সবধরনের কার্যক্রমের ওপর সরকারের নিষেধাজ্ঞার পর এবার ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত দল আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করল নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
সোমবার (১২ মে) নির্বাচন কমিশন ভবনে চার ঘণ্টা বৈঠক শেষে রাত ৯টার পর নির্বাচন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা জানেন যে, আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তার অঙ্গ সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে। তার ধারাবাহিকতায় ইলেকশন কমিশন আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সিনিয়র সচিব বলেন, সে অনুযায়ী আমরা গেজেট নোটিফিকেশন জারি করেছি। আপনারা গেজেটের কপিটা বিজি প্রেস থেকে পেয়ে যাবেন।
কোন গ্রাউন্ডে এই নিবন্ধন স্থগিত করা হলো জানতে চাইলে ইসি সচিব আকতার আহমেদ বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যে প্রজ্ঞাপন তার ধারাবাহিকতায় আমরা এটা করেছি।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)-১৯৭২ অনুযায়ী, কোনো দলকে নিজেদের প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে চাইলে নির্বাচন কমিশন থেকে নিবন্ধন পেতে হয়। অন্যথায় সংশ্লিষ্ট দল অন্য দলের সঙ্গে জোট করে নির্বাচন করতে পারলেও নিজেদের পরিচয়ে ভোটে অংশ নিতে পারে না। নবম সংসদ নির্বাচনের আগে নিবন্ধন প্রথা চালু হয়, আর সংশ্লিষ্ট আইনে নিবন্ধন বাতিলের বিধানও অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
এই আইনে ক্ষমতায় থাকাকালে আওয়ামী লীগ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে। এবার সেই আইন প্রয়োগ হলো আওয়ামী লীগেরই ওপর।
এর আগে আওয়ামী লীগ সরকারেরই করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনে কিছুটা সংশোধনী এনে অন্তর্বর্তী সরকার দলটির যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। সোমবার (১২ মে) বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের রাজনৈতিক শাখা-২ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। জুলাই-আগস্টের গণহত্যার অভিযোগে দলটি এবং এর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এর বিচার প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নামে কোনো ধরনের কার্যক্রম চালানোর সুযোগ নেই।
গত শনিবার (১০ মে) রাতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম সাময়িক নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়। উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার নেতাদের বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার জন্য সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে সাইবার স্পেসসহ আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এমএইচ/