রবিবার, ০৪ মে ২০২৫ ।। ২১ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ৬ জিলকদ ১৪৪৬


বজ্রপাত কেন হয় রহস্যময় আসমানি চমক?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশে বজ্রপাত হচ্ছে বেশ ঘন ঘন। সেই সাথে বজ্রপাতে বাড়ছে ক্ষয়ক্ষতি ও মৃত্যুর হারও। জাতিসংঘের তথ্যমতে প্রতিবছর বাংলাদেশে গড়ে ৩০০ মানুষ বজ্রপাতে মারা যায়। সাধারণত এদেশে বেশি বজ্রপাত হতে দেখা যায় এপ্রিল-মে মাসে । কিন্তু কেন হয় রহস্যময় এই আসমানি চমক? আসমানি গজব? ছোটবেলায় শুনেছি মেঘে মেঘে ঘর্ষণের কারণেই বজ্রপাত হয়। আসলে এটা নিতান্তই একটি ভুল ধারণা।

তাহলে কিভাবে হয় বজ্রপাত

বিজ্ঞান বলছে, বজ্রপাত ঘটে আয়নিত জলকনার ফলে। ভূপৃষ্ঠের পানি যখন বাষ্প হয়ে উঠতে থাকে উপরের দিকে তখন মেঘের নিচের ভারী অংশের সাথে জলীয় বাষ্পের সংঘর্ষ হয়। এর ফলে কিছু জলকনা ইলেকট্রন ত্যাগ করে ধনাত্মক চার্জে এবং কিছু জলকনা ইলেকট্রন গ্রহণ করে ঋণাত্মক চার্জে পরিণত হয়। আর এই ডিসচার্জ প্রক্রিয়া ৩ ভাবে সংঘটিত হয়ে থাকে। এই চার্জিত জলীয় বাষ্প মেঘে পরিণত হলে মেঘে সৃষ্টি হয় বিপুল পরিমাণ স্থির বিদ্যুৎ। তাছাড়া এসময় অপেক্ষাকৃত হালকা ধনাত্মক আধান মেঘের উপরে এবং ভারী ঋনাত্মক চার্জ অবস্থান করে নিচে। এই দুই বিপরীতমুখী চার্জের পরিমাণ অত্যধিক হলে শুরু হয় ডিসচার্জ প্রক্রিয়া। আর ডিসচার্জিং-এর কারণে বাতাসের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয় বৈদ্যুতিক স্পার্ক। এই বৈদ্যুতিক স্পার্ক-এর প্রবাহের নামই বজ্রপাত। এখন প্রশ্ন হল সব বজ্রই কি ভূপৃষ্ঠে পড়ে? না, ক্লাউড এন্ড গ্রাউন্ড ডিসচার্জিং-এর ফলে সৃষ্ট বজ্রই শুধু ভূপৃষ্ঠে পড়ে। বজ্রপাত হয় দুই ধরনের। পজিটিভ এবং নেগেটিভ। নেগেটিভ বজ্রপাত ঘটে বৃষ্টিকালীন। আর যখন জমাকৃত বিপুল পরিমাণ চার্জ সরাসরি ভূমিতে এসে ভূমির গভীরে চলে যায় সেটা হচ্ছে পজিটিভ বজ্রপাত। বিপজ্জনক এ বজ্রপাতে ভোল্টেজ থাকে ১শ কোটি ভোল্ট। এবং কারেন্ট থাকে ৩ লক্ষ অ্যাম্পিয়ার। আর এটি সংঘটিত হয় বৃষ্টিহীন ঝড়ো আবহাওয়াতে।

কেন হয় বজ্রপাত

বজ্রপাত সংঘটিত হওয়ার প্রক্রিয়া সম্পর্কে আমরা অবগত হলাম। কিন্তু কেন হয় এই বজ্রপাত?এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজব আমরা কুরআনের কাছে। বজ্রপাত আল্লাহ তায়ালার মহাশক্তির বহিপ্রকাশ। আসমান-জমিনের অধিপতি এই সুমহান সত্ত্বা বজ্রপাতের মাধ্যমে সাবধান করে থাকেন তার প্রিয় বান্দাদের। দেশে জুলুম অত্যাচার বেড়ে গেলে বজ্রপাত হয়। গুনাহের কাজ যত বাড়বে বজ্রপাতও তত বাড়বে। সুরা রাদ-এর ১৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, তিনিই গর্জমান বিজলি পাঠান, তারপর যার উপর ইচ্ছা একে বিপদরূপে পতিত করেন। অতএব আসুন, সবাই নাফমানি ছেড়ে ফিরে আসি দয়াময় রবের কাছে।

এনএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ