সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ।। ৭ আশ্বিন ১৪৩২ ।। ৩০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা মাদরাসা ছাত্রী, অভিযুক্ত জামায়াতকর্মী গ্রেপ্তার. ইসলামকে একটি বার সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ শায়খে চরমোনাইয়ের বক্তা আমির হামজার বক্তব্য মনগড়া ও অসত্য: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেবে বিআরটিএ নিজ খরচে দৃষ্টিনন্দন মসজিদ নির্মাণ করলেন তামিম ইকবাল ফজলুর রহমানের মন্তব্যের প্রতিবাদ ডাকসু নেতাদের জাতিসংঘ অধিবেশনে প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী আরও দুই নেতা যেসব দেশ ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে  ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিলো যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া জাগো হে কওমি তারুণ‍্য!

ঈদে নির্বাচনী এলাকায় সরব ইসলামি দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা


নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ছবি: সংগৃহীত

বিশেষ প্রতিনিধি

দরজায় কড়া নাড়ছে ভোট। আগামী নির্বাচনের আগে এবারের ঈদুল আজহাই হতে পারে শেষ ঈদ। আর এই সুযোগকে কাজে লাগাতে সক্রিয় মাঠ পর্যায়ের রাজনীতিবিদেরা। যারা ভোটে লড়তে চান তারা নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় সময় দিচ্ছেন। জনগণের সঙ্গে সংযোগ বাড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই ইসলামি দলের নেতারাও। এলাকায় নিজেকে পরিচিত করা এবং জনগণের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে ঈদকে সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে দেখছেন তারা। 

আগামী জানুয়ারি থেকে নিয়ে জুনের মধ্যে দেশে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো সেভাবেই ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছে। নির্বাচন কোন ফরম্যাটে হবে, কার সঙ্গে কে জোট করবে সে বিষয়টি এখনো পরিষ্কার নয়। তবে সম্ভাব্য প্রার্থীরা ব্যক্তিগত প্রচার-প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছে তাদের প্রচার-প্রচারণার পোস্টার। অন্য যেকোনো বারের চেয়ে এবার ইসলামি দলের প্রার্থীদের তৎপরতাও চোখে পড়ার মতো। 

ইসলামি দলগুলো একটি বৃহৎ জোট গঠনের লক্ষ্যে আলাপ-আলোচনা অব্যাহত রেখেছে। শেষ পর্যন্ত সেই জোট হবে কি না সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে ইসলামি জোট হলে ভোটের মাঠে বেশ সম্ভাবনার কথাই বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। যদিও ইসলামি দলগুলোর জোট শেষ পর্যন্ত আদৌ হবে কি না সেটা নিয়ে খোদ জোটের উদ্যোক্তাদের মধ্যেই সন্দেহ রয়েছে। 

এদিকে প্রধান ইসলামি দলগুলো একদিকে জোট গঠনের তৎপরতা চালাচ্ছে, অন্য দিকে নিজ দল থেকে প্রার্থী বাছাই অব্যাহত রেখেছে। একের পর এক প্রার্থী ঘোষণা করছে দলগুলো। অন্তত চারটি ইসলামি দল এখন পর্যন্ত তিনশ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তবে জোট হলে ছাড় দেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে সবারই। 

অন্যান্য ইসলামি দল নিয়ে জোট গঠনের চেষ্টা করে যাচ্ছে জামায়াতে ইসলামী। অন্যদিকে দলটি তিনশ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইতোমধ্যে বেশির ভাগ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। অনুকূল পরিবেশ পেয়ে জামায়াতের নেতারা তাদের ব্যাপক সাংগঠনিক তৎপরতা চালাচ্ছেন। সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিজ নিজ এলাকায় কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে হিসেবে প্রার্থীরা ঈদ নির্বাচনী এলাকাতেই কাটানোর প্রস্তুতি নিয়েছেন। 
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সরাসরি তিনশ আসনে প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা না করলেও দলের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই) সম্প্রতি এক জনসভায় জানিয়েছেন, তিনশ আসনে প্রার্থী দেওয়ার মতো সক্ষমতা তারা অর্জন করেছেন। দলটি আগামী নির্বাচনে হাতপাখা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে দলটি তরুণদের প্রাধান্য দিচ্ছে। মুফতি রেজাউল কারীম আবরার, মুফতি শামসুদ্দোহা আশরাফী, কলরবের নির্বাহী পরিচালক বদরুজ্জামানের মতো পরিচিত মুখ বেশ কিছু প্রার্থী ইতোমধ্যে ঘোষণা করেছে ইসলামী আন্দোলন। এছাড়াও যেমন আসনে লড়াইয়ের কথা ভাবছে দলটি সেসব আসনে প্রাথমিকভাবে প্রার্থী বাছাই করে রেখেছে। সেই প্রার্থীরা ঈদে নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় কাজ করে যাচ্ছেন। 

মাওলানা মামুনুল হকের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস তিনশ আসনে প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। দলটি ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি জেলায় রিকশা প্রতীকের প্রার্থীদের তালিকাও প্রকাশ করেছে। দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় গণসংযোগ শুরু করেছেন। ঈদের ছুটি কাজে লাগানোর টার্গেট নিয়েছেন তারা। 

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম নতুন কমিটি হওয়ার পর থেকে বেশ তৎপর। দলটির নবনির্বাচিত সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক ঈদে নিজ নির্বাচনী এলাকা সিলেটে রয়েছেন। সেখানে তিনি গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন। তিনি ছাড়াও দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় জনগণের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। 

নির্বাচনী প্রচারে পিছিয়ে নেই খেলাফত মজলিসও। দলটি তাদের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা অব্যাহত রেখেছে। দেয়াল ঘড়ি প্রতীকে ভোটের আহ্বান জানিয়ে দলীয় প্রার্থীরা ইতোমধ্যে ফেসবুকে পোস্টার ছেড়েছেন। কারও কারও ছাপা পোস্টার এলাকার দেয়ালে দেয়ালে ঝুলছে। জোট এবং একক দুইভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে খেলাফত মজলিস। 

এর বাইরে ইসলামী ঐক্যজোট, খেলাফত আন্দোলন, নেজামে ইসলাম পার্টিসহ অন্যান্য ইসলামি দলগুলোর সম্ভাব্য প্রার্থীরাও কাজ শুরু করেছেন। এর মধ্যে কারও কারও কাজ দৃশ্যমান হচ্ছে, আবার অনেকেই ভেতরে ভেতরে কাজ অব্যাহত রেখেছেন। 

সামগ্রিকভাবে ইসলামি দলগুলো এবারের নির্বাচনে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি তৎপর। তবে শেষ পর্যন্ত বৃহৎ জোটের মাধ্যমে নাকি কেউ কেউ বিএনপির সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে আসন ভাগাভাগি করে সেটা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। ভোটের সময় যত ঘনিয়ে আসবে বিষয়টি ততই পরিষ্কার হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

এসএকে/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ