শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫


কিরগিজদের জালে ১০ গোল মেয়েদের

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম : এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাই পর্বে দারুণ উজ্জ্বলতা ছড়াচ্ছে বাংলাদেশের মেয়েরা। প্রতি ম্যাচেই নিজেদের ছাড়িয়ে যাচ্ছে তারা। স্বাগতিক মেয়েদের সামনে এবার বিধ্বস্ত হয়েছে কিরগিজস্তান। বুধবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এ ম্যাচে বাংলাদেশের মেয়েরা জিতেছে ১০-০ গোলের বিশাল ব্যবধানে। ঢাকার মাঠে এই প্রথম দেশের কোনো ফুটবল দল এত বড় ব্যবধানে জয় তুলে নিল কোনো বিদেশি দলের বিপক্ষে।

এই মেয়েরাই অনূর্ধ্ব-১৪ দলে খেলার সময় ভুটানকে ১৬-০ গোলে হারিয়েছিল। কিন্তু কিরগিজস্তানের বিপক্ষে আজকের ১০-০ গোলের জয়টি একটু অন্যমাত্রাই দিচ্ছে। সুযোগ-সুবিধায় ও ফুটবল অবকাঠামোয় অনেক এগিয়ে থাকা একটি দলকে ১০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে বাংলাদেশের মেয়েরা প্রমাণ করল যে বড় স্বপ্নের দিকে দুর্দান্তভাবেই এগিয়ে চলেছে তারা।

আজকের ম্যাচটিও নিজেদের সীমানায় অলস দাঁড়িয়ে কাটিয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৬ দলের গোলকিপার মাহমুদা। প্রায় পুরোটা সময়ই যে খেলা হয়েছে কিরগিজস্তানের সীমানায়। বাংলাদেশের মেয়েরা একের পর এক আক্রমণে উঠেছে, কিরগিজ রক্ষণভাগের কাজ ছিল সেই আক্রমণের তোড় সামলানো। যদি বলা হয়, খেলাটা আজ বাংলাদেশের সঙ্গে কিরগিজস্তান গোলকিপার আদেলিনা কিসকাকোভার মধ্যে হয়েছে, তাহলে খুব বাড়িয়ে বলা হবে না। কিসকাকোভা পুরো খেলাতেই ঠেকিয়ে গেছেন বাংলাদেশের একের পর এক আক্রমণ।

শুরু থেকে কিরগিজস্তানকে চেপে ধরলেও প্রথম গোলের দেখা পেতে ২১ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে বাংলাদেশকে। ২১ মিনিটে আনুচিংয়ের গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ (১-০)। ৩০ মিনিটে দ্বিতীয় গোলটি করে মার্জিয়া। ৪৩ মিনিটে তৃতীয় গোল করে কৃষ্ণা। আনুচিংয়ের দ্বিতীয় গোলের সুবাদে ৪-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।

দ্বিতীয়ার্ধে গোলের নেশায় পেয়ে বসে বাংলাদেশের মেয়েদের। ৪৯ মিনিটেই কৃষ্ণা নিজের দ্বিতীয় গোলে বাংলাদেশকে এগিয়ে দেন ৫-০ গোলে। ৬৭ মিনিটে শামসুন্নাহারের পা থেকে আসে ছয় নম্বর গোল। ৭৫ মিনিটে দারুণ এক ফ্রিকিকে স্কোর লাইন ৭-০ করে নার্গিস। ৭৯ মিনিটে নিজের হ্যাটট্রিকে দলকে ৮-০ গোলে এগিয়ে দেন কৃষ্ণা।

স্কোর লাইনটা ৮-০ হয়ে যাওয়ার পরপরই গ্যালারিতে চাপা উত্তেজনা। উত্তেজনার কারণ, ঢাকার মাঠে যেকোনো পর্যায়েই বাংলাদেশের কোনো দলের সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয় ৮-০ গোলে। ১৯৮৫ সালে সাফ গেমসে মালদ্বীপের বিপক্ষে ৮-০ গোলে জয়ে পেয়েছিল বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। এরপর ১৯৯৩ সালে এই মালদ্বীপেরই একটি ক্লাবের বিপক্ষে ৮-০ গোলে জিতেছিল ঢাকা মোহামেডান। উত্তেজনার কারণ ছিল এটিই, বাংলাদেশের এই মেয়েরা কি পারবে সেই রেকর্ড ছাপিয়ে যেতে?

৮৩ মিনিটে মারিয়ার গোলে নতুন রেকর্ড হলো ঢাকার মাঠে। ৯-০ গোলে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। ঠিক দুই মিনিট পরেই শামসুন্নাহার ঢাকার দর্শকদের প্রথমবারের মতো উপহার দেয় ১০-০ গোলে এগিয়ে থাকার তৃপ্তি ও আনন্দ। যোগ হওয়া সময়ে একটি গোল অফসাইডের কারণে বাতিল হয়ে গেলে ১০-০ গোলের আনন্দ নিয়েই মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১৬ বছর বয়সী মেয়েরা।

নিজেদের প্রথম ম্যাচে শক্তিশালী ইরানকে ৩-০ গোলে হারিয়ে লাল-সবুজদের মিশন শুরু হয় দুর্দান্তভাবে। বাংলাদেশের খুদে ফুটবলাররা নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচেও জয় তুলে নেয়। সিঙ্গাপুরকে ৫-০ গোলের ব্যবধানে হারায় কৃষ্ণা রানী সরকারের দল।

ইরানের বিপক্ষে গত ম্যাচ দিয়েই ২০১৭ সালের আসরের বাছাই পর্ব শুরু করে স্বাগতিক হিসেবে খেলতে নামা বাংলাদেশের মেয়েরা। অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাই পর্বের শেষ ম্যাচে গতবার এই ইরানের কাছেই হেরেছিল লাল-সবুজের খুদে ফুটবলাররা। শেষ ম্যাচে ইরানের কাছে ২-১ ব্যবধানে হেরে তৃতীয় হয়েছিল বাংলাদেশ। সে প্রতিশোধ নেওয়া হয়ে গেছে কৃষ্ণাদের।

নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচের পুরোটা দারুণ দাপট দেখিয়ে খেলেছে কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনের ছাত্রীরা। ম্যাচের প্রথম থেকেই প্রতিপক্ষ সিঙ্গাপুরকে পাড়ার দল বানিয়ে একের পর এক আক্রমণে কোণঠাসা করে রাখে বাংলাদেশ। ম্যাচে টাইগ্রেসদের দাপট এতোটাই বেশি ছিল যে, বাংলাদেশের ডি-বক্সের বল নিয়ে ঢুকতেই পারেনি ইরান।

আগামী ৩ সেপ্টেম্বর চায়নিজ তাইপের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। ৫ সেপ্টেম্বর আরব আমিরাতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশের মেয়েরা। এবারের বাছাইয়ে গ্র“প-সেরা দল পাবে ২০১৭ সালে থাইল্যান্ডে মূল আসরে খেলার টিকিট।

এজে


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ