শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ।। ১১ পৌষ ১৪৩২ ।। ৬ রজব ১৪৪৭

শিরোনাম :
ইসলামপন্থীদের ‘একবাক্স নীতি’ কি মুখ থুবড়ে পড়ছে? শহীদ হাদির আদর্শ সামনে রেখে মিশরে 'আজহার আফকার'র যাত্রা আবারও বাংলাদেশি সন্দেহে ভারতে মুসলিম যুবককে পিটিয়ে হত্যা তারেক রহমানের দেশে ফেরা গণতান্ত্রিক সংগ্রামের এক গুরুত্বপূর্ণ অর্জন: হাসনাত ঢাকায় মহাসমাবেশের ঘোষণা ইসলামী আন্দোলনের এভারকেয়ার থেকে গুলশানের বাসার উদ্দেশে তারেক রহমান সাহিত্য সভায় বিশেষ সম্মাননা পেলেন কবি ও লেখক মোহাম্মদ কুতুবউদ্দিন মহানবী (সা.)-এর ন্যায়পরায়ণতার আলোকে দেশ পরিচালনা করবো: তারেক রহমান ১ জানুয়ারি শুরু হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনকে স্বাগত জানিয়ে যা বললেন পীর সাহেব চরমোনাই

কওমি-আলিয়ার দূরত্ব কোথায়?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

।। মাওলানা আবদুল্লাহ মুআয।।

পূর্ব ভূমিকা ছাড়াই বলছি, একান্ত চিন্তা। আমার মনে হয়, কওমি ধারার আলেমরা বিগত এক দশকে এমন একটি প্রজন্ম গড়ে তুলেছেন, যারা আলিয়া শিক্ষার্থীদের ভালোবাসে—শুধু ব্যক্তি হিসেবে নয়, বরং ইসলামের স্বার্থে। তারা বিশ্বাস করে, দ্বীনি ও দুনিয়াবি শিক্ষা একত্রিত হলেই মুসলিম সমাজ শক্তিশালী হতে পারে। এই চিন্তাধারায় তারা আলিয়া ছাত্রদেরকে সম্মান করে, এবং তাদের প্রজ্ঞাকে স্বীকৃতি দেয়।

কিন্তু দুঃখজনকভাবে, আলিয়া ধারার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো একইরকম একটি প্রজন্ম তৈরি করতে পারেনি—যারা কওমি ছাত্রদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও হৃদ্যতা-পরায়ণ হবে। বরং বাস্তবতা হলো, অনেক আলিয়া শিক্ষার্থীর দৃষ্টিতে কওমি ছাত্ররা হচ্ছে ‘ব্যাকডেটেড’, ‘গ্রাম্য’, ‘আধুনিক জ্ঞান থেকে পিছিয়ে থাকা’ একধরনের মানুষ, যারা কেবল ‘ইসলাম বেচে খায়’। এই দৃষ্টিভঙ্গি কেবল অসম্মানজনকই নয়, বরং একটি গভীর মনস্তাত্ত্বিক ব্যবধান তৈরি করে।

সবচেয়ে বিস্ময়ের বিষয় হলো—কওমির ছাত্ররা স্বীকার করতে প্রস্তুত যে, আলিয়ার ছাত্ররা দুনিয়াবি জ্ঞান ও আধুনিক বিজ্ঞানচর্চায় কওমিদের তুলনায় এগিয়ে। কিন্তু এর বিপরীতে, আলিয়ার কোনো ছাত্র কওমি আলেমদের ইসলামি পাণ্ডিত্য, ফিকহ-হাদিস, কুরআন-তাফসির কিংবা তাকওয়ার ক্ষেত্রে তাদের চেয়ে এগিয়ে আছে—এই বাস্তবতাকে তারা কোনোভাবেই মেনে নিতে চায় না। তারা চায় না যে, পাণ্ডিত্যের মূলধারায় কওমিদের প্রাধান্য থাকুক।

ফলে দেখা যায়, কওমিরা যখন আলিয়ার দিকে সহযোগিতার হাত বাড়ায়, তখনও সেই হৃদ্যতা একতরফা রয়ে যায়। আন্তরিকতা, সমীহ, শ্রদ্ধাবোধ বা আত্মিক সম্মান—তা আলিয়া পক্ষ থেকে ফিরিয়ে আনা যায় না।

আমার আকাঙ্ক্ষা, দ্বীনের স্বার্থে এই দুই ধারার মাঝে শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও গ্রহণযোগ্যতার সেতুবন্ধন তৈরি হোক। যেন আমরা বিভক্তি নয়, বরং ঐক্যের পথে একসাথে চলতে পারি। ইসলামের পতাকা যেন একসাথে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমরা সমুন্নত করতে পারি।

লেখক: মাদরাসা শিক্ষক, লেখক ও চিন্তক

এনএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ