শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫


মানবিক অধিকার ও ইসলাম

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুফতি আবু সাকি সানা উল্লাহ।।

এ পৃথিবীতে মানুষ কতগুলো স্বতঃসিদ্ধ অধিকার নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। ধর্ম, বর্ণ, দেশ, কাল, ভাষা ও জাতি নির্বিশেষে প্রতিটি মানুষের বেলাই সে অধিকারগুলো সমানভাবে প্রযোজ্য। একালের ভাষায় এ অধিকারগুলোকে একত্রে বলা হয় মানবাধিকার ( Humenrits)। এ মানবাধিকার এমনিই একটি অলংঘণীয় বিষয়, একে হরণ কিংবা দলন করার অধিকার নেই পৃথিবীর কোন শক্তির। সর্বজন স্বীকৃত প্রধান ও মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে আমরা পাঁচটি বিষয় উল্লেখ করতে পারি। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, সম্মান ও জীবনের নিরাপত্তা।

উপরোক্ত পাঁচটি বিষয় মৌলিক অধিকারের অন্তর্ভুক্ত হলেও মানব হিসেবে একজন মানুষের শ্রেষ্ঠ অধিকার হচ্ছে- তার জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করণ অধিকার। একজন ব্যাক্তি যে কোনো ধর্ম, বর্ণ ও জাতির মানুষ হোক না কেন, জন্মসূত্রেই সে তার জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে বেঁচে থাকার অধিকার লাভ করে।

কিন্তু দুঃখ আর পরিতাপের বিষয় হচ্ছে- আজকের ডিজিটাল বিশ্বে মানবসমাজে মানবিক এই অধিকারটুকু চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে। কারণে-অকারণে হীন স্বার্থের লালশায় মানুষ মানুষকে খুন করা, গুম করা এখন নিত্য-নৈমিত্যিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।ফলে মানব সমাজে এক চরম অশান্তি ও অস্থিরতা বিরাজ করছে। আধুনিক (!) বিশ্বটা কেমন যেন ধীরে ধীরে জাহেলী বর্ববরতার দিকে উল্টো ফিরে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা বিধানে ইসলামের শাশ্বত কার্যকরী ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা ও তার সফল বাস্তবায়ন সময়ের দাবী।

ইসলামপূর্ব জাহেলী যুগে মানবজীবনের নিরাপত্তার বিষয়টি ছিল একেবারেই অবহেলিত। ঠুনকো অজুহাতে কিংবা ছোট খাটো সামাজিক দ্বন্দ-কলহের জের ধরে যুগ যুগ ধরে ঝগড়া বাঁধিয়ে রাখা আর মানুষ খুন করা ছিল সে কালের মানুষের সাধারণ চরিত্র। কিন্তু ইসলাম এসেই সর্বপ্রথম সমাজে মানবজীবনের মূল্য তুলে ধরে জীবনের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বিধান করেছে।

বলার অপেক্ষা রাখে না, একজন মানুষের জীবনের নিরাপত্তা বিধান করতে ইসলাম যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা অত্যন্ত প্রজ্ঞাপূর্ণ, ভারসাম্য ও শতভাগ কার্যকরী। দেড় হাজার বছরের ইসলামী ইতিহাস এই ব্যাপারে স্বাক্ষী, যে কালে, যে সমাজে ইসলামকর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপগুলো যত বেশী অনুসরণ করা সম্ভব হয়েছে, সেখানেই মানব জীবনের নিরাপত্তা তত বেশী প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

মানব জীবনের নিরাপত্তা বিধানে ইসলামের মৌলিক দর্শন তিনটি। এক. মানুষ কে সৃষ্টিকূলের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান ও তাদের মর্যাদার স্বীকৃতি প্রদান। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন- وَ لَقَدۡ کَرَّمۡنَا بَنِیۡۤ اٰدَمَ وَ حَمَلۡنٰہُمۡ فِی الۡبَرِّ وَ الۡبَحۡرِ وَ رَزَقۡنٰہُمۡ مِّنَ الطَّیِّبٰتِ وَ فَضَّلۡنٰہُمۡ عَلٰی کَثِیۡرٍ مِّمَّنۡ خَلَقۡنَا تَفۡضِیۡلًا

আর আমি তো আদম সন্তানদের সম্মানিত করেছি এবং আমি তাদেরকে স্থলে ও সমুদ্রে চলাচলের বাহন দিয়েছি এবং তাদেরকে দিয়েছি উত্তম রিজিক। আর আমি যাদের সৃষ্টি করেছি, তাদের অনেকের উপর আমি তাদেরকে অনেক মর্যাদা দিয়েছি। -(সূরা বানি ইসরাইল-৭০)

আরেক আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন- ہُوَ الَّذِیۡ خَلَقَ لَکُمۡ مَّا فِی الۡاَرۡضِ جَمِیۡعًا তিনিই যমীনে যা আছে সব তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন। (সূরা বাকারা-২৯)

এটা কত বড় ব্যাপার! যে, আল্লাহ তায়ালা তার অসংখ্য অগণিত সৃষ্টির মাঝে মানুষকে সৃষ্টির সেরা অভিধায় অভিষিক্ত করেছেন।সাথে সাথে পৃথিবীর অপরাপর সবকিছুকে তাদের সেবায় নিয়োজিত রেখেছেন। প্রকৃতপক্ষে সবকিছু সৃষ্টি-ই করা হয়েছে মানব জাতির কল্যাণে। সুতরাং বিশ্বময় আয়োজন যে মানবের জন্য, তার জীবনের নিরাপত্তা কত গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার তা সহজেই অনুমেয়।

প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা.বলেন: আমি হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখলাম। তিনি কাবা শরীফ তাওয়াফ করছেন এবং বলছেন: ما اطيبك وأ طيب ريحك ما أعظمك وأعظم حرمتك والذي نفس محمد بيده لحرمة المؤمن أعظم عند الله حرمة منك ماله ودمه أن يظن به الا خيرا

কত যে শ্রেষ্ঠ তুমি কত যে শ্রেষ্ঠ তোমার সুবাস! কত যে মহান তুমি কত যে মহান তোমার সন্মান! সেই আল্লাহর শপথ যার হাতে মুহাম্মদের প্রাণ! একজন মুমিন বান্দার সন্মান আল্লাহর কাছে তোমার সন্মানের চেয়েও অধিক! তার জীবন ও সম্পদ সম্পর্কে অশুভ কিছু ভাবা যায়না। (সুনানে ইবনে মাজা: ৩৯৯২)

মুমিনের এই শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদার কারণেই তার জীবনের নিরাপত্তা বিধানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাপখোলা তরবারির ভাষায় বলেছেন: لزوال الدنيا أهون على الله من قتل رجل مسلم

একজন মুসলিম হত্যার চেয়ে পুরো পৃথিবী ধ্বংষ হয়ে যাওয়া আল্লাহর কাছে সহজ। (সুনানে তিরমিযি:1395)

শুধু মুসলমান কেন !অন্যায় ভাবে যে কোন মানুষকে হত্যা করা পুরো মানবগোষ্ঠিকে হত্যা করার নামান্তর বলে ঘোষণা দিয়েছে পবিত্র কুরআন। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন: مِنۡ اَجۡلِ ذٰلِکَ ۚۛؔ کَتَبۡنَا عَلٰی بَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ اَنَّہٗ مَنۡ قَتَلَ نَفۡسًۢا بِغَیۡرِ نَفۡسٍ اَوۡ فَسَادٍ فِی الۡاَرۡضِ فَکَاَنَّمَا قَتَلَ النَّاسَ جَمِیۡعًا ؕ وَ مَنۡ اَحۡیَاہَا فَکَاَنَّمَاۤ اَحۡیَا النَّاسَ جَمِیۡعًا ؕ

এ কারণেই, আমি বনী ইসরাঈলের উপরে এই হুকুম দিলাম যে, যে ব্যক্তি কাউকে হত্যা করা কিংবা যমীনে ফাসাদ সৃষ্টি করা ছাড়া যে কাউকে হত্যা করল, সে যেন সব মানুষকে হত্যা করল। আর যে তাকে বাঁচাল, সে যেন সব মানুষকে বাঁচাল।( সূরা মায়েদা:৩২)

লক্ষ্য করুন! ইসলামের উদারতা ও সৌন্দর্যের প্রতি, জীবনের নিরাপত্তা বিধানের ক্ষেত্রে ইসলাম মুসলিম অমুসলিমের মাঝে কোনো পার্থক্য করেনি।এখানে মানুষ হত্যার জঘন্যতাকেই দেখা হয়েছে। মানুষের জাত-ধর্মের বিষয়টি এখানে উল্লেখযোগ্য কিছু নয়।বরং একজন মু'আহিদ (মুসলিম দেশে নিরাপত্তা নিয়ে বসবাস কারী অমুসলিম)এর জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও প্রিয়তম নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে কঠোর বাণী উচ্চারণ করেছেন তা ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ উপমা।

শুনুন তাঁর ভাষায়: من قتل نفسا معاهدا لم يرح رائحة الجنة وإن ريحها ليوجد من مسيرة أربعين سنة
মে কোন যিম্মি ব্যাক্তিকে হত্যা করবে সে বেহেশতের ঘ্রান ও পাবেনা অথচ বেহেশতের ঘ্রান চল্লিশ বছরের দূরত্ব পরিমান জায়গা থেকেও পাওয়া যাবে। (সহীহ বুখারী:2995)

আমরা বিদায় হজের ভাষণণের কথা স্মরণ করতে পারি। লক্ষাধিক সাহাবায়ে কেরামের সন্মুখে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে ভাষণ দিয়েছিলেন তাতেও মানুষের জানমাল ও সন্মান সম্ভ্রমের নিরাপত্তা বিষয়টি খুবই গুরুত্বের সাথে স্থান পেয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোষণা করেছেন: الا إن أموالكم ودماءكم وأعراضكم حرام كيومكم هذا في بلدكم هذا وشهركم هذا

মনে রেখ!তোমাদের জান,মাল সন্মান-সম্ভ্রম এমন সন্মানিত যেমন সন্মানিত তোমাদের আজকের এই দিন তোমাদের এই শহরে এবং তোমাদের এই মাসে। (সহীহ বুখারী: 5230)

আরেক হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: كل المسلم على المسلم حرام دمه وماله وعرضه.
প্রত্যেক মুসলমানের জন্য অন্য মুসলমানের জান,মাল, ইজ্জত-আবরুর নিরাপত্তা হরণ করা হারাম।(সহীহ মুসলিম...)

দুই.মানুষের জীবনের নিরাপত্তা বিধানে ইসলামের দ্বিতীয় দর্শনটি হচ্ছে-মানুষ হত্যার ভয়াবহতা ও জঘন্যতা বিশ্লেষণ করে মানবমনে এর প্রতি ভয় ও ঘৃণা সৃষ্টি করা। এবং এটা যে, একটা কুফুরতূল্য মারাত্মক কবিরা গুনাহ, এবং এর জন্য পরকালীন জবাবদিহিতা ও জাহান্নামের ভয়াবহ শাস্তি আছে, একথাটা মানুষের চেতনা-বিশ্বাসে প্রোথিত করে দেয়া। পবিত্র কুরআনে মানুষহত্যার পরকালীন শাস্তির কথা পাঁচ স্তরে বর্ণনা করে এর ভয়াবহতা ঘোষণা করা হয়েছে।

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন: وَ مَنۡ یَّقۡتُلۡ مُؤۡمِنًا مُّتَعَمِّدًا فَجَزَآؤُہٗ جَہَنَّمُ خٰلِدًا فِیۡہَا وَ غَضِبَ اللّٰہُ عَلَیۡہِ وَ لَعَنَہٗ وَ اَعَدَّ لَہٗ عَذَابًا عَظِیما.
আর যে ইচ্ছাকৃত কোন মুমিনকে হত্যা করবে, তার প্রতিদান হচ্ছে জাহান্নাম, সেখানে সে স্থায়ী হবে। আর আল্লাহ তার উপর ক্রুদ্ধ হবেন, তাকে লা‘নত করবেন এবং তার জন্য বিশাল আযাব প্রস্তুত করে রাখবেন(সুরা নিসা:৯৩)

মানুষহত্যার শাস্তি সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বর্ণনা আরো সুস্পষ্ট ও ভয়াবহতাপূর্ণ। বিশিষ্ট সাহাবী হযরত ইবনে আব্বাস রা.বর্ণনা করেন- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: يأتي المقتول متعلقا رأسه بإحدى يديه متلببا قاتله بيده الأخرى تشخب أوداجه دما حتى يأتي تحت العرش فيقول المقتول لرب العالمين هذا قتلني فيقول الله للقاتل. تعست ويذهب به إلى النار.

কেয়ামতের দিন নিহত ব্যাক্তি এক হাতে তার মাথা এবং অন্য হাতে তার ঘাতক কে ধরে আরশের নিচে এমতাবস্থায় উপস্থিত হবে যে,তার শিরা গুলো থেকে রক্ত ঝরছে।অতঃপর নিহত আল্লাহ তায়ালার নিকট এই বলে নালিশ করবে-ওহে বিশ্ব জাহানের প্রতিপালক! এই লোক টা আমাকে হত্যা করেছিল। তখন আল্লাহ তায়ালা ঘাতককে বলবেন: ধ্বংস হ আজ তোর রেহাই নেই।অতঃপর তার জন্য জাহান্নামের ফায়সালা করবেন। (মুসনাদে আহমদ:2682)

আরেক হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: لو أن أهل السماء وأهل الأرض اشتركوا في قتل رجل مؤمن لاكبهم الله في النار.
একজন মুমিনের হত্যায় যদি আসমান বাসী ও জমিনবাসীর সকলেই অংশ নেয়, আল্লাহ তাদের সকলকেই উপুড় করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন। (সুনানে তিরমিযি: 1398)

শুধু হত্যাই নয় যে কোনো অন্যায়-অনাচার ও অপকর্ম থেকে মানুষ কে বাঁচাতে, এবং শান্তিপূর্ণ, সুন্দর আদর্শ সমাজ গড়তে, পরকালীন জবাবদিহিতা ও শাস্তি সংক্রান্ত কুরআন-সুন্নাহর শাশ্বত, অলৌকিক কর্যকরী বাণী অনুশীলনের বিকল্প নেই।

একজন বিশ্বাসী ঈমানদার যখন পরকালের প্রতি বিশ্বাস রেখে মানুষহত্যার জঘন্যতা বিষয়ে ইসলামের এই প্রজ্ঞাপূর্ণ পাঠ গ্রহণ করবে, ভয়ে তার হৃদয় প্রকম্পিত হবে। ফলে সহসায় মনে এই ভাবনা জাগ্রত হবে যে, রিপুর তাড়নায় মনের জেদ মেটাতে মানবজীবনের সন্মান ভূলুণ্ঠিত করে একটা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে পরকালে কি আমি এর দায় কোনো ভাবে এড়াতে পারব? পারব কি জাহান্নামের ভয়াবহ শাস্তি সইতে?

আর পার্থীব জীবনেও তো আহকামুল হাকিমীন প্রতিপালকের ক্ষোভ আর অভিশাপ নিয়ে শান্তির জীবন যাপন সম্ভব নয়। তাই সরে আসি এই হিংস্র লালসা থেকে। বাঁচি আমি। বেঁচে থাক সেও। বেঁচে থাকুক সবাই। জয় হোক মানবতার।

এরপরও যদি ইসলামের সরল মর্মস্পর্শী আবেদন কারো পাষণ্ড মনে রেখাপাত না করে। বরং তার ভেতরে লুকিয়ে থাকা হিংস্রতাই জেগে ওঠে। মানবিক সকল দাবি উপেক্ষা করে, পরকালীন জবাবদিহিতা ও ভয়াবহ শাস্তির কোন পরোয়া নাকরে সে নিরপরাধ মানুষকে হত্যাই করে বসে, তবে এই পর্যায়ে ইসলাম হত্যাকারীর জন্য কেসাস (মৃত্যুদণ্ড) এর বিধান জারি করে।

তৃতীয়:পর্যায়ে মানব জীবনের নিরাপত্তা বিধান করেছে। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন: يا أيها الذين آمنوا كتب عليكم القصاص في القتلى.

হে ঈমানদারগণ! যাদেরকে (ইচ্ছাকৃত অন্যায় ভাবে) হত্যা করা হয়েছে। তাদের ব্যাপারে তোমাদের প্রতি কেসাস (মৃত্যুদণ্ড) এর বিধান ফরজ করা হয়েছে। (সূরা বাকারা:178)

হত্যাকারীর জন্য কেসাস (মৃত্যুদণ্ড) এর বিধান মানব জীবনের নিরাপত্তারক্ষী। এই দর্শনটিই আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বর্ণনা করেছেন এই ভাবে: ولكم في القصاص حياة يا أولي الألباب لعلكم تتقون.

হে বুদ্ধিমান গণ!কেসাসের ভেতরে তোমাদের জন্য রয়েছে জীবন রক্ষার ব্যাবস্থা। আশা করা যায় তোমারা এর বিরুদ্ধাচণ পরিহার করবে।(সূরা বাকারা:179)

মৃত্যূদণ্ডের মাধ্যমে কাওকে মেরে ফেলার ভেতরে কিভাবে জীবন রক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে, কথাটি বিশ্লেষণ সাপেক্ষে হলেও বিষয়টি খুব জটিল নয়। এই বিষয়ে ভিন্ন আরেকটি রচনা লেখার ইচ্ছা আছে। তাই কথা দীর্ঘ না করে শেষে ছোট্ট করে বলি-খুনের বদলে খুন এই আইন যদি সংবিধানে পাশ হয়। এবং আদালতে এর সফল বাস্তবায়ন থাকে, তবে ঘাতককে খুন করার আগে সত্তরবার ভাবতে হবে আপন গরদানের কথা। এভাবেই কেসাসের বিধানে রয়েছে সকলের জীবনের নিরাপত্তা।

লেখক- মুহাদ্দিস, আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া ইদারাতুল উলুম আফতাব নগর।বাড্ডা,ঢাকা। ইমাম খতিব, কাজী বাড়ি নুরানী জামে মসজিদ জোয়ার সাহারা, ভাটারা, কুড়িল চৌরাস্তা, ঢাকা।

-এএ


সম্পর্কিত খবর