মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম
যতদূর বোঝা যাচ্ছে আমরা তাদের থামাতে পারবো না। কিছুটা চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছি। এখন আমাদের কর্তব্য আমাদের তলাবাকে রক্ষা করা এবং দ্বীনি মাদরাসাসমূহের হেফাজত করার চেষ্টা অব্যাহত রাখা।
আমাদের তলাবায়ে কেরামকে আকাবিরে দেওবন্দের সঙ্গে আরও বেশি পরিচিত করতে হবে। তাদের রুচি প্রকৃতি সম্পর্কে তাদেরকে অবহিত করতে হবে।
আমাদের শিক্ষার্থীদের জানতে হবে কেমন ছিল আমাদের আকাবিরে দেওবন্দের ইলমী যাওক। কেমন ছিল তাদের আখলাক। যুহদ ও ইসতিগনা, তাকওয়া ও তহারাতের কতটা উচ্চতায় ছিল তাদের অবস্থান।
হক বাতিলের প্রশ্নে অনমনীয়তা, সত্যের উচ্চারণের নির্ভীকতা, উম্মতের প্রতি গভীর দরদ, ওলামায়ে কেরামের প্রতি শ্রদ্ধাশীলতা, বিনয় ও নম্রতা, রুহামাউ বাইনাহুম এর সাহাবিসুলভ মায়া মমতা প্রভৃতি উচ্চ নীতি নৈতিকতায় আমাদের আকাবির দেওবন্দ কেমন ছিলেন সে সম্পর্কে আমাদের তলাবা যত বেশি অবহিত থাকবে ততটাই তারা তাদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে।
এর ফলে তাদের পক্ষে আকাবিরের চিন্তা চেতনা গ্রহণ সহজ হবে। নিজেদের শেকড় জানতে পারার দরুণ তাদের ভেতর আত্মসম্মানবোধ জাগবে।
আত্মসম্মানবোধটা জরুরি, যাকে বলে দীনী হামিয়্যাত। এটা থাকলে ইনশাআল্লাহ তারা সহজে যেকোনো ডাকে সাড়া দেবে না। যেকোনো প্রলোভন উপেক্ষা করতে পারবে। রক্ত চক্ষুকেও অবজ্ঞা করা সহজ হবে।
আমাদের নিজেদেরও আকাবিরের চেতনায় উজ্জীবিত থাকতে হবে। তাদের মতো নীতি নৈতিকতাবোধ সম্পন্ন হতে হবে। যুহদ ও ইসতিগনা ছাড়া আমরা আপন শিকড়ের উপর দাঁড়িয়ে থাকতে পারবো না। আমাদেরকে অবশ্যই এই গুণের মর্মার্থ উপলব্ধি করতে হবে এবং এ গুন আত্মস্থ করতে হবে। তলাবাকেও এর উপর গড়ে তোলার চেষ্টা করতে হবে।
ইনশাআল্লাহ এ গুণ প্রয়োজনীয় মাত্রায় অর্জিত হলে কোনো সয়লাব আমাদের ভাসিয়ে নিতে পারবে না। পরিস্থিতি যত কঠিনই হোক তাতে আপন অবস্থানে টিকে থাকা আমাদের জন্য সহজ হয়ে যাবে।
বস্তুত দুনিয়ায় সত্যের ওপর অবিচল থাকা এবং আখেরাতে নাজাত লাভ করা উভয় লক্ষ্যের জন্যই এটা জরুরি।
আল্লাহ তায়ালা সহজ করুন তৌফিক দান করুন।
লেখক: বিশিষ্ট মুহাদ্দিস, চিন্তক ও প্রবীণ আলেমে দীন
আরএইচ/