রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫ ।। ১০ কার্তিক ১৪৩২ ।। ৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
জোটবদ্ধ হয়েও দলীয় প্রতীকে ভোটে আপত্তি বিএনপির, ইসিতে চিঠি দেশব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল সফল করার আহ্বান বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাডে নিহতের পরিচয় মিলেছে আসন্ন নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশি-কানাডিয়ান বিজ্ঞানীর মৃত্যু কলাম্বিয়ার নদীতে ডুবে  ফার্মগেটে মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড ছিটকে পড়ে পথচারীর মৃত্যু নারায়ণগঞ্জে ডাইং কারখানায় বিস্ফোরণ আগামী মাসে সপরিবারে ওমরাহ করতে যাচ্ছেন তারেক রহমান গুমের মামলায় ট্রাইব্যুনালে সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল নন্দাইলে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বৃহৎ তাফসিরুল কুরআন মাহফিল 

প্রাথমিকে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ ও ধর্মীয় মূল্যবোধ পরিপন্থি সব সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ এবং ধর্মীয় মূল্যবোধ পরিপন্থি সকল সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে জাতীয় সেমিনার-২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (২৫ অক্টোবর) রাজধানীর ওসমানি স্মৃতি মিলনায়তনে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে অংশ নেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্বশীল ব্যক্তি, ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব, শিক্ষাবিদ, গবেষকসহ অনেকে। সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় মূল্যবোধ সংরক্ষণ পরিষদের উদ্যোগে।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মুফতি রেজাউল করিম আবরার। প্রবন্ধ পাঠ করেন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সাবেক সচিব ও শিক্ষা অধিকার সংসদের উপদেষ্টা ড. খ ম কবিরুল ইসলাম। তার উপস্থাপিত প্রবন্ধে প্রাথমিক শিক্ষায় নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষার অপরিসীম গুরুত্ব, শিক্ষাকর্মীর যোগ্যতার মানদণ্ড এবং পাঠ্যপুস্তক পুনর্মূল্যায়নের প্রয়োজনীয়তা বিশদভাবে ব্যাখ্যা করা হয়। বলা হয় নৈতিক ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনে ধর্মীয় শিক্ষার বিকল্প নেই।

সেমিনার থেকে ৩ দফা দাবি পেশ করা হয়

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘বাংলাদেশ ৯২ শতাংশত মুসলমানের দেশ। সুতরাং তাদের অধিকার বাস্তবায়ন করা সাংবিধানিক অধিকার। আমাদের সুযোগ হলে ধর্মীয় শিক্ষকের পদ সৃজন করে তা বাস্তবায়ন করব ইনশাআল্লাহ।

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল প্রফেসর মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা হলো একটা সমাজ, রাষ্ট্র ও মানবসভ্যাতার ফাইন্ডেশন। ধর্মীয় শিক্ষা হলো সে ফাউন্ডেশনের মূল শক্তি।’

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির, সৈয়দ মো. রেজাউল করিম পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, ‘দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের প্রজ্ঞাপন এখনই দিতে হবে। অন্যথায় আমরা সকল দল মিলে সম্মিলিত কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব। এ ইস্যু আমাদের প্রজন্মের অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িত, তাই আমরা যতটুকু কঠোর হওয়া দরকার, ততটুকুই হব ইনশাআল্লাহ।’

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘২৪-পরবর্তী বাংলাদেশে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের জন্য আমাদের সভা-সমাবেশ করতে হবে তা আমাদের প্রত্যাশা ছিল না। তবে আমি বর্তমান সরকারকে জানিয়ে দিতে চাই, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমরা এখনো বড় আন্দোলনে যাইনি, তবে প্রয়োজন যদি হয় ধর্মীয় মূল্যবোধ সংরক্ষণে আমরা যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হব। তাই এখনো বিনয়ী ভাষায় বলছি, অবিলম্বে গানের শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করুন।’

জুলাই যোদ্ধা ও এনসিপির মুখ্য সংগঠন হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট হাসিনা ১৬ বছরের ইসলামি শিক্ষা ও আলেমদের যেভাবে উন মানুষ করে রেখেছেন, ২৪-পরবর্তী বাংলাদেশে তা হবে এটা খুবই দুঃখজনক। যে শিক্ষা কালচারকে ধারণ করে না তা একটা জাতির শিক্ষাব্যবস্থা হতে পারে না।’

খেলাফত মজলিস বাংলাদেশের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেন, ‘এই দেশের ৫ শতাংশ মানুষের মধ্যেও গান চর্চার সংস্কৃতি নেই। আর এ দেশের ৯২ শতাংশ মানুষ ইসলাম চর্চা করে। এই বৃহৎ জনগোষ্ঠীর মতামতকে উপেক্ষা করে যারা গানের শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাদের কাণ্ডজ্ঞান নেই বলে অবহিত করেছেন। অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত বাতিল করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের আহ্বান জানাই।’

সেমিনারে বক্তব্য রাখেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, শিক্ষক ও গবেষক ড. মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের গভর্নর ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী, ব্র‌্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ড. আসিফ মাহতাব উৎস, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সহকারী জেনারেল সেক্রেটারি আব্দুল হালিম ও প্রফেসর ডক্টর হাসানুজ্জামান চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে জাতীয় মূল্যবোধ সংরক্ষণ পরিষদের নেতারা বলেন, ‘আজকের সেমিনার প্রমাণ করল—দেশের সকল মতাদর্শী সংগঠন, শিক্ষক, গবেষক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ধর্মীয় শিক্ষার মহত্ব সম্পর্কে একমত। এই ঐক্যের মাধ্যমে আমরা সরকারের কাছে জোরালো দাবি পৌঁছে দিচ্ছি, এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো পুনর্বিবেচনা করে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার জোরালো আহ্বানও জানাচ্ছি। সরকার যদি এই গণদাবি উপেক্ষা করে তাহলে পরবর্তীতে কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করতে বাধ্য হবে জাতীয় মূল্যবোধ সংরক্ষণ পরিষদ।’

এনএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ