বুধবার, ২৮ মে ২০২৫ ।। ১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ ।। ১ জিলহজ ১৪৪৬


ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তির দ্বারপ্রান্তে যুক্তরাষ্ট্র

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইরানের সঙ্গে একটি পারমাণবিক চুক্তি করতে ওয়াশিংটন ও তেহরান খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। এছাড়া তেহরান চুক্তির বেশ কিছু শর্তে ‘‘আংশিকভাবে রাজি’’ হয়েছে। উপসাগরীয় অঞ্চলের তিন দেশ সফরকালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট এই মন্তব্য করেছেন বলে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

ট্রাম্প বলেছেন, আমরা ইরানের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন, ‘‘আমরা এমন একটি চুক্তির দিকে এগোচ্ছি, যেখানে আমাদের হয়তো শক্তি প্রয়োগ করতে হবে না...। তিনি আরও বলেন, এই চুক্তিতে পৌঁছানোর দুটি পথ আছে—একটি খুব সুন্দর পদক্ষেপ, আরেকটি সহিংস উপায়। আমরা কোন পথে হাঁটব তা নির্ভর করছে ইরানের সিদ্ধান্তের উপর’’

তবে আলোচনার সঙ্গে যুক্ত ইরানের একটি সূত্র বলেছে, চুক্তির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় এখনও অনেক মতপার্থক্য দূর করা বাকি আছে।

এদিকে, ওয়াশিংটন-তেহরান চুক্তির সম্ভাবনা ঘিরে বৃহস্পতিবার বিশ্ববাজারে তেলের দাম প্রায় ২ ডলার কমে গেছে। কারণ ব্যাপক বৈরী এই দুই দেশের মাঝে চুক্তি হলে শেষ পর্যন্ত ইরানের ওপর আরোপিত বিভিন্ন ধরনের অনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়া হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এর আগে, রোববার ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারমাণবিক ইস্যুতে ওমানে চতুর্থ দফার আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই বৈঠকে চূড়ান্ত সমাধানে পৌঁছানোর লক্ষ্যে পরবর্তী দফার আলোচনার পরিকল্পনাও চূড়ান্ত করা হয়েছে। যদিও তেহরান প্রকাশ্যে বলেছে, তারা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালু রাখবে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন একজন কর্মকর্তা ও অপর দুটি সূত্র বলেছে, রোববারের আলোচনায় ইরানকে একটি চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

তেহরান ও ওয়াশিংটন বলছে, তারা কূটনৈতিক উপায়ে এই দীর্ঘমেয়াদি সমস্যার সমাধান চায়। তবে এই আলোচনায় এখনও বেশ কিছু বিষয়ে উভয়পক্ষের মাঝে মতপার্থক্য রয়েছে। আর এসব মতপার্থক্য এড়িয়ে ভবিষ্যতের সম্ভাব্য সামরিক আক্রমন ঠেকানোর লক্ষ্যে আলোচকরা কাজ করছেন।

মঙ্গলবার ট্রাম্পের মন্তব্যের জবাবে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান যুক্তরাষ্ট্রকে মধ্যপ্রাচ্যের ‘‘সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক শক্তি’’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ট্রাম্প মনে করেন, তিনি আমাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে, হুমকি দিয়ে তারপর ফের মানবাধিকারের কথা বলবেন। এই অঞ্চলের সব অপরাধ ও অস্থিতিশীলতার উৎস তারাই (যুক্তরাষ্ট্র)। ট্রাম্প ইরানে অস্থিরতা তৈরি করতে চান বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এনবিসি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইরানি একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘‘অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের শর্তে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছাতে আগ্রহী ইরান।’’

আর ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির উপদেষ্টা আলী শামখানি এনবিসি নিউজকে বলেছেন, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি স্থগিত রাখবে। তারা কেবল বেসামরিক ব্যবহারের জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করবে এবং আন্তর্জাতিক নির্দেশনা মেনে চলবে।

সূত্র: এএফপি।

এমএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ