খালিদ হাসান বিন শহীদ, ঝিনাইদহ
ফিলিপাইন থেকে পরিচালিত একটি অনলাইন জুয়া সাইটের বাংলাদেশীয় এজেন্ট মেহেদি হাসানকে ঝিনাইদহ থেকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল। রোববার রাতে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মুরারীদহ গ্রাম থেকে তাকে আটক করা হয়। এসময় উদ্ধার করা হয় জুয়ার কাজে ব্যবহৃত ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন।
মেহেদি হাসান মুরারীদহ গ্রামের জামির হোসেন মন্ডলের ছেলে।
ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) ইমরান জাকারিয়া জানান, আটক মেহেদি ফিলিপাইনভিত্তিক ‘বাংলাউইন’ নামক জুয়া সাইটের স্থানীয় এজেন্ট হিসেবে কাজ করত। সে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এজেন্ট নিয়োগ, মোবাইল ব্যাংকিং এবং অন্যান্য ডিজিটাল পেমেন্ট চ্যানেলের মাধ্যমে অর্থ লেনদেনের ব্যবস্থা করত। এ ছাড়া বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ম্যাসেজিং প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ব্যবহারকারীদের জুয়ায় অংশ নিতে প্রলুব্ধ করত।
তিনি আরও জানান, দীর্ঘদিন ধরেই সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল তার উপর নজর রাখছিল। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে এসআই খালিদ হাসান, এএসআই ইখলাছুর রহমান এবং হাফিজুর রহমান অভিযানের নেতৃত্ব দেন। আটকের পর তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে আদালতের মাধ্যমে গ্রেফতার দেখানো হয় । এ ঘটনায় অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছে ডিবি পুলিশ।
উল্লেখ্য, অনলাইন জুয়ার ফাঁদে ঝুঁকে পড়েছে ঝিনাইদহের তরুণ-যুবক ও কিছু দিনমজুর শ্রেণির লোক। অবৈধ ও বিটিআরসি অননুমোদিত অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপে চলছে জুয়ার বাণিজ্য। সকাল- দুপুর কিংবা মধ্যরাতে মোবাইল ফোনে চলছে জুয়ার আসর। দেখে বোঝার উপায় নেই হাতে থাকা মোবাইল ফোনেই অপরাধ জগতের এক ভয়াল জগতে নিমজ্জিত তরুণ-যুবক ও রিকশা, অটোভ্যান, ইজিবাইকচালকরা। তাদের হাতে থাকা অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন দিয়ে অখ্যাত অ্যাপের মাধ্যমে চলছে অবৈধ পথে অবৈধ অর্থ লেনদেন। নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, অবৈধ এসব জুয়ার অ্যাপে জেলা থেকে প্রতিমাসে কয়েক কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে। চাঞ্চল্যকর অনলাইন জুয়ার আসর শহর ছাড়িয়ে পৌঁছে গেছে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও।
অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনের জন্য অনুমোদিত অ্যাপ্লিকেশন পেতে গুগল প্লে স্টোর ও অ্যাপল স্টোর একমাত্র উৎস। কিন্তু অবৈধ ও বিটিআরসি’র অননুমোদিত অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে রমরমা অনলাইন জুয়ার-বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। এসব ক্ষতিকর অ্যাপ ব্যবহার করতে মোবাইল ফোনে বেড়েছে ভিপিএন সফ্টওয়্যারের ব্যবহার।
গোয়েন্দা সূত্র বলছে, অনলাইন জুয়ায় যে টাকা কথিত উপার্জন হিসেবে দেখানো হয়, প্রকৃতপক্ষে তা কোনো ব্যাংকিং বা অনুমোদিত আর্থিক চ্যানেলে উত্তোলন কিংবা জমা দেয়া অসম্ভব। প্রতারক জুয়াড়ি চক্র এজেন্ট ব্যবহার করে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে টাকা লেনদেন করে থাকে। চক্রটি কৌশলে টাকার হাত বদল ঘটায় মাত্র। তবে এসব জুয়ায় অর্জিত টাকার কোনো অস্তিত্ব অনুমোদিত আর্থিক চ্যানেলে পাওয়া যাবে না।
এমএইচ/