।। মুহাম্মদ মিজানুর রহমান।।
ইউটিউব, ফেসবুক, ইনস্ট্রাগ্রাম কিছুদিন আগেও ছিল বিনোদনের মাধ্যম্ মাত্র। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় এগুলো এখন হয়ে উঠেছে আয়েরও অন্যতম উৎস। এবং সেই আয়ের পথটাও দিন দিন হয়ে উঠছে সুগম এবং সহজলভ্য। যে কেউ এখন ইচ্ছা করলেই এসব মাধ্যম থেকে বিশাল অংকের টাকা আয় করতে পারেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, ইউটিউব, ফেসবুক, ইনস্ট্রাগ্রাম থেকে আয় হালাল নাকি হারাম। ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে এসব থেকে আয় হালাল বা হারাম —তা নির্ভর করে আয়ের উৎস ও কনটেন্ট কেমন তার ওপর।
কখন ইউটিউব, ফেসবুক, ইনস্ট্রাগ্রাম থেকে আয় হালাল হয়:
১. হালাল কনটেন্ট : ইনকাম হালাল হওয়ার প্রথম শর্তই হচ্ছে কনটেন্ট হালাল হওয়া। যেমন ইসলামি আলোচনা, শিক্ষামূলক ভিডিও, ভ্রমণ, রান্না, টিউটোরিয়াল, হস্তশিল্প ইত্যাদি হচ্ছে হালাল কনটেন্ট।
২. অশ্লীলতা/মিথ্যা/ধোঁকা মুক্ত : কনটেন্ট শুধু হালাম হলেই হবে না, লেখা বা ভিডিওতে অশ্লীল দৃশ্য, মিথ্যা তথ্য, গীবত, অপবাদ, সঙ্গীত (যদি হারাম ধরণের হয়) ইত্যাদি না থাকে।
৩. হারাম বিজ্ঞাপন বন্ধ: ইউটিউব সাধারণত নিজে থেকে বিজ্ঞাপন দেয়, যার মধ্যে হারাম জিনিস (মদ, জুয়া, অশ্লীলতা) থাকতে পারে। এসব এড়িয়ে চলা উচিত। ইউটিউব “Ad category blocking” অপশন দিয়ে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
কখন ইউটিউব, ফেসবুক, ইনস্ট্রাগ্রাম থেকে আয় হারাম হতে পারে:
১. শরীর প্রদর্শন, গানের ভিডিও, নাচ, অপসংস্কৃতি—এসবের মাধ্যমে আয় করলে তা হারাম হয়।
২. মিথ্যা সংবাদ বা গুজব ছড়িয়ে টাকা আয় করলে সেটা হবে জুলুম ও গুনাহ।
৩. হারাম পণ্যের প্রচার বা হারাম বিজ্ঞাপন থেকে প্রাপ্ত টাকা হারাম হিসেবে গণ্য হবে।
আলেমদের মতামত:
বিশ্বস্ত আলেমরা বলেন, “ইউটিউব, ফেসবুক, ইনস্ট্রাগ্রাম থেকে আয় হালাল যদি কনটেন্ট ও বিজ্ঞাপন শরিয়তসম্মত হয়।” কেউ যদি সরাসরি হারাম কিছু প্রচার না করেও ভিডিওর মাধ্যমে হারাম বিজ্ঞাপন চালায়, তাও সন্দেহজনক হতে পারে।
ইউটিউব, ফেসবুক, ইনস্ট্রাগ্রাম থেকে আয় নিজে হালাল বা হারাম নয়; এটি নির্ভর করে আপনি কী উপায়ে, কী কনটেন্ট দিয়ে ও কীভাবে আয় করছেন তার উপর। একে হালাল রাখতে চাইলে সচেতনভাবে ইসলামি সীমারেখা মেনে চলা জরুরি।
এনএইচ/