ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানের একটি জেলায় ২০০ জনেরও বেশি মানুষ এখনও নিখোঁজ রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন। বিবিসির প্রতিবেদনে এই খবর বলা হয়েছে। সাম্প্রতি পাকিস্তান এবং পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরে আকস্মিক বন্যায় ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এর পরেই আরো ২০০জন নিখোঁজের খবর জানা গেল।
বেশিরভাগ পাহাড়ি খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে মারা গেছে।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বুনের জেলার একজন স্থানীয় কর্মকর্তা বিবিসিকে জানিয়েছেন, সেখানে এখনও কমপক্ষে ২০৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন, তবে আশঙ্কা করা হচ্ছে যে সংখ্যাটি আরো বাড়তে পারে। বুনেরের ডেপুটি কমিশনার অফিসের মুখপাত্র জাহাঙ্গীর খান বলেছেন, উদ্ধারকারী দল আটটি অজ্ঞাত মৃতদেহ দাফন করেছে। তাদের পরিবারের কোনো সদস্যকে জীবিত পাওয়া যায়নি।
তিনি আরো বলেন, রাস্তাঘাট মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কিছু আত্মীয়স্বজন তাদের আত্মীয়স্বজনের মৃতদেহ নিতে পারছেন না।
একজন প্রাদেশিক উদ্ধার মুখপাত্র সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘১০ থেকে ১২টি গ্রাম সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে মাটিচাপা পড়ে গেছে।’ প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের প্রধান আসফান্দিয়ার খট্টক বলেছেন, শাংলা জেলায় ‘বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছে।’ জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে বর্ষাকালে দক্ষিণ এশিয়ার বার্ষিক বৃষ্টিপাতের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ বৃষ্টিপাত হয়।
যদিও ভূমিধস এবং আকস্মিক বন্যার এখানে সাধারণ, তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই ঘটনাগুলো আরো তীব্র এবং ঘন ঘন হচ্ছে।
এদিকে ভারত-শাসিত কাশ্মীরেও মুষলধারে বৃষ্টিপাত হয়েছে, কয়েকদিন আগে আকস্মিক বন্যায় কমপক্ষে ৬০ জন নিহত হয়েছিল। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই সপ্তাহে পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরে নয়জন মারা গেছেন এবং উত্তর গিলগিট-বাল্টিস্তান অঞ্চলে আরো পাঁচজন মারা গেছেন। সরকারি পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, উত্তর-পশ্চিমে ২১ আগস্ট পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। সেখানে বেশ কয়েকটি এলাকাকে দুর্যোগপূর্ণ অঞ্চল ঘোষণা করা হয়েছে।
পাকিস্তানে এ বছর এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৬৫০ জন মারা গেছে। পাকিস্তানের ২৫৫ মিলিয়ন জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকের আবাসস্থল পাঞ্জাবে। পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় এ বছর ৭৩ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে এবং বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
সূত্র : বিবিসি
এসএকে/