আয়ারল্যান্ডের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রাক্তন হাইকমিশনার মেরি রবিনসন বলেছেন, গাজায় চলমান গণহত্যায় যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা সবচেয়ে বেশি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অবশ্যই এ বিষয়টি স্বীকার করতে হবে।
২০০৭ সালে নেলসন ম্যান্ডেলার প্রতিষ্ঠিত বৈশ্বিক নেতৃত্বের সংগঠন ‘এল্ডার্স গ্রুপ’-এর প্রতিনিধিদলের অংশ হিসেবে রাফাহ সীমান্তের মিশরীয় অংশ পরিদর্শন শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আল জাজিরা আরবিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মেরি রবিনসন বলেন, গাজায় হাজার হাজার ত্রাণবাহী ট্রাক অগ্রহণযোগ্য ও অযৌক্তিক অজুহাতে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, “আমরা দেখেছি—গাজায় দুর্ভিক্ষ চলছে, গণহত্যা চলছে। এই হত্যাযজ্ঞ বন্ধে বিশ্বের দেশগুলোর উদ্যোগে আমাদের যুক্ত হতে হবে।”
২০২৩ সাল থেকে আন্তর্জাতিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান উপেক্ষা করে ইসরায়েল গাজায় অব্যাহতভাবে বোমাবর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে, যার ফলে অঞ্চলটি ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও খাদ্য সংকটে দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৬১ হাজার ছাড়িয়েছে এবং আহত হয়েছে দেড় লাখের বেশি মানুষ। অনেকেই এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন।
এ বছর ২৭ মে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের পর ইসরায়েল জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলোকে এড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’-এর মাধ্যমে একটি পৃথক ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচি চালু করেছে—যা বিশ্বব্যাপী ত্রাণ সংস্থাগুলো প্রত্যাখ্যান করেছে। এ সময়ে ইসরায়েলি বাহিনী ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে জড়ো হওয়া ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে শত শত মানুষকে হত্যা করছে।
গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা চলছে।
এমএইচ/