মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট ২০২৫ ।। ৪ ভাদ্র ১৪৩২ ।। ২৫ সফর ১৪৪৭

শিরোনাম :
শেখ হাসিনার মামলায় ট্রাইব্যুনালে ১২ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন অধ্যাদেশ কিংবা গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে হবে : বুলবুল জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা আর অর্জনের মাঝে বিস্তর ফারাক রয়েছে: জমিয়ত মহাসচিব দেশকে এগিয়ে নিতে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে : ধর্ম উপদেষ্টা গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে ‘নতুন প্রস্তাব’ পেল হামাস ‘ইসলামী ব্যাংকিংয়ের অগ্রযাত্রা টেকসই করতে শরিয়াহ অডিটর তৈরি করা জরুরি’ ভারতের ছয়টি বিমান ভূপাতিত করার ভিডিও আছে: পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ‘আলেমদের মধ্যে মূল উৎস থেকে গবেষণার আগ্রহ কম’ আ. লীগ আমলের প্রশাসন দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়: রিজভী ঢাকা-৮ আসন নিয়ে পরিকল্পনা জানালেন রিকশা প্রতীকের প্রার্থী মাওলানা ফয়সাল

ভারত ও পাকিস্তানের স্বাধীনতা অর্জন একই দিনে, উদযাপন ভিন্ন দিনে কেন? 

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুফতী আবদুল কাদের মাহমুদ কাসেমী 

১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে ভারতবর্ষ বিভক্ত হয়ে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়—ভারত ও পাকিস্তান। এশিয়া উপমহাদেশের ইতিহাসে এ ঘটনা এক অনন্য অধ্যায়। উভয় দেশই একসাথে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের শৃঙ্খল থেকে মুক্তি পেলেও, স্বাধীনতা দিবস পালনের তারিখে দেখা যায় ভিন্নতা। পাকিস্তান পালন করে ১৪ আগস্ট , আর ভারত পালন করে ১৫ আগস্ট। প্রশ্ন জাগে, কেন এই পার্থক্য?

ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্য পতনের দ্বারপ্রান্তে ব্রিটিশ সংসদে গৃহীত আইনে নির্ধারিত হয়েছিল—১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট রাত ১২টা থেকে ভারত ও পাকিস্তান স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। অর্থাৎ, আন্তর্জাতিক আইনি দৃষ্টিতে উভয়ের স্বাধীনতার সময় এক। তবে পাকিস্তানের জন্য স্বাধীনতার কার্যক্রম শুরু হয় একদিন আগে। কারণ, ব্রিটিশ ভাইসরয় লর্ড মাউন্টব্যাটেন প্রথমে করাচিতে এসে পাকিস্তানের স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন, এরপর দিল্লিতে গিয়ে ভারতের স্বাধীনতা কার্যক্রমে যোগ দেন।

তৎকালীন ভারতীয় মান সময় ছিল পাকিস্তানি সময়ের চেয়ে আধঘণ্টা এগিয়ে। যখন দিল্লির ঘড়িতে ১৫ আগস্ট রাত ১২টা বেজেছিল, তখন করাচিতে ঘড়ির কাঁটা থেমেছিল ১৪ আগস্ট রাত সাড়ে ১১টায়। সেই অনুযায়ী পাকিস্তানের মানুষ স্বাধীনতার মুহূর্তকে ১৪ আগস্ট রাতেই উদযাপন করেছিল।

১৯৪৭ সালের সেই দিনই পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয় এবং মুহাম্মদ আলী জিন্নাহকে দেশের প্রথম গভর্নর জেনারেল ঘোষণা করা হয়। 

তাছাড়া ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট ছিল রমজান মাসের ২৭ তম রাত,যা মুসলিম সমাজে “লাইলাতুল কদর” নামে সর্বাধিক পবিত্র রাত হিসেবে পরিচিত। পাকিস্তানীরা এই রাতটিকে স্বাধীনতার অমলিন স্মৃতির সঙ্গে সংযুক্ত করে শুধু একটি ঐতিহাসিক দিন নয়; বরং ধর্মীয় ও রাষ্টীয় সর্বোচ্চ মর্যাদার প্রতীক হিসেবেও স্বীকৃতি দিয়েছে। 

আর ভারতের ক্ষেত্রে  ব্রিটিশ সরকার ও আন্তর্জাতিক আইনানুযায়ী ১৫ আগস্টকেই নির্দিষ্ট করা হয়  স্বাধীনতা ঘোষণার তারিখ হিসেবে। প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ঐ দিন মধ্যরাতে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন এবং দেশবাসীর উদ্দেশে ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেন। সেই ধারাবাহিকতায় ভারত ১৫ আগস্টকেই স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।

ভারত ও পাকিস্তান একই দিনে স্বাধীন হলেও সময় অঞ্চলের পার্থক্য, রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, ধর্মীয় আবহ ও প্রশাসনিক আনুষ্ঠানিকতার কারণে দু’দেশের স্বাধীনতা দিবস পালনের তারিখ ভিন্ন হয়ে যায়। পাকিস্তান ১৪ আগস্টকে তার আত্মপ্রকাশের দিন হিসেবে গ্রহণ করেছে, আর ভারত ঐতিহাসিকভাবে ১৫ আগস্টকে স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে ধরে রেখেছে। এভাবেই স্বাধীনতার একই সূর্য দুই দেশে উদিত হয় ভিন্ন ভিন্ন দিনে। 

শিক্ষার্থী: দারুল উলুম দেওবন্দ, ইউ.পি.ইন্ডিয়া

এমএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ