মুহাম্মদ মিজানুর রহমান
সুখী দম্পতি মানে শুধুমাত্র একসঙ্গে থাকার নাম নয়, বরং একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও সমঝোতার সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রতিফলন।
সম্পর্কের মধ্যে সুখ, স্থায়িত্ব ও মনোযোগ বজায় রাখতে যে গুণগুলো থাকে, তা অনুসরণ করলে জীবনে দাম্পত্য জীবন আরও মধুর ও সমৃদ্ধ হয়।
প্রথমত, সম্প্রেষণশীলতা সুখী দম্পতির মূল হাতিয়ার। তারা একে অপরের সঙ্গে খোলাখুলি কথা বলেন, নিজেদের অনুভূতি ও সমস্যাগুলো ভাগাভাগি করে নেন। এতে ভুল বোঝাবুঝি কমে এবং সম্পর্ক মজবুত হয়।
দ্বিতীয়ত, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সম্মান একটি সুখী দম্পতির অন্যতম বৈশিষ্ট্য। তারা একে অপরের মতামত ও ব্যক্তিত্বকে মূল্যায়ন করেন এবং ছোটখাট তর্কেও অপমান করেন না।
তৃতীয়ত, সুখী দম্পতিরা একে অপরের সুখ-দুঃখে সহানুভূতিশীল হন। জীবনের ওঠাপড়ার সময় পাশে থেকে সমর্থন দেন এবং একসঙ্গে সমস্যার মোকাবিলা করেন।
চতুর্থত, তারা একে অপরের জন্য বিশ্বাসযোগ্য ও বিশ্বস্ত। বিশ্বাসের ভিত্তিতেই দাম্পত্যের ভিত মজবুত হয় এবং মানসিক শান্তি আসে।
পঞ্চমত, সুখী দম্পতিদের মাঝে থাকে আবেগের সঠিক প্রকাশ। তারা নিজেদের ভালোবাসা ছোট ছোট কাজের মাধ্যমে প্রকাশ করেন, যা সম্পর্কের বন্ধনকে আরও দৃঢ় করে।
ষষ্ঠত, সুখী দম্পতিরা নিয়মিত সময় কাটান একসঙ্গে, নিজেদের জন্য বিশেষ মুহূর্ত তৈরি করেন এবং পারস্পরিক মানসিক যোগাযোগ বজায় রাখেন।
সর্বোপরি, দাম্পত্য জীবন মানুষের জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই সম্পর্ক যতটা দেহগত, ততটাই আত্মিক, মানসিক ও নৈতিক। আর এই সম্পর্ককে টেকসই ও শান্তিময় করতে প্রয়োজন সঠিক দিকনির্দেশনা ও মূল্যবোধ—যা দ্বীন ইসলাম স্পষ্টভাবে প্রদান করেছে। এক দ্বীনি মেজাজ ও পরিবেশ শুধু নামাজ, রোজা, হালাল-হারামের চর্চার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং তা দাম্পত্য জীবনে সদাচরণ, দায়িত্ববোধ, পরস্পরের প্রতি দয়া ও সহানুভূতির মাধ্যমে জীবনের প্রতিটি পরতে শান্তি ও প্রশান্তির সুবাতাস বইয়ে দেয়। তাই বলা যায়, দ্বীনি মেজাজ ও পরিবেশ দাম্পত্য জীবনকে সুখময় করে তুলতে এক অনন্য ও অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে।
সুতরাং, সুখী দম্পতিরা মূলত ভালোবাসা, বিশ্বাস, শ্রদ্ধা এবং সমঝোতার সঙ্গে জীবনযাপন করেন। এই গুণগুলো অনুশীলন করলে প্রতিটি দম্পতি তাদের সম্পর্ককে সুখময় ও দীর্ঘস্থায়ী করতে পারেন। তাই সকল দম্পতিদের উচিত নিজেদের জীবনসঙ্গীর প্রতি সচেতন থেকে এই গুণাবলী গড়ে তোলা।
এমএইচ/