শনিবার, ১৭ মে ২০২৫ ।। ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ ।। ১৯ জিলকদ ১৪৪৬

শিরোনাম :
জুলাই বিপ্লবের বিষয়ে একাডেমিক করাপশন হয়েছে: হাসনাত আবদুল্লাহ হামলার আগেই পাকিস্তানকে জানিয়েছে ভারত চোখে অস্ত্রোপচারের পর সুস্থ হয়ে উঠছেন মির্জা ফখরুল ‘নারী সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন পর্যালোচনা’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত কুমিল্লায় বিএনপি কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ, ককটেল বিস্ফোরণ সারাদেশে বৃষ্টির আভাস, কমবে তাপমাত্রা নির্বাচনের দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঘেরাও হবে জাতির জন্য দুভার্গ্য : সালাহউদ্দিন বাংলাদেশ মাদরাসা অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত ‘ঐক্য প্রচেষ্টায় আল্লামা সুলতান যওকের ভূমিকা স্মরণীয় হয়ে থাকবে’ দেশে আওয়ামী স্টাইলে নির্বাচন আর হবে না : রফিকুল ইসলাম খান

মসজিদগুলো শান্তি রহমত ও নিরাপত্তার প্রাণকেন্দ্র 

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

|| মুফতী মুঈনুল ইসলাম ||

নীলফামারী শহরের বাজার মসজিদের পেছনের দরজার সাথে ১৯৮৬ সালে একদিন দেখেছিলাম, একজন বৃদ্ধ হিন্দু মহিলা একান্ত শ্রদ্ধার সাথে মসজিদকে প্রণাম করছেন।

আরেকদিন দেখলাম, কোনো এক শহরে, একটি হাতি মসজিদের বাইরে সিজদার মতো করে কেবলামুখী হয়ে পড়ে আছে।

সম্প্রতি আরেকটি দৃশ্য দেখলাম। আর  তা হলো, মসজিদে নামায হচ্ছে। পূর্ব দিকে দরজার পাশে একটি মোটা-তাজা কুকুর প্রশান্তচিত্তে মসজিদের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। দেখে মনে হয়েছে, শ্রদ্ধার সাথে সে নামাযের দৃশ্য অবলোকন করছে।

দীনদার, মুত্তাকী,পরহেজগার ও বিশ্বাসী মানুষের কাছে এসব দৃশ্য 'আধ্যাত্মিক ও অলৌকিক।' কিন্তু আরেকটি শ্রেণীর কাছে হয়তো এটি অগ্রাহ্য ও অলক্ষ্যণীয় বিষয়। এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেছেন-

[মানুষের মধ্যে একটি শ্রেণি এমন] যারা আল্লাহর পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে এবং তাতে বক্রতা অন্বেষণ করে। আর তারা পরকালের প্রতি অবিশ্বাসী।-সূরা আরাফ : ৪৫।

পথে চলতে চলতে যখন কোনো মসজিদ আমার নজরে পড়ে, তখন শ্রদ্ধায়, আন্তরিকতায়, মহানুভব মানসিকতায় ও একাগ্রতায় আমার হৃদয়ে ঝড় বয়ে যায়। নিজের অজান্তে মস্তক অবনত করে বিনীত নিবেদন করি, মহান প্রভু আল্লাহর পবিত্র দরবারে। মনে মনে মিনতি করি, হে রাজ-অধিরাজ  বিশ্ব নিয়ন্তা! এই মসজিদগুলো না থাকলে, হয়তো আমরা কোনো প্রশান্তি, রহমত, দয়া , অনুকম্পা ও নিরাপত্তার ঠিকানা খুঁজে পেতাম না। সীমাহীন অনুগ্রহ করে আপনি আপনার এই ঘর নামে খ্যাত মসজিদসমূহ বিধিবদ্ধ করে আমাদেরকে এসব তৈরী করার তাওফীক দান করেছেন। 

আলহামদুলিল্লাহ। আর আপনি ইরশাদ করেছেন-

নিশ্চয়ই মসজিদসমূহ আল্লাহরই জন্যে। সুতরাং আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে ডেকো না।-সূরা জিন : ১৯।

আপনি আরো ইরশাদ করেছেন-
আল্লাহ সেসব গৃহকে [মসজিদ সমূহকে] মর্যাদায় উন্নীত করার এবং সেগুলোতে তাঁর নাম উচ্চারণ করার আদেশ দিয়েছেন। সেখানে সকাল ও সন্ধ্যায় [লোকজন] তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে।- সূরা নূর : ৩৬।

আমি শুনেছি, কিছু দেশের মানুষ অল্পতেই আত্মহুতি দেন, আত্মহত্যা করেন। কারণ, তাঁরা স্রষ্টা সম্পর্কে ধারণা রাখেন না অথবা স্রষ্টায় বিশ্বাস করেন না। তাই তারা মুসলমানদের মতো বিপদ আপদে আল্লাহকে ডাকতে জানেন না, আল্লাহর রহমত কামনা করার পথ খুঁজে পান না। মসজিদ নামের এসব মহান ঘরে গিয়ে বিশ্ব অধিপতি আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কুদরতি কদমে সালাতুল হাজত পেশ করার পদ্ধতি জানেন না। এজন্য নাকি তাঁদের বিশাল বিশাল বিল্ডিংসমূহের জানালা ছোট ছোট করে তৈরি করা, যাতে তাঁরা সেখান থেকে লাফ দিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করতে না পারেন। 

নিরাপদ থাক, ভালো থাক, সুন্দরভাবে পরিচালিত হোক পৃথিবীর সকল মসজিদ। আল্লাহবিরোধী ও দীনী জ্ঞান নেই এমন কোনো মানুষ, কোনো ইসলামবিরোধী শক্তি মসজিদে যেন  হস্তক্ষেপ না করে, মসজিদসমূহে কর্তৃত্ব করতে না পারে, এই কামনা, বাসনা, দোয়া ও শুভমত পোষণ করি অবিরাম। আমিন, ইয়া রব্বাল আলামিন।

লেখক: প্রিন্সিপাল ও রেক্টর, জামিয়া ইসলামিয়া ঢাকা; বহু গ্রন্থপ্রণেতা

এমএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ