দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী পুনঃযাচাইয়ের অংশ হিসেবে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদের নামে থাকা দুটি ব্যাংকের তিনটি লকার খুলে ৯ কেজি ৭০৭ গ্রাম (৮৩২ ভরি) স্বর্ণ উদ্ধার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। স্বর্ণালংকারের সঙ্গে লকারে স্বর্ণের নৌকাও পেয়েছে দুদক।
আজ বুধবার ২৬ নভেম্বর রাজধানীর সেগুন বাগিচায় দুদকের দুদক প্রধান কার্যালয়ে এক নিয়মিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।
দুদক জানায়, দুদকের উপপরিচালক (বিশেষ অনু. ও তদন্ত-১) মো. মাসুদুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত অনুসন্ধান দল ২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে লকার খোলার অনুমতির আবেদন করেন। আদালত একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, বাংলাদেশ ব্যাংকের বুলিয়ন শাখার একজন স্বর্ণ বিশেষজ্ঞ, এনবিআরের একজন কর গোয়েন্দা ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (সিআইসি) মনোনীত দুই কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে লকার খোলার নির্দেশ প্রদান করেন। পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী গতকাল মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) পূবালী ব্যাংক পিএলসির মতিঝিল করপোরেট শাখা ও অগ্রণী ব্যাংক পিএলসির প্রিন্সিপাল শাখায় থাকা মোট তিনটি লকার খোলা হয়। এর মধ্যে পূবালী ব্যাংকের লকার নম্বর ১২৮— গ্রাহক শেখ হাসিনার নামে থেকে একটি খালি ছোট পাটের ব্যাগ পাওয়া যায়। অপরদিকে গ্রাহক শেখ হাসিনা ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নামে থাকা অগ্রণী ব্যাংকের লকার (নম্বর ৭৫১/বড়/১৯৬) থেকে আনুমানিক ৪ হাজার ৯২৩ দশমিক ৬০ গ্রাম স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়। একই ব্যাংকের গ্রাহক শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা সিদ্দিকীর নামে থাকা লকার (নম্বর ৭৫৩/বড়/২০০) থেকে পাওয়া যায় ৪ হাজার ৭৮৩ দশমিক ৫৬ গ্রাম স্বর্ণালঙ্কার। দুদক আরও জানায়, উদ্ধারকৃত স্বর্ণালংকারসমূহ লকারে সংরক্ষিত বর্ণনা ও লিখিত চিরকুট অনুযায়ী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের— শেখ রেহানা সিদ্দিকী, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, সজীব ওয়াজেদ জয় ও ববি—হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রাথমিক ইনভেন্টরি তালিকা প্রস্তুতের পর সংশ্লিষ্ট শাখা ব্যবস্থাপকদের জিম্মায় মালামাল হস্তান্তর করা হয়েছে।
দুদক আরও জানায়, ইনভেন্টরি তালিকা পর্যালোচনা, মালিকানা সুনির্দিষ্টকরণ ও স্বর্ণকারের মাধ্যমে স্বর্ণের মূল্য নির্ধারণ শেষে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মালিকানা ও আইনগত দায়-দায়িত্ব নিরূপণ করা হবে।
এলএইস/