মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ।। ১৫ আশ্বিন ১৪৩২ ।। ৮ রবিউস সানি ১৪৪৭


কিছু স্বার্থান্বেষী মহল পিআরের বিরোধিতা করছে, গণভোট দেওয়া হোক: শায়খে চরমোনাই

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির ও শায়খে চরমোনাই মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম এক জরিপের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, দেশের সিংহভাগ রাজনৈতিক দলই পিআর পদ্ধতির নির্বাচন চায়, কিন্তু কিছু স্বার্থান্বেষী মহল বিরোধিতা করছে। তাই সরকারের প্রতি গণভোটের আহ্বান জানাচ্ছি। জনগণের কাছে মত জানতে চাওয়া হোক-তারা কোনো পদ্ধতিতে নির্বাচন চায়।

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর ) বিকেলে পিরোজপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ পিরোজপুর জেলা শাখা আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ পিরোজপুর জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ ইয়াহইয়া হাওলাদার এবং সঞ্চালনা করেন জেলা সেক্রেটারি মুহাম্মাদ মনিরুল হাসান।

পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন, প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান, অপরাধী ও খুনিদের দৃশ্যমান বিচারের দাবিতে আয়োজিত গণসমাবেশে মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, পিআর পদ্ধতি চালু হলে একটি সুষম সংসদ তৈরি হবে। বিশ্বের ৯১টি দেশে এই পদ্ধতি চালু আছে এবং কোনো দেশই এটিকে বাতিল করেনি বরং নতুন করে আরও দেশ এই পদ্ধতির দিকে ঝুঁকছে।

শায়খে বলেন, গত বছর জুলাই-আগস্টে ছাত্র আন্দোলন চলাকালে অনেক শিক্ষার্থী জীবন দিয়েছে, পঙ্গু হয়েছে এবং চোখ হারিয়েছে একটি সুন্দর দেশ পাবার জন্য। প্রচলিত নির্বাচন পদ্ধতি কালো টাকার দৌরাত্ম্য, পেশিশক্তি ভোট জালিয়াতির সুযোগ করে দেয়। যা দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার এবং চাঁদাবাজির জন্ম দেয়। তাই এই নির্বাচন পদ্ধতি আর বাংলার জমিনে দেখতে চাই না।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি কয়েকটি মৌলিক দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থার মৌলিক পরিবর্তন আনতে হবে। যারা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তাদের দৃশ্যমান বিচার করতে হবে। সব শেষে একটি সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর যুগ্ম মহাসচিব, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, ২৪ এর গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের মানুষ একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছে। স্বাধীনতা পরবর্তী যারাই ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিল, তারা জনগণকে চরমভাবে হতাশ করেছে। নতুন বাংলাদেশে যেন কোনো নির্বাচিত স্বৈরাচার, দুর্নীতিবাজ, লুটেরা ও সন্ত্রাসী শ্রেণি রাষ্ট্রক্ষমতাকে ব্যবহার করে জনগণের অধিকার কেড়ে নিতে না পারে। রাষ্ট্রের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয়করণের মাধ্যমে ধ্বংস করতে না পারে এবং একদলীয় কর্তৃত্ববাদী শাসন কায়েম করতে না পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় মৌলিক রাষ্ট্র সংস্কার দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তে আগামী জাতীয় নির্বাচনে তরুণ প্রজন্মের প্রতিটি ভোটের মূল্যায়ন, ফ্যাসিজমের পুনরাবৃত্তি রোধ এবং জাতীয় সরকার গঠনে সংসদের প্রস্তাবিত উভয় কক্ষে সংখ্যানুপাতিক পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দিতে হবে। তাই স্বাধীনতাকামী, মুক্তিকামী মানুষকে ইসলামের পতাকাতলে সমবেত হতে হবে। মানবরচিত মতবাদের মাধ্যমে এই স্বপ্নপূরণ সম্ভব নয়। একজন সচেতন মুসলমান ইসলামকে উপেক্ষা করে মানব রচিত কোনো মতবাদে বিশ্বাসী হতে পারে না। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে আমি সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি।

গণ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ পিরোজপুর জেলা শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি আলহাজ্ব নজরুল আহসান, ইসলামী যুবি আন্দোলন বাংলাদেশ, পিরোজপুর জেলা শাখার সভাপতি মুহাম্মাদ সাইদুল ইসলাম, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ ও আইম্মা পরিষদ,পিরোজপুর জেলা শাখার সভাপতি, মাওলানা রফিকুল ইসলাম, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ, পিরোজপুর জেলা শাখার সভাপতি, মুহাম্মাদ তরিকুল ইসলাম,সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজ পিরোজপুর শাখার সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ নাঈমুল ইসলামসহ জেলা ও থানা নেতৃবৃন্দ।

এনএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ