শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ।। ৪ আশ্বিন ১৪৩২ ।। ২৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
বকেয়া বেতনের দাবিতে ভালুকায় শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ শিশু-কিশোর সংগঠন 'অংকুর' এর সীরাতুন্নবী সা. কুইজ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত জুলাই সনদের ভিত্তিতে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চাই - খুলনা ইসলামী আন্দোলন  কাতারের মধ্যস্থতায় আফগানিস্তানে কারাবন্দি ব্রিটিশ দম্পতির মুক্তি মাদকের বিরুদ্ধে মুরাদনগরে ওলামা পরিষদের মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ পাকিস্তানে পৃথক বিস্ফোরণে নিহত অন্তত ১১ ইসলামি বইমেলা পরিদর্শনে জাতীয় মসজিদের খতিব প্রাথমিকে গানের নয়, ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে: শায়খে চরমোনাই পীর সাহেব চরমোনাইয়ের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ‘মিট আপ’ আফগানিস্তানের বাগরাম বিমান ঘাঁটি আবারও নিয়ন্ত্রণে নিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র

শিশুদের সঙ্গে রাসুল (সা.)-এর হাসি ও স্নেহ: এক চিরন্তন ভালোবাসার গল্প

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

OUR ISLAM প্রতিবেদক

যিনি ছিলেন মানবজাতির শ্রেষ্ঠ আদর্শ, তিনি শুধু রাজনীতি, সমাজনীতি কিংবা আখলাকের ক্ষেত্রে নয়—শিশুদের প্রতি ভালোবাসা ও কোমলতার ক্ষেত্রেও ছিলেন অতুলনীয়। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ ﷺ ছিলেন এমন এক মহান মানব, যার চোখে শিশুরা ছিল ফুলের মতো পবিত্র, আনন্দের উৎস, দয়ার পাত্র।

ভালোবাসার ছায়াতলে ছোট্ট হৃদয়

নবীজির জীবনের এমন বহু ঘটনা ইতিহাসে লিপিবদ্ধ রয়েছে, যেখানে তিনি শিশুদের প্রতি অসাধারণ মমত্ব, স্নেহ আর হাসিমাখা আচরণে সিক্ত করেছেন। হজরত হাসান ও হুসাইন (রাঃ) তাঁর হৃদয়ের জান, তাঁর কাঁধে চড়ে খেলেছেন—আর তিনি সেজদা দীর্ঘ করেছেন, শুধু তাদের আনন্দের খাতিরে।

এক সাহাবি একবার বিস্ময়ের সঙ্গে বললেন, "আমার তো দশজন সন্তান, কিন্তু আমি কাউকেই চুমু দিইনি।" উত্তরে রাসুল ﷺ বললেন: "যে দয়া করে না, সে দয়া লাভ করবে না।" (বুখারি)

একবার নবীজি ﷺ মসজিদে নামাজ পড়াচ্ছিলেন। এ সময় তাঁর প্রিয় নাতি এসে তাঁর পিঠে চড়ে বসে। রাসুলুল্লাহ ﷺ সেজদা দীর্ঘ করেন, যতক্ষণ না শিশুটি স্বেচ্ছায় নেমে আসে। নামাজ শেষে তিনি বলেন,

"সে আমার পিঠে চড়েছিল, আমি চাইলাম না তাকে তাড়াহুড়ো করে নামিয়ে দিই।"

কি অপূর্ব এক ভালোবাসা! আজ আমরা যেখানে শিশুকে 'বাধা' মনে করি, সেখানে রাসুল ﷺ তাঁর ভালোবাসার পাখিদের জন্য নামাজের সময়ও কোমলতা দেখিয়েছেন।

রাসুল ﷺ কখনো কখনো শিশুদের সঙ্গে হাঁটতেন, খেলতেন, এমনকি দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিতেন। এক শিশুকে মজা করে তিনি বলেছিলেন,

"আয় আবু উমাইর, আমরা খেলি!"

এই শব্দে ছিল আন্তরিকতা, কোমলতা ও বন্ধুত্বের আমন্ত্রণ।

তিনি কখনো শিশুর দোষ খোঁজেননি, বরং তাদের ভালো দিকগুলো তুলে ধরতেন, উৎসাহ দিতেন। কোনো শিশুর কান্না শুনলে তাঁর মন ব্যথায় ভরে যেত।

 নাম ধরে ডাকতেন, পাশে বসিয়ে রাখতেন

রাসুল ﷺ শিশুদের নাম ধরে ডাকতেন, খুঁজে খুঁজে কাছে ডাকতেন। কাউকে তিরস্কার নয়, বরং উৎসাহ ও মমতা ছিল তাঁর আচরণের প্রধান বৈশিষ্ট্য।

একবার তিনি বলেন,

"আমি নামাজ শুরু করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু একটি শিশুর কান্না শুনে নামাজ সংক্ষিপ্ত করে ফেললাম, যাতে তার মা কষ্ট না পায়।" (বুখারি)

বর্তমান সমাজে শিশুরা প্রায়ই অবহেলা ও অবজ্ঞার শিকার হয়। অথচ রাসুলুল্লাহ ﷺ আমাদের শিখিয়েছেন, শিশুরা ভালোবাসা পেলে গড়ে ওঠে সুস্থ, স্বাভাবিক ও আত্মবিশ্বাসী মানুষ হিসেবে।

রাসুল ﷺ–এর জীবনের এই অধ্যায় আমাদের মনে করিয়ে দেয়  "একটি শিশুর হাসি শুধু তার মুখেই নয়, আমাদের হৃদয়েও আলো ছড়িয়ে দেয়, যদি আমরা তা দেখার চোখ রাখি।"

এনএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ