বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫ ।। ৪ আষাঢ় ১৪৩২ ।। ২২ জিলহজ ১৪৪৬

শিরোনাম :
ফেসবুকে সব ভিডিও এখন ‘রিলস’: কনটেন্ট অভিজ্ঞতায় বড় পরিবর্তন আনছে মেটা ঈমানের দাবিতে ইসলামী আন্দোলন করি: শাহ ইফতেখার তারিক  ইরানে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৫৮৫, দাবি মানবাধিকার সংস্থার ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে সরাসরি যুক্ত না হতে যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়ার সতর্কতা যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে যে বার্তা দিলেন খামেনি প্রার্থী বাছাইয়ে ইসলামি দলগুলোর যেসব বিষয় বিশেষ বিবেচনায় নিতে হবে মৌলিক সংস্কারে প্রয়োজনে গণভোটে যাওয়ার প্রস্তাব ইসলামী আন্দোলনের ঐক্য, আদর্শ ও দেওবন্দি ধারার রাজনৈতিক বাস্তবতা ‘চুপসে’ যাওয়া নিবন্ধিত ৫টি ইসলামি দলের হালচাল  ‘জুলাই-যোদ্ধা’ ভুয়া প্রমাণিত হলে ২ বছরের কারাদণ্ড

বৃষ্টির ফোঁটা থেকেই বিদ্যুৎ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুহাম্মদ মিজানুর রহমান

বৃষ্টির দিনে টিনের চালে টুপটাপ বৃষ্টির শব্দ অনেকেরই পছন্দ। কারো কারো ভালো লাগার মুহুর্তও বটে! কারো কাছে অলস বিকেলে বৃষ্টির শব্দকে মনে হয় অপার্থিব এক সুরের মুর্চ্ছনা। কারো কাছে বৃষ্টি ঝরা সন্ধ্যা রোমান্টিকতার আদিম পাঠ! এই বৃষ্টির ফোঁটা থেকেই যদি পাওয়া যায়  বিদ্যুৎ সেটা নিশ্চয় অবাক করা বিষয় হবে। হ্যাঁ, বৃষ্টির ফোঁটা থেকেই বিদ্যুৎ—উন্মোচিত হচ্ছে নবায়নযোগ্য শক্তির এক নতুন দিগন্ত!

সৌরবিদ্যুৎ এদেশে বেশ জনপ্রিয় একটি প্রযুক্তি। সৌর প্যানেল চার্জ হয় সূর্যের তাপের সাহায্যে। কিন্তু বর্ষাকালে মাঝে মধ্যে দিনের পর দিনও সূর্যের দেখা মেলে না। তখন ব্যাহত হয় বিদ্যুৎ উৎপাদন। যে কারণে বর্ষাকালে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হয় সেই কারণটাই এখন ব্যবহৃত হবে বিদ্যুৎ উৎপাদনে! বিষয়টা আক্ষরিক অর্থেই বিস্ময়কর নয় কি!

জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নবায়নযোগ্য শক্তির খোঁজে বিশ্বের বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান কাজ করছে নিরন্তর। এ দৌড়ে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করলো সিঙ্গাপুরের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় (NUS)। বিশ্ববিদ্যালয়টির একদল গবেষক সম্প্রতি উদ্ভাবন করেছেন এমন একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, যা বৃষ্টির ফোঁটা থেকে সরাসরি বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম।

এই অভিনব প্রযুক্তি “প্লাগ ফ্লো” নামক এক বৈজ্ঞানিক নীতির উপর ভিত্তি করে তৈরি। এই নীতিতে বিভিন্ন পদার্থ ধারাবাহিকভাবে একটির পর একটি প্রবাহিত হয়, কিন্তু পরস্পরের সঙ্গে মিশে না—যেমন রেলগাড়ির বগিগুলো। এ পদ্ধতির ব্যবহার ইতিপূর্বে রাসায়নিক রিঅ্যাক্টর ও পানির পরিশোধনে দেখা গেলেও এবার তা বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহারের পথে এক বিশাল অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

প্রযুক্তিটির মূল কার্যপ্রণালিতে গবেষকরা একটি উল্লম্ব টিউব ব্যবহার করেন, যেখানে বৃষ্টির অনুরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়। ফোঁটাগুলোর মাঝে ক্ষুদ্র বায়ুপকেট থেকে তৈরি হয় সুনির্দিষ্ট প্লাগ ফ্লো, যা নিচের দিকে পড়ার সময় চার্জ বিচ্ছেদ ঘটিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। পরীক্ষামূলকভাবে এই পদ্ধতিতে তারা মাত্র একটি ডিভাইস ব্যবহার করে ১২টি এলইডি বাল্ব জ্বালাতে সক্ষম হন।

ই প্রযুক্তি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তুলনায় অনেক বেশি কমপ্যাক্ট ও শহুরে ব্যবহারের উপযোগী। নদী বা জলপ্রপাতের প্রয়োজন না থাকায় এটি বৃষ্টিবহুল শহরগুলোর প্রতিটি ছাদেই স্থাপনযোগ্য। গবেষকদের দাবি, পতিত জলের শক্তির প্রায় ১০ শতাংশকে বিদ্যুতে রূপান্তর করতে পারবে এই প্রযুক্তি—যা ভবিষ্যতে সৌরশক্তি বা বায়ুশক্তির কার্যকর বিকল্প হয়ে উঠতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই উদ্ভাবন কেবল বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রেই নয়, বরং জলবায়ু পরিবর্তন রোধে ও টেকসই নগরায়নে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম। ভবিষ্যতের প্রতিটি বাড়ির ছাদই হতে পারে একটি ক্ষুদ্র বিদ্যুৎ কেন্দ্র, যা পরিবেশবান্ধব ও সাশ্রয়ী শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করবে।

এ যেন সত্যিই এক নতুন যুগের সূচনা।

এনএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ