ভারতের মুসলিমরা নানাভাবে নিগৃহীত হচ্ছেন। ওয়াকফ সংশোধন আইনের কারণে মুসলিমরা যখন অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে তখন তাদের ধর্মীয় পোশাক বোরকাকে বিতর্কিত করার অপকৌশল ধরা পড়েছে। বিহারের কাটিহারের মানিয়া রেলওয়ে স্টেশনে দুই হিন্দু নারী বোরকা পরে মদ পাচার করতে গিয়ে ধরা পড়েছেন। এই ঘটনাকে ধর্মীয় পোশাককে বিতর্কিত করার অপকৌশল হিসেবে দেখছেন মুসলিমরা।
পিপরাধারী টোলার বাসিন্দা বীণা দেবী ও নন্দিনী কুমারী পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিহারে মদ আনার চেষ্টা করছিলেন। তারা শাড়ির উপর বোরকা পরে, নিজেকে গর্ভবতী বলে দেখিয়ে মদের প্যাকেট শরীরে সেঁটে রেখেছিলেন—বীণার শরীরে ৯ লিটার এবং নন্দিনীর শরীরে ৮.১ লিটার বিদেশি মদ ছিল।
আবগারি সুপারিনটেনডেন্ট সুভাষ কুমার সিংহ জানান, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে এই দুই নারীকে গ্রেফতার করা হয়। এটি ছিল একটি বিশেষ অভিযান, যেখানে সীমান্তবর্তী অঞ্চল—বিশেষ করে রেলপথ ও নদীপথে নজরদারি চালানো হচ্ছিল।
এই ঘটনার পর বিভিন্ন মহলে ক্ষোভ ও বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণত মুসলিম নারীদের বোরকা পরা নিয়ে দক্ষিণপন্থী গোষ্ঠীগুলো যেভাবে সমালোচনা করে থাকে—তাদের ‘চরমপন্থী’ বলে অপবাদ দেয়—এই ঘটনার পর সেই দ্বৈত মানসিকতা সামনে এসেছে।
নারী অধিকারকর্মী জেবা খান বলেন, এটা চূড়ান্ত ভণ্ডামি। মুসলিম নারীরা বোরকা পরলে তিরস্কার করা হয়, আর হিন্দু নারী অপরাধে এটি ব্যবহার করলে সবাই চুপ থাকে।
স্থানীয় বাসিন্দা ফৈজান আহমেদ বলেন, ভাবুন তো, যদি এটা মুসলিম নারীরা করত, তাহলে দেশজুড়ে কত হইচই হতো! কিন্তু যেহেতু তারা হিন্দু, তাই সবাই চুপ।
এইভাবে বোরকার অপব্যবহার শুধু ইসলাম ধর্মের প্রতীকের প্রতি অসম্মান নয়, বরং মুসলিম নারীদের প্রতি বিদ্যমান সামাজিক সন্দেহ ও হেয়ভাবকে আরও জোরদার করে। কাটিহারের এই ঘটনা শুধু একটি আইনি ব্যর্থতার চিত্র নয়, এটি ধর্ম, লিঙ্গ ও ন্যায়বিচার নিয়ে সমাজের গভীর ভণ্ডামিকেও স্পষ্ট করে তোলে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। সূত্র: মুসলিম মিরর
এমএইচ/