বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ দেলাওয়ার হোসেন বলেছেন, ন্যায় এবং ইনসাফ ভিত্তিক বাংলাদেশ গড়তে চায় জামায়াতে ইসলামী। এজন্য কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, জনতা, পেশাজীবি ও সম্মানিত ব্যবসায়ীদের জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে এগিয়ে আসতে হবে। জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে রাষ্ট্রের সকল স্টেকহোল্ডারদের অংশগ্রহনে দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, চাঁদাবাজমুক্ত এক কল্যাণ ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। তিনি বলেন, বর্তমান সমাজ ব্যবস্থা দুর্নীতি-সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজ ভয়াবহ ব্যাধিতে রূপ নিয়েছে। ব্যবসায়ী সমাজ সন্ত্রাসী আর চাঁদাবাজদের অত্যাচারে অতিষ্ট। সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য নতুন নেতৃত্বের প্রয়োজন। পুরাতন দুর্নীতিগ্রস্ত নেতৃত্বের পরিবর্তে দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, চাঁদাবাজমুক্ত সৎ ও দক্ষ নেতৃত্বকে নির্বাচিত করতে হবে। বুধবার রাতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা–৭ আসনের উদ্যোগে স্থানীয় ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভার প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দেলাওয়ার হোসেন বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও বাংলাদেশ পৃথিবীর মানচিত্রে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হয়নি। একটি রাষ্ট্রকে উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য ৫৪ বছর কিন্তু দীর্ঘ সময়। এই দীর্ঘ সময়েও দেশ উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত না হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি। অতীতে যারা ক্ষমতায় ছিল তাদের দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, লুটপাট, স্বজনপ্রীতি ও দলীয়করণের ফলে দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য, মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আল্লাহর বিধান কায়েম করতে হবে। কিন্ত বিগত সময়ে দেশ পরিচালিত হয়েছে নিজস্ব মতবাদে, মানুষের তৈরি আইনে। মানুষের তৈরি আইন মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়নি, হবে না। যারা আইন তৈরি করে কেবলমাত্র তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে। সমাজের প্রতিটি মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য, প্রতিটি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ইসলামী সমাজ বিনির্মাণের বিকল্প নেই। তাই নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে তিনি উপস্থিত ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দকে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আগামীর বাংলাদেশ হবে ইসলামের বাংলাদেশ, আগামীর বাংলাদেশ হবে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার এক কল্যাণ ও মানবিক রাষ্ট্র।
সভার প্রধান আলোচক ঢাকা–৭ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হাজী হাফেজ এনায়েত উল্লাহ বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকার চিনি কেলেঙ্কারির নামে নাটক সাজিয়ে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করে হয়রানি চেষ্টা করেছে। কিন্তু তখন তিনি সমিতির সভাপতি থাকায় কোনো ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করতে পারেনি। কারণ তিনি ডিজিএফআইয়ের সাজানো রিপোর্টের বিপরীতে সমিতির উদ্যোগে নিজের তত্ত্বাবধায়নে একটি তদন্ত রিপোর্ট বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে উপস্থাপন করেন। পরবর্তীতে মন্ত্রণালয় ডিজিএফআইয়ের সাজানো রিপোর্টের ভিত্তিতে কোনো ব্যবসায়ীকে হয়রানি করতে পারেনি। কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। তিনি বলেন, যগণ আমি কারো প্রতিনিধিত্বের দায়িত্ব পাবো তখন আমার দায়িত্ব হচ্ছে সবার আগে তাদের স্বার্থ রক্ষা করা। আগামীতে যদি ঢাকা-৭ আসনের জনগণ দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করে তবে আমার দায়িত্ব হবে ঢাকা-৭ আসনের জনগণের স্বার্থকে সবকিছুর ঊর্ধ্বে স্থান দেওয়া হবে। জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে জনগণের স্বার্থ রক্ষাই আমার প্রধান কাজ হবে। তিনি উপস্থিত ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, নিজে একজন ব্যবসায়ী হিসেবে তিনি সৎ ব্যবসায়ীদের যেকোনো প্রয়োজনে পাশে ছিলেন এবং আগামীতেও থাকবেন। তিনি নির্বাচিত হলে ঢাকা-৭ সংসদীয় এলাকায় চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসীর কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। তাই তিনি দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের পক্ষে সমর্থন দিতে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান।