শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ।। ৪ আশ্বিন ১৪৩২ ।। ২৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
বকেয়া বেতনের দাবিতে ভালুকায় শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ শিশু-কিশোর সংগঠন 'অংকুর' এর সীরাতুন্নবী সা. কুইজ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত জুলাই সনদের ভিত্তিতে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চাই - খুলনা ইসলামী আন্দোলন  কাতারের মধ্যস্থতায় আফগানিস্তানে কারাবন্দি ব্রিটিশ দম্পতির মুক্তি মাদকের বিরুদ্ধে মুরাদনগরে ওলামা পরিষদের মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ পাকিস্তানে পৃথক বিস্ফোরণে নিহত অন্তত ১১ ইসলামি বইমেলা পরিদর্শনে জাতীয় মসজিদের খতিব প্রাথমিকে গানের নয়, ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে: শায়খে চরমোনাই পীর সাহেব চরমোনাইয়ের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ‘মিট আপ’ আফগানিস্তানের বাগরাম বিমান ঘাঁটি আবারও নিয়ন্ত্রণে নিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র

জুলাই সনদের বাস্তবায়ন ও পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দাবিতে ইসলামী আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা


নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ছবি: সংগৃহীত

আইনি ভিত্তি দিয়ে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন এবং এর ভিত্তিতেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। একই সঙ্গে দলটি পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন, সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং ফ্যাসিবাদী শক্তি ও তাদের সহযোগীদের বিচারের দাবি তুলেছে।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও পীর সাহেব চরমোনাই মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম এসব দাবি জানান। 

পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, জুলাই অভ্যুত্থান কেবল ক্ষমতার পালাবদলের জন্য হয়নি। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল স্বৈরতন্ত্রকে চিরতরে নির্মূল করা, রাষ্ট্রের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাধীন করা, ক্ষমতার ভারসাম্য আনা এবং জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু দুঃখজনকভাবে অভ্যুত্থানের দেড় বছর পরও সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। বরং জুলাই সনদকে নানা পক্ষের স্বার্থের কারণে দুর্বল করে ফেলা হয়েছে।

তিনি অভিযোগ করেন, সংস্কার ও বিচারকে উপেক্ষা করে কেবল নির্বাচনের দিকেই জোর দেওয়া হচ্ছে। এতে দেশ আবারো পুরোনো অশুভ বন্দোবস্তে নিপতিত হতে পারে। তিনি মনে করেন, গণঅভ্যুত্থানের সার্বভৌম এখতিয়ার থেকেই জুলাই সনদকে অবিলম্বে আইনি ভিত্তি দিয়ে বাস্তবায়ন করতে হবে, কারণ নির্বাচনের পরে আর কোনো দল সেটি কার্যকর করবে না।

পীর সাহেব চরমোনাই আওয়ামী লীগের অপরাধের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, মাত্র কয়েকজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বিচার কার্যক্রম চালানো হলেও মূল হোতারা এখনো বিদেশে বসে চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে। এতে করে অভ্যুত্থানের বিপ্লবীদের জীবন হুমকির মুখে পড়েছে। তিনি বিচার কার্যক্রম জেলা পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া, পালিয়ে থাকা অপরাধীদের ফিরিয়ে আনা এবং পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারের দাবি জানান।

জাতীয় পার্টির ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন তারা ফ্যাসিবাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে, অবৈধ নির্বাচনে অংশ নিয়ে ফ্যাসিবাদী সরকারকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। এখন আবারো তারা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। তাই জাতীয় পার্টিসহ ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচার করতে হবে এবং বিচার চলাকালে তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে। তিনি এদেরকে “ভারতীয় আধিপত্যবাদী শক্তির প্রকাশ্য এজেন্ট” বলে আখ্যায়িত করেন।

সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ছাড়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। কিন্তু বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, প্রশাসনের পক্ষপাতমূলক আচরণ এবং সন্ত্রাসের ভয়াবহতা দেখে আশাবাদী হওয়া যাচ্ছে না। তিনি অভিযোগ করেন, লন্ডন বৈঠক ও এককভাবে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার মতো কর্মকাণ্ড সরকারকে একটি নির্দিষ্ট দলের প্রতি পক্ষপাতী করে তুলছে।

এতে মাঠ প্রশাসনও স্বাভাবিকভাবে ওই দলের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। তাই অবিলম্বে প্রশাসনকে নিরপেক্ষ করা ও আইনশৃঙ্খলার উন্নতি নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তিনি।

নির্বাচন পদ্ধতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিগত ৫৪ বছরে যে প্রক্রিয়ায় নির্বাচন হয়েছে, তা দেশকে বারবার পিছনের দিকে ঠেলে দিয়েছে। রাষ্ট্রের ভিত্তি দুর্বল হয়েছে, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিঃশেষ হয়েছে এবং দুর্নীতি বেড়েছে। ব্যক্তিখাতের উদ্যোগে কিছু উন্নয়ন হলেও রাজনৈতিক সংস্কৃতি ভেঙে পড়েছে। তাই পুরোনো পদ্ধতিতে আর নির্বাচন করলে তা দেশকে আবারো সংকটে ফেলবে। এর বিকল্প হিসেবে তিনি সংসদের উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ইসলামী আন্দোলনের অবস্থান কোনো রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে নয়। বরং জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের রক্ত ও জনগণের ত্যাগের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই এসব দাবি তোলা হচ্ছে। তিনি জানান, দাবিগুলো আদায় না হওয়া পর্যন্ত ধারাবাহিক কর্মসূচি চলবে এবং সময়ের সাথে সাথে আন্দোলন আরও কঠোর হবে।

ইসলামী আন্দোলন ইতোমধ্যেই দাবিগুলো সামনে রেখে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল, ১৯ সেপ্টেম্বর বিভাগীয় শহরে বিক্ষোভ এবং ২৬ সেপ্টেম্বর সারাদেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিল।

এসএকে/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ