মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ।। ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ ।। ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৭


সউদী আরব–কাতারের মধ্যে দ্রুত গতির রেল চুক্তি স্বাক্ষর

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সউদী আরব এবং কাতার সোমবার (৮ ডিসেম্বর) এক ঐতিহাসিক উচ্চগতির রেল প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এটি দু’দেশের রাজধানীকে যুক্ত করবে এবং উপসাগরীয় (গালফ) অঞ্চলের প্রথম এ ধরনের প্রকল্প। দীর্ঘদিন দ্বন্দ্বপূর্ণ সম্পর্কের পর এটি দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা ও যোগাযোগ বাড়ানোর নতুন অধ্যায়কে চিহ্নিত করছে।

সউদী আরবের রাজধানী রিয়াদ ও কাতারের দোহা শহরের মধ্যে এই রেলপথ তৈরি হবে। রিয়াদের কিং সালমান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে দোহা’র হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সঙ্গে যুক্ত করা হবে। এছাড়া সউদী শহর আল-হফুফ এবং দাম্মামও এই নেটওয়ার্কের অংশ হবে। উচ্চ গতির বৈদ্যুতিক রেলটি ঘণ্টায় ৩০০ কিমি (১৮৬ মাইল) গতিতে চলবে এবং রিয়াদ থেকে দোহার যাত্রা মাত্র দুই ঘণ্টায় শেষ হবে। যদিও সরাসরি বিমান যাত্রা প্রায় ৯০ মিনিট সময় নেয়।

প্রকল্পটি ছয় বছরের মধ্যে সম্পন্ন করার পরিকল্পনা রয়েছে। চালু হলে এটি প্রতি বছরে এক কোটি যাত্রী পরিবহন করতে সক্ষম হবে। পাশাপাশি সউদী আরব ও কাতারে প্রায় ৩০,০০০ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন সউদী ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস) এবং কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে উপসাগরীয় অঞ্চলের আধুনিক অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক শক্তিশালী হবে। ২০১৭ সালে সউদী আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মিশর কাতারের সঙ্গে সব কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল। তারা অভিযোগ করেছিল কাতার মুসলিম ব্রাদারহুডকে সমর্থন করছে এবং ইরানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করছে। কাতার এই অভিযোগ অস্বীকার করে। এরপর ২০২১ সালে আলউলা শহরে শীর্ষ সম্মেলনের মাধ্যমে সম্পর্ক পুনঃস্থাপিত হয়।

সম্পর্কের স্বাভাবিক পুনরুদ্ধারের পর দুই দেশের নেতারা নিয়মিত বৈঠক করছেন এবং গাজায় ইস্রায়েলের গণহত্যামূলক যুদ্ধের সময় মধ্যস্থতা ও যুদ্ধবিরতির উদ্যোগে একসাথে কাজ করছেন। এছাড়া সেপ্টেম্বর ২০২৩-এ কাতারের ওপর ইস্রায়েলের হামলার সময় সউদী আরব কাতারের পাশে দাঁড়িয়েছে। ওই হামলায় কমপক্ষে ছয়জন নিহত এবং চারজন আহত হয়েছিল। আহতদের মধ্যে ছিলেন হামাস নেতারা, কাতারি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও সাধারণ নাগরিক।

উচ্চগতির রেল প্রকল্প কেবল যাত্রী পরিবহন সহজ করবে না, এটি দুই দেশের অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক এবং কূটনৈতিক সহযোগিতাকে আরও দৃঢ় করবে। উপসাগরীয় অঞ্চলের জন্য এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা

এনএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ