শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫ ।। ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ ।। ১৭ জিলহজ ১৪৪৬


বিশ্বে সবচেয়ে দ্রুত বাড়ছে মুসলিমদের সংখ্যা: গবেষণা


নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
প্রতীকি ছবি

বিশ্বের দেড়শ কোটি মুসলিমের জন্য সুসংবাদ। সারা বিশ্বে গত এক দশকে ইসলাম ধর্মের অনুসারীর সংখ্যা অন্য সব ধর্মের সম্মিলিত বৃদ্ধির চেয়েও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ইসলাম এখন বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল ধর্ম। 

পিউ রিসার্চ সেন্টারের নতুন এক গবষেণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। ২০১০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত—এই এক দশকের ওপর এই গবেষণা চালানো হয়েছে।

গত সোমবার পিউ রিসার্চের ‘গ্লোবাল রিলিজিয়াস ল্যান্ডস্কেপ’ শীর্ষক এই গবেষণায় বলা হয়েছে, ইসলাম ধর্মে এই প্রবৃদ্ধি মূলত প্রাকৃতিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফল। গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির পেছনে ধর্মান্তরের ভূমিকা খুবই সামান্য।

গবেষণায় বলা হয়েছে, মুসলিমদের সন্তানের সংখ্যা অন্য সব বড় ধর্মের অনুসারীদের তুলনায় বেশি এবং মুসলিমরা তুলনামূলকভাবে কম বয়সী।

গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, খ্রিষ্টধর্ম এখনো বিশ্বের সবচেয়ে বড় ধর্ম। বিশ্বের মোট প্রায় ২৩০ কোটি মানুষ এই ধর্মের অনুসারী। তবে ইসলাম ও খ্রিষ্টধর্মের মধ্যে ব্যবধান দিন দিন কমছে।
২০১৫ থেকে ২০২০ সালের তথ্য বিশ্লেষণ করে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, গড়ে একজন মুসলিম নারী তাঁর জীবনে ২.৯টি সন্তান জন্ম দেন। যেখানে একজন অমুসলিম নারীর গড় সন্তান সংখ্যা ২.২।

গবেষণায় ২০১০ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে বিশ্বের ধর্মীয় অনুপাতে কী পরিবর্তন এসেছে, তা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, খ্রিষ্টধর্ম এখনো বিশ্বের সবচেয়ে বড় ধর্ম। বিশ্বের মোট প্রায় ২৩০ কোটি মানুষ এই ধর্মের অনুসারী। তবে ইসলাম ও খ্রিষ্টধর্মের মধ্যে ব্যবধান দিন দিন কমছে।

গবেষণার তথ্যমতে, ২০১০ সালের পর থেকে বিশ্বে খ্রিষ্টান জনসংখ্যা প্রায় ১ দশমিক ৮ শতাংশ কমেছে।
বিশ্বজুড়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বেড়েছে মূলত মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতেই। ইসলাম ধর্মের সবচেয়ে বড় প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে কাজাখস্তান, বেনিন ও লেবাননে। অন্যদিকে ওমান ও তানজানিয়ায় মুসলিমদের অনুপাত কমে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রে ধর্মীয়ভাবে কোনো ধর্মের সঙ্গে সম্পর্ক নেই—এমন মানুষের সংখ্যা ২০১০ সালের তুলনায় ৯৭ শতাংশ বেড়েছে।

বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ধর্মহীন মানুষ বাস করেন চীনে। সেখানে প্রায় ১৩০ কোটি মানুষ কোনো ধর্মের সঙ্গে যুক্ত নন। আরও পরিষ্কার করে বলতে গেলে, তাঁরা কোনো ধর্মের অনুসারী নন।

পিউ রিসার্চের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এখনো ৬০ শতাংশ দেশ ও অঞ্চলে খ্রিষ্টধর্মের অনুসারীরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। তবে খ্রিষ্টধর্মের অনুসারীর সংখ্যা ৪০টি দেশে অন্তত ৫ শতাংশ করে কমেছে এবং মাত্র একটি দেশে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১০ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে প্রতি একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি যখন খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করেছেন, সেখানে তিনজন খ্রিষ্টধর্ম ত্যাগ করেছেন।

পিউ গবেষণা সংস্থা এই কমার একটি কারণ হিসেবে দেখিয়েছে, অনেক মানুষ খ্রিষ্টধর্ম ত্যাগ করছেন। তাঁরা যেই ধর্মে বড় হয়েছেন, পরবর্তী সময়ে সেই ধর্ম পরিবর্তন করে অন্য ধর্ম গ্রহণ করেছেন। এমন প্রাপ্তবয়স্কদের সংখ্যা গণনা করেই পিউ এই বিশ্লেষণ করেছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১০ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে প্রতি একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি যখন খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করেছেন, সেখানে তিনজন খ্রিষ্টধর্ম ত্যাগ করেছেন।

অন্যদিকে কোনো ধর্মের সঙ্গে সম্পর্ক নেই এমন মানুষের ক্ষেত্রে উল্টো চিত্র দেখা গেছে। প্রতি একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ যেখানে ধর্মহীনতা ছেড়ে গেছেন, সেখানে তিনজন ব্যক্তি নতুন করে ধর্মহীন হয়েছেন।  গবেষণায় দেখা যায়, বৌদ্ধ ও হিন্দু ধর্মেও ধর্ম গ্রহণের চেয়ে ধর্ম ত্যাগের হার বেশি ছিল।

ইসলামই একমাত্র ধর্ম, যেখানে যাঁরা ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছেন, তাঁদের সংখ্যা ধর্মত্যাগী ব্যক্তিদের চেয়ে বেশি। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসলাম এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম। প্রায় ২০০ কোটি মানুষ এই ধর্মের অনুসারী, যা পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-চতুর্থাংশ। ২০১০ সাল থেকে ইসলাম ধর্মে প্রায় ৩৫ কোটি নতুন মানুষ বৃদ্ধি পেয়েছে।

এই সংখ্যা খ্রিষ্টধর্মের চেয়ে প্রায় তিন গুণ বেশি এবং অন্যান্য সব ধর্মের সম্মিলিত বৃদ্ধির চেয়েও বেশি। ইসলামই একমাত্র ধর্ম, যেখানে যাঁরা ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছেন, তাঁদের সংখ্যা ধর্মত্যাগী ব্যক্তিদের চেয়ে বেশি। সূত্র: মিডল ইস্ট আই

  এমএম/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ