মানুষের জীবনে সুখ-দুঃখ, রোগ-ব্যাধি কিংবা বিপদ-আপদ সবই আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষা। কখনো শরীরের অসুস্থতা দিয়ে, কখনো সম্পদের ক্ষতি বা জীবনের সংকট দিয়ে তিনি বান্দাকে যাচাই করেন। একজন মুমিন হিসেবে এসব পরিস্থিতিতে ধৈর্য ধরা, আল্লাহর হুকুম মানা এবং রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর দেখানো পথ অনুসরণ করাই সফলতার উপায়।
তবে বাস্তব জীবনে এমন কিছু অদৃশ্য সমস্যা দেখা দেয়, যা চিকিৎসা দিয়ে সহজে ব্যাখ্যা করা যায় না। এর মধ্যে অন্যতম হলো বদনজর ও কালো জাদু। হিংসা-ঈর্ষা থেকে সৃষ্ট দৃষ্টির আঘাত বাস্তব, তেমনি কারও ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে জাদু করাও সত্য ঘটনা। ইসলামে এটি গুরুতর গুনাহ হিসেবে গণ্য।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “বদনজর সত্য” (আবু দাউদ : ৩৮৭৯)। আবার তিনি জাদুসহ সাতটি ধ্বংসাত্মক কাজ থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। (বোখারি : ২৫৭৮)
এ ধরনের ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য কুরআন-হাদিসে কয়েকটি আমলের কথা এসেছে।
বদনজর ও কালো জাদুর ক্ষতি থেকে বাঁচার ৫ আমল
১. প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় এই দোয়া পড়া
بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِي السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
উচ্চারণ : বিসমিল্লাহিল্লাজি লা-ইয়াদুররু মাআস্মিহি শাইয়্যুন ফিল আরদি ওয়ালা ফিস-সামায়ি ওয়া-হুয়াস-সামিউল আলিম।
অর্থ : আমি আল্লাহর নামে আশ্রয় নিচ্ছি, যাঁর নামের বরকতে আসমান-জমিনের কিছুই ক্ষতি করতে পারে না। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। (তিরমিজি : ৩৩৮৮)
২. আল্লাহর বাণীতে আশ্রয় চাওয়া
أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ
উচ্চারণ : আউজু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিনশাররি মা খালাকা।
অর্থ : আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ বাণীর অসিলায়, তাঁর সৃষ্টির অনিষ্ট থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। (তিরমিজি : ৩৪৩৭)
৩. জাদু দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেলে জিবরাইল আলাইহিস সালাম নবীজিকে (সা.) এই দোয়া পড়ে ফুঁ দিয়েছিলেন।
بِاسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ مِنْ كُلِّ شَىْءٍ يُؤْذِيكَ مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِدٍ اللَّهُ يَشْفِيكَ بِاسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ
উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি আরক্বিকা মিন কুল্লি শাইয়্যিন ইয়্যুজিকা মিন শাররি কুল্লি নাফসিন আও আইনিন হা-সিদিন, আল্লাহু ইয়াশফিকা বিসমিল্লাহি আরক্বিকা।
অর্থ : আল্লাহর নামে আমি আপনাকে ঝাড়-ফুঁক করছি, প্রত্যেক কষ্টদায়ক বিষয় ও ঈর্ষাপরায়ণ চক্ষুর অনিষ্ট থেকে। আল্লাহ আপনাকে আরোগ্য দান করুন। (মুসলিম ২১৮৬, তিরমিজি ৯৭২)
৪. সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস
সকাল-সন্ধ্যা এই তিনটি সূরা প্রতিটি তিনবার করে পড়তে বলেছেন আলেমগণ। এগুলো শয়তান, জাদু ও বদনজরের অনিষ্ট থেকে রক্ষাকারী।
৫. সুরা ফাতিহা পাঠ করা
সুরা ফাতিহাকে “সুরা শিফা” বলা হয়। আরোগ্যের জন্য এ সূরা বারবার পড়া উপকারী
এমএইচ/