকেই নিয়মিত ফোনো তার খোঁজ খবর নিতেন পীর যুলফিকার আহমাদ নক্বশবন্দী৷ তিনি তাকে দেখতে ভারতেই আসার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছিলেন তখন৷

গতকাল মক্কার হাসপাতালে সান্ত্বনা ও হালপুরসি করাসহ নানা বিষয়ে মাওলানা ত্বলহার সাথে আলোচনা করেন পীর মাওলানা যুলফিকার আহমাদ নক্বশবন্দী৷ তিনি তখন মাওলানা ত্বলহার সুস্থতার জন্য দুয়াও করেন।

জানা যায়, বেশ কিছুদিন পূর্বে সাহরানপুরে তার নিজ বাসবভনে থাকাবস্থায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন মাওলানা ত্বলহা৷ অসুস্থতা তীব্র থেকে তীব্রতর হলে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেয়া হয়৷ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ডাক্তারগণ তার অবস্থায় আশঙ্কা প্রকাশ করে ফেরত দেন।

কিছুদিন তার নিজ বাসবভনে রেখেই উল্লেখযোগ্য ডাক্তারদের মাধ্যমে চলতে থাকে চিকিৎসা৷ কিন্তু অবস্থার পরিবর্তন না আসায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সৌদিতে নিয়ে যাওয়া হয়৷

উল্লেখ্য, মাওলানা ত্বলহা বহুদিন যাবৎ হৃদরোগসহ আরো গুরুতর কয়েকটি অসুস্থতায় আক্রান্ত থাকলেও দ্বীনের খেদমত আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছিলেন নিয়মিতই৷ তিনি অসুস্থ এটা প্রকাশও করতে চাচ্ছিলেন না৷ অসুস্থতা তীব্র থেকে আরো তীব্রতর হলে তখন অনেকটা জোরপূর্বকই স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে৷

জানা গেছে, তিনি মক্কায় যাওয়ার পর এ পর্যন্ত চারবার হার্টএট্যাক করেন৷ তাকে সেখানকার একটি হাসপাতালে ইমার্জেন্সি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে৷ ইমার্জেন্সি বিভাগে ভর্তির পর থেকে এখনো পর্যন্ত তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন সে হাসপাতালেই৷

চিকিৎসার উদ্দেশ্যে চলে যাওয়ার সময় তার বাবার রেখে যাওয়া মিশনকে এগিয়ে নিতে তিনি খানকায়ে যাকারিয়া রহ.-এর যিম্মাদারী বুঝিয়ে দিয়ে যান সাহরানপুর মাদরাসার মহাপরিচালক মাওলানা সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ সালমানকে৷ তাকে তিনি খানাকায়ে যাকারিয়া রহ.-এর জানেশীনও ঘোষণা করে গেছেন যাওয়ার আগে।

উল্লেখ্য, শাইখুল হাদীস হযরত যাকারিয়া রহ. তার শেষ বয়সে এসে স্থায়ীভাবে মক্কায় চলে যান৷ মক্কায় যাওয়ার প্রাক্কালে তিনি দ্বীন ও ইসলামের খেদমত আঞ্জাম দিতে তার মিশনের কার্যক্রম সোপর্দ করে যান পরিবারের কাছে৷ তিনি তার পরিবারের কাছে নিজ খানকার সকল যিম্মাদারীও বুঝিয়ে দিয়ে যান তখন৷

শাইখুল হাদীস মাওলানা যাকারিয়া রহ.-এর অনুপস্থিতে সেই সময় থেকে দীর্ঘকাল ধরে মাওলানা ত্বলহা তার বাবার স্থলাভিষিক্ত হিসেবে বাবার রেখে যাওয়া মিশনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলেন সাহরানপুরে থেকেই৷

তিনি সাহরানপুরে থেকে বাবার খানকার যিম্মাদারী পালনের পাশাপাশি মাযাহেরে উলুম সাহরানপুরের মজলিসে শুরার সদস্য হিসেবে যুক্ত ছিলেন দীর্ঘকাল৷ তার অসুস্থতায় সাহরানপুর মাদরাসাসহ ভারতের বিভিন্ন জায়গায় সুস্থতার জন্য একাধিকবার দোয়ার আয়োজন করেছেন বিভিন্ন মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকগণ। তিনি সুস্থতার জন্য দোয়াও চেয়েছেন সবার কাছে৷

আরআর


সম্পর্কিত খবর