বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের উদ্যোগে “সংস্কার - নির্বাচন ও সুশাসন” শীর্ষক একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ (বৃহস্পতিবার) বিকেলে রাজধানীর পল্টনস্হ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে
আল্লামা আহমদ শফী রহ. মিলনায়তনে এ সভাটি হয়।
সভার সভাপতিত্বে করেন সংগঠনের আমীরে শরীয়ত মাওলানা আবু জাফর কাসেমী।
আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দলের সিনিয়র নায়েবে আমীর আলহাজ্ব মুহাম্মদ আজম খান। প্রবন্ধে তিনি দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “ফ্যাসিবাদীদের বৃহৎ অংশকে এখনও বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়া করাতে পারেনি সরকার। প্রশাসনের ধীরগতি ও দুর্নীতি, রাজনীতিতে বিশৃঙ্খলা এবং অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে এসব অপরাধ প্রতিরোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।”
প্রবন্ধে আরও বলা হয়, বিভিন্ন সংস্কার কমিটি গঠন করা হলেও, এসব কমিটির মাধ্যমে কিছু মারাত্মক কুসংস্কারের প্রস্তাবনা জমা পড়েছে। বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়, তথাকথিত নারীবাদী নীতিমালা সম্পর্কে, যেখানে কিছু বিকৃত দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত হয়েছে, যা সভ্য সমাজে গ্রহণযোগ্য নয়।
সভায় রাজনৈতিক সংস্কারের প্রসঙ্গে আলোচনা করা হয় এবং আনা হয় প্রস্তাবনা, যেখানে আনুপাতিক হারে নির্বাচনে ভোট গ্রহণ এবং মেম্বারদের ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচন জনতার ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়ার সমতুল্য বলে উল্লেখ করা হয়। তারা দাবি জানান, জনগণ তাদের রাজনৈতিক প্রতিনিধি প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচন করতে চায়।
বৈঠকে বক্তারা জানান, ফ্যাসিবাদের কূপ্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং পরবর্তী জাতীয় সংসদ ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে পরিচালনার জন্য পরীক্ষামূলকভাবে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন করার প্রস্তাব করা হয়।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন সংগঠনের নায়েবে আমীর শাইখুল হাদীস মাওলানা আবুল কাশেম কাশেমী, মহাসচিব মুফতী ফখরুল ইসলাম, যুগ্ম মহাসচিব মুফতি এনায়েতুল্লাহ হাফেজ্জী, ঢাকা মহানগর আমীর মাওলানা মুহাম্মদ হোসাইন আকন্দ, জাতীয় মানবতাবাদী পার্টির সভাপতি ক্যাপ্টেন ইব্রাহিম খলিল, এবং অন্যান্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন—বাংলাদেশ জনকল্যাণ পার্টির সভাপতি এডভোকেট মোঃ ওবায়দুল হক পীরজাদা, জাতীয় শক্তি চেয়াম্যান অধ্যাপক এমএ শরিফুল ইসলাম, নেজামে ইসলাম পার্টির অর্থসচিব আব্দুল্লাহ আল মাসুদ খান, হেফাজতে ইসলামের পল্টন জোনের নায়েবে আমীর মাওলানা হাকিম আজহারুল ইসলাম নোমানী, মুফতি আব্দুর রহিম, গাজী আব্দূর রহীম দিনাজপুর, মাওলানা নেয়ামত উল্লাহ খান জাফরী, মাওলানা হাসান আরিফ, মাওলানা গাজী আহমদ আব্দুল্লাহ মুসা, মাওলানা আবু দাদা, মাওলানা তারেক,এবং আরও অনেক নেতৃবৃন্দ।
এই আলোচনা সভায় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ও সুপারিশ তুলে ধরা হয়, যার মাধ্যমে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সুষ্ঠু, শৃঙ্খলাপূর্ণ ও নিরাপদ রাখা সম্ভব হবে বলে অংশগ্রহণকারীরা আশাবাদী।
এমএইচ/