সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫ ।। ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ ।। ৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৭


রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুগন্ধিপ্রেম

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

রাসুলুল্লাহ (সা.) সুগন্ধির প্রতি ছিলেন অত্যন্ত প্রীত এবং এটি ব্যবহার করাকে নিজের সুন্নতের মধ্যে গণ্য করতেন। তাঁর সুগন্ধির প্রভাব এতই বিস্তৃত ছিল যে রাস্তা দিয়ে হেঁটেও চারপাশে সুবাস ছড়িয়ে পড়ত, যা পথচারীরা অনুভব করত। আনাস ইবনে মালিক (রা.) বর্ণনা করেন, “যখন রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনার কোনো পথ দিয়ে হেঁটেছেন, লোকেরা তাঁর সুঘ্রাণ পেত এবং বলত, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) এই পথ দিয়ে অতিক্রম করেছেন।’” (মুসনাদুল বাজ্জার : ৭১১৮)

সুগন্ধি ব্যবহারের উদ্দেশ্য ছিল শুধুমাত্র সৌন্দর্য নয়, বরং এটি ফেরেশতা সাক্ষাত, অহি গ্রহণ এবং সাহাবিদের সঙ্গে ওঠাবসার সময়ও ব্যবহৃত হতো। নাসায়ি উল্লেখ করেন, “দুনিয়ার মধ্যে আমার কাছে তিনটি জিনিস প্রিয়—স্ত্রী, সুগন্ধি এবং আমার চক্ষু শীতল হয় নামাজের মাধ্যমে।” (নাসায়ি : ৩৯৩৯)

রাসুলুল্লাহ (সা.) কখনও সুগন্ধি হাদিয়া ফিরিয়ে দিতেন না। তিনি বলেন, “কাউকে সুগন্ধি বস্তু দেওয়া হলে তা ফিরিয়ে দেবেন না, কারণ এটি সুঘ্রাণময় এবং সহজে বহনযোগ্য।” (আবু দাউদ : ৪১৭২) এছাড়া, তিনি সব নবীদের সুন্নত হিসেবে আতর ব্যবহারকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। (মুসনাদে আহমাদ : ২২৪৭৮)

ইবনুল কাইয়িম (রহ.) উল্লেখ করেন, সুগন্ধি হলো রুহের খোরাক, যা মেধা, হৃৎপিণ্ড এবং অভ্যন্তরীণ অঙ্গের জন্য উপকারী। এটি অন্তর ও আত্মাকে প্রশান্ত রাখে এবং রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পার্থিব প্রিয় বিষয়গুলোর একটি হিসেবে বিবেচিত। (শামায়েলে তিরমিজি, ব্যাখ্যা : মুহাম্মাদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ, খণ্ড : ১, পৃষ্ঠা : ৩১০)

পুরুষদের জন্য জুমার দিন, ঈদের দিন, মুসলিম সমাবেশ, ইলম ও জিকিরের মজলিস এবং সহবাসের সময় সুগন্ধি ব্যবহার মুস্তাহাব। পুরুষদের সুগন্ধি ঘ্রাণ প্রকাশ করবে, কিন্তু রঙ গোপন থাকবে। নারীরা মসজিদ বা বাইরে গেলে এমন সুগন্ধি ব্যবহার করবেন না যার ঘ্রাণ প্রকাশ পায়, তবে স্বামী বা ব্যক্তিগত ব্যবহারে ইচ্ছা মতো ব্যবহার করতে পারবেন। (আবু দাউদ : ২১৭৪)

রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুগন্ধি ব্যবহার কেবল সৌন্দর্যই নয়, বরং সামাজিক সৌজন্য ও পবিত্রতার প্রতীক হিসেবেও ব্যবহৃত হতো।

এনএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ