বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর, ঢাকা-৮ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেছেন, জুলাই সনদের ভিত্তিতে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে চাঁদাবাজি বন্ধ হয়ে যাবে। এজন্য একটি দল জুলাই সনদের ভিত্তিতে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায় না। তারা নানান ভাবে ষড়যন্ত্র করছে যাতে করে জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট না হয়। কারণ গণভোট হয়ে গেলে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি পেয়ে যাবে। ফলে জুলাই সনদের ভিত্তিতেই জাতীয় নির্বাচন হবে। এই আশঙ্কায় তারা জুলাই সনদের গণভোট জাতীয় নির্বাচনের দিনে দেওয়ার পক্ষে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে। দেশের সকল ইসলামী দল এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জনগণ নভেম্বরের মধ্যে গণভোট চাচ্ছে। সরকার যদি নভেম্বরের মধ্যে গণভোট না দিয়ে জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোট আয়োজন করে তবে প্রমাণিত হবে সরকার একটি দলের অনুগত।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে ঢাকা-৮ সংসদীয় এলকার ট্রেড/সমিতির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথ বলেন। এসময় তিনি, জাতির স্বার্থে নভেম্বরে জুলাই সনদের গণভোট এবং ফেব্রুয়ারিতে পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামীর আমীরে জামায়াত ইতোমধ্যে জাতির সামনে ঘোষণা দিয়েছেন, জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করা হবে। জামায়াতে ইসলামী দুর্নীতি করবে না, কাউকে দুর্নীতি করতে দেবে না; জামায়াতে ইসলামী সন্ত্রাস করবে না, কাউকে সন্ত্রাসী করতে দেবে না; জামায়াতে ইসলামী চাঁদাবাজি করবে না, কাউকে চাঁদাবাজি করতে দেবে না। জামায়াতে ইসলামীর কোনো এমপি-কোনো মন্ত্রী সরকারি প্লট বা ফ্ল্যাট নেবে না, ট্যাক্স বিহীন গাড়ি নেবে না। কোনো এমপি কিংবা কোনো মন্ত্রী নিজের হাতে রাষ্ট্রের টাকা চালাচালি করবে না। বিশেষ কোনো উন্নয়ন প্রকল্পে যেই বরাদ্দ এমপিরা পাবে উন্নয়ন কাজ শেষে জনগণের সামনে হিসাব দিতে বাধ্য থাকবে। জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে কোনো ব্যবসায়ীকে দুই পয়সা চাঁদা দিতে হবে না। ব্যবসায়ী নির্বিঘ্নে- র্নিভয়ে স্বাধীনভাবে ব্যবসা করতে পারবে। সরকারি কোনো অফিসে কেউ কাউকে ঘুষ দিতে হবে না। যাকাত ভিত্তিক অর্থনীতি চালুর মাধ্যমে সুদ প্রথার বিলুপ্তি করা হবে। নারী-পুরুষ কিংবা দলমত, ধর্মবর্ণ, জাতি-গোষ্ঠীর কোনো বৈষম্য থাকবে না। রাষ্ট্রের কাছে সকলে নাগরিক হিসেবে সমান সুযোগ-সুবিধা ও মর্যাদা লাভ করবে। প্রত্যেকে স্বাধীনভাবে চলাফেরা ও মতপ্রকাশ করতে পারবে। রাষ্ট্র কর্তৃক কোনো বলপ্রয়োগ করা হবে না। ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থায় আলোকিত সমাজ বির্নিমাণ করা হবে। যেই সমাজে মালিক-শ্রমিকের সম্পর্ক হবে ভ্রাতৃপ্রতিম। শ্রমিকেরা বেতন-বোনাসের জন্য রাজপথে নামতে হবে না। ন্যায্য মুজরি থেকে কোনো শ্রমিক বঞ্চিত হবে না। নতুন বাংলাদেশ বির্নিমাণে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে সকল শ্রেণিপেশার লোকজন সমানভাবে অংশগ্রহনের সুযোগ পাবে। তাই দুর্নীতিবাজ-সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজকারীদের আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে বয়কট করে আল্লাহভীরু সৎ, নৈতিক ও আদর্শবান দলকে নির্বাচিত করতে হবে। তিনি বলেন, ঢাকা-৮ আসনের জনগণ তাকে নির্বাচিত করে সুযোগ দিলে তিনি এই এলাকাকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও মাদক মুক্ত করে জনগণের স্বপ্নের নগরী হিসেবে গড়ে তুলবেন। এজন্য তিনি উপস্থিত ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সগযোগিতা ও সমর্থন কামনা করেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি, ঢাকা-৮ আসনে জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচন পরিচালক মুহাম্মদ শামছুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং পল্টন থানা আমীর ও ঢাকা -৮ আসনে জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব শাহীন আহমেদ খানের পরিচালনায় নয়া পল্টন এক কনভেশন হলে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য ও শাহজাহানপুর পূর্ব থানা আমীর মাওলানা শরিফুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৩ নং ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার খন্দকার আব্দুর বর, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি সোহেল রানা মিঠু। এছাড়াও অনুষ্ঠানে ঢাকা-৮ সংসদীয় এলাকার জামায়াতে ইসলামীর সকল সাংগঠনিক দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এনএইচ/