শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫ ।। ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ ।। ৭ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

শিরোনাম :
শিশুর বারবার ঠান্ডা লাগা: কারণ ও প্রতিকার জানুন ধর্মের অপব্যাখ্যা করে বিশৃঙ্খলা তৈরির সুযোগ কাউকে দেয়া হবে না: ধর্ম উপদেষ্টা বাংলাদেশে কেন একজন মাওলানা ফজলুর রহমান নেই, কেন হয় না! বড় হচ্ছে দুদকের পরিধি, কর্মকর্তাদের সম্পদ যাচাই বাধ্যতামূলক আগামী সপ্তাহে প্রবাসীদের ঠিকানায় যাচ্ছে পোস্টাল ব্যালট অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই নির্বাচন করবেন: উপদেষ্টা আসিফ খোদাদ্রোহী বাউল আবুল সরকারের মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে জাতীয় ইমাম পরিষদের মানববন্ধন বাউলদের ওপর হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে : প্রেস সচিব শ্রীলঙ্কায় বন্যা-ভূমিধসে অন্তত ৩২ জনের মৃত্যু, নিখোঁজ ১৪ দুটি ট্রলারসহ টেকনাফের ১২ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি

ভয়েজার ১: ইতিহাসের প্রথম ‘লাইট ডে’ দূরত্বে যাওয়া দূত

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

||মুহাম্মদ মিজানুর রহমান||

১৯৭৭ সালে পৃথিবী থেকে যাত্রা শুরু করা একটি ক্ষুদ্রযান আজ ইতিহাস রচনা করতে চলেছে। এটি আর কিছুই নয়, আমাদেরই প্রেরিত মহাকাশযান ভয়েজার ১, যা ২০২৬ সালের নভেম্বরে পৌঁছাবে এক লাইট ডে দূরত্বে—মানবজাতির গড়া কোনো বস্তুর প্রথম এমন কীর্তি।

এক লাইট ডে মানে এক দিনে আলো যত দূর যেতে পারে—প্রায় ২৫.৯ বিলিয়ন কিলোমিটার। এটা লাইট ইয়ার নয়—তা আরও অনেক বেশি দূরত্ব। ভয়েজার ১ বর্তমানে পৃথিবী থেকে প্রায় ২৪.৯ বিলিয়ন কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। তার বেগ ঘণ্টায় প্রায় ৬১ হাজার কিলোমিটার, আর একটি সংকেত পৃথিবীতে পৌঁছাতে সময় লাগে প্রায় ২৩ ঘণ্টা ৫ মিনিট।

প্রথমে বৃহস্পতি ও শনি গ্রহের ছবি ও তথ্য পাঠানোর উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়েছিল যন্ত্রটিকে। কিন্তু সফলতার সীমা ছাড়িয়ে এটি পেরিয়ে গেছে সৌরজগতের সীমানা, অতিক্রম করেছে সূর্যের প্রভাববলয় হেলিওস্ফিয়ার, আর এখন রয়েছে আন্তঃনাক্ষত্রিক অঞ্চলে—ইন্টারস্টেলার স্পেসে।

ভয়েজার ১ এর শরীরে রয়েছে একটি বিশেষ গোল্ডেন রেকর্ড, যাতে সংরক্ষিত পৃথিবীর ভাষা, সঙ্গীত, ছবি এবং মানবজাতির তথ্য। এ যেন ভবিষ্যতের কোনো বুদ্ধিমান প্রাণীর জন্য পৃথিবীর পক্ষ থেকে একটি পরিচিতি-পত্র।

অন্য কোনো জাতি না হোক, ভয়েজার ১ যেন আমাদের নিজেদেরই স্মরণ করিয়ে দেয়: আমাদের কৌতূহল, প্রযুক্তি আর অভিযাত্রার সীমা নেই। 

তবে ভয়েজার ১ এখনো পুরোপুরি সৌরজগত ছাড়িয়ে যায়নি। সৌরজগতের প্রান্তসীমা হিসেবে ধরা হয় ওর্ট ক্লাউড—যেখানে পৌঁছাতে সময় লাগবে হাজারো বছর।

শক্তির উৎস হিসেবে ভয়েজার ১ ব্যবহার করছে রেডিওআইসোটোপ থার্মোইলেকট্রিক জেনারেটর (RTG), যা প্লুটোনিয়াম-২৩৮ থেকে তেজস্ক্রিয় ক্ষয়ের মাধ্যমে শক্তি উৎপন্ন করে। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই তেজস্ক্রিয়তা কমে আসছে, তাই ধারণা করা হচ্ছে, ২০৩০ সালের মধ্যেই এটি নি:ক্রিয় হয়ে পড়বে। 

তবুও, এক লাইট ডে দূরত্বে পৌঁছানো এই যন্ত্র মানবজাতির সীমাহীন কৌতূহল, সাহস ও প্রযুক্তির প্রতীক হয়ে থাকবে। ভয়েজার ১ যেন নীরব এক সাক্ষ্য—আমরা এসেছিলাম, দেখেছিলাম, এবং ছুটে চলেছি অজানার দিকে।

২০২৬ সালের সেই দিনটি—ভয়েজার ১ যখন এক লাইট ডে দূরত্ব ছুঁবে—হতে পারে মানবজাতির আরেকটি চিরস্মরণীয় দিন।

এনএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ