জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, যারা মসজিদে নামাজে নেতৃত্ব প্রদান করেন তাদের সমাজের সকল ভালো কাজেও নেতৃত্ব দিতে হবে। দেশের ওলামায়ে কেরাম যখন জাতির নেতৃত্ব প্রদান করবেন তখনই জাতি, দেশ, সমাজ ও রাষ্ট্র কল্যাণের পথে এগিয়ে যাবে এবং একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র ও সমাজ কায়েম হবে ইনশাআল্লাহ।
তিনি আরও বলেন, আদমশুমারি অনুযায়ী বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার শতকরা ৯০.০৮ ভাগ মানুষ মুসলমান। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এখানে যুগযুগ ধরে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ সুখ-শান্তিতে সম্প্রীতির সাথে পাশাপাশি বসবাস করে আসছে। আমরা ধর্মের ভিত্তিতে জাতিকে বিভাজিত করার পক্ষে নই।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান ইসলামী দল ও শক্তির ঐক্যের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, ইসলামি দল ও শক্তিসমূহের ঐক্য দেশবাসীর কাম্য। এক্ষেত্রে ঐক্য বিনষ্ট এবং বিভেদ-বিভ্রান্তি তৈরি করে এমন যে কোনো বক্তব্য পরিহার করার জন্য তিনি উপস্থিত বিশিষ্ট ওয়ায়েজ ও দাঈগণের প্রতি আহ্বান জানান।
আজ ৪ অক্টোবর (শনিবার) বেলা ১১টায় মগবাজার আল-ফালাহ মিলনায়তনে বিশিষ্ট দাঈ ও ওয়ায়েজ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও কেন্দ্রীয় উলামা বিভাগীয় কমিটির সভাপতি মাওলানা আবদুল হালিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান। আরও বক্তব্য রাখেন তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা যাইনুল আবেদীন, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও জামেয়া-ই-কাসেমিয়া নরসিংদীর সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা সাইয়েদ কামাল উদ্দিন জাফরী, গোপালগঞ্জ আলিয়া মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ ও বাংলাদেশ মাজলিসুল মুফাসসিরীনের সভাপতি মাওলানা আব্দুল হামিদ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় উলামা বিভাগীয় কমিটির সেক্রেটারি ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী। সম্মেলনে সারা দেশ থেকে আগত বিশিষ্ট ওয়ায়েজ ও দাঈগণ অংশগ্রহণ করেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আপনারা যারা দাঈ-ইলাল্লাহ তাদের অবশ্যই বিনয়ী হতে হবে। আল্লাহ বিনয়ী লোকদের ভালোবাসেন। মানুষও বিনয়ী লোকদের ভালোবাসেন। কোনোভাবেই বাহাস বা আত্মঘাতী কোনো বিতর্কে লিপ্ত হওয়া যাবে না। আমাদের সবাইকে মনে রাখতে হবে যে, আমরা সবাই দায়িত্বশীল। আল্লাহর দ্বীনের দিকে মানুষকে দাওয়াত দেয়া আমাদের সকলের দায়িত্ব। আমাদের দায়িত্বের ব্যাপারে আল্লাহর নিকট জবাবদিহি করতে হবে। আমাদের সকলের মধ্যে এ জবাবদিহিতার অনুভূতি থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আপনাদের জাতিকে জাগ্রত করার দায়িত্ব পালন করতে হবে। এ জন্য আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞানে সবাইকে পারদর্শী হতে হবে। আমাদের রাসূল (সা:) যেভাবে দায়িত্বপালন করে গিয়েছেন আমাদেরও তার দেখানো পথেই দায়িত্বপালন করতে হবে। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের বিবেককে জাগ্রত করতে হবে।
আরএইচ/