রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ।। ৬ আশ্বিন ১৪৩২ ।। ২৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
সিলেট মহানগরীর ২০নং ওয়ার্ড যুব জমিয়তের আহবায়ক কমিটি গঠন সম্পন্ন পেশীশক্তি ও কালো টাকার দৌরাত্ম বন্ধে পিআর পদ্ধতির প্রয়োজন- আহমদ আবদুল কাইয়ূম জেদ্দায় হজ সম্মেলন ও প্রদর্শনী নভেম্বরে আজ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিচ্ছে যুক্তরাজ্য খেলাফত মজলিস বানিয়াচং উপজেলা শাখার ইউনিয়ন প্রতিনিধি সম্মেলন ‘নীলনদের পানি যেমন নীল নয়, তেমনি জামায়াতেও ইসলাম নেই’ কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল, সম্পাদক মাজহারুল ‘ইসলামি শক্তির মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টি করে এমন বক্তব্য থেকে বিরত থাকুন’ গণঅধিকার পরিষদ ও এনসিপির একীভূত হওয়ার আলোচনা, নেতৃত্ব নিয়ে জটিলতা পিআর সিস্টেমের নির্বাচন নিরাপদ নির্বাচন, আদর্শের নির্বাচন: শায়খে চরমোনাই

'সামথিং ইজ বেটার দ্যান নাথিং'

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ইফতেখাইরুল ইসলাম

চাচা মিয়াকে নিজ নামে প্রায়ই কেউই চেনে না, সবাই তাকে সোমার বাপ বলে ডাকে! চাচা মিয়ার ভাষ্যমতে তাঁর বয়স ৭০ এর উপরে। আমার সাথে প্রতিদিন একবার দেখা হয়। আমার আর চাচার একটা কমন বিষয় আছে, আমরা দুজন দুজনকে দেখলে একটা হাসি দেই... আমার চাচা মিয়াকে দেখলে মন ভাল হয়ে যায় এবং আমি বিশ্বাস করি চাচারও একই বিষয় ঘটে।

চাচার সাথে আমার পরিচয় হয়েছে ১০ মাসেরও বেশি। একদিন চাচা আমার অফিসে আসেন, এসে বলেন স্যার 'আমারে একটা কাজ দেন'! এত বয়স্ক লোক কাজ কেন করবে বলতেই- বললেন মেয়েটা লেখাপড়া করে, খরচ আছে পরিবারের। তাঁর স্ত্রী বাড়ি বাড়ি পানি দিয়ে বেড়ান! আর এখন চাচাও কাজ করতে চাচ্ছেন। বয়স্ক মানুষ হিসেবে কোনো সহানুভূতি নিতে রাজি নন তিনি। অবাক বিস্ময়ে আত্মসন্মানে বলীয়ান এক বৃদ্ধের চেহারায় আমি কী এক অহংবোধের ছায়া দেখতে পেলাম। আমি যখন বললাম- আমার অফিস তিন তলায় উঠতে গেলে আপনার অনেক কষ্ট হবে, চাচা প্রত্যুত্তরে বলেন- বসে থাকলে আমি আরও বেশি অসুস্থ হয়ে যাবো স্যার! সেই থেকে তিনি আমাদের অফিস কক্ষের পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করেন! আমার ইচ্ছে হয় তিনি আরাম করুন, কিন্তু বিধি বাম! তিনি অনুগ্রহ নেয়ার পাত্র নন।

আজ হঠাৎ মনে হলো চাচা মিয়ার সাথে একটু কথা বলি। বললাম- চাচা দাঁত তো একটিও নেই, খাবার কিভাবে খান? চাচা বললেন, মাড়ি দিয়ে খাবার চিবিয়ে খেতে খেতে মাড়ি শক্ত হয়ে গেছে এখন অভ্যাস হয়ে গেছে।

খারাপ লাগে না জিজ্ঞেস করতে তিনি বললেন, একটু খারাপ লাগে তাতে কি স্যার " সামথিং ইজ বেটার দ্যান নাথিং"! আমি হতভম্ব হয়ে বললাম, "ওহ মাই গুডনেস"! চাচা বলেন, স্যার ১৯৬২ সালে ম্যাট্রিক পাস করেছি আমি, ব্যাংকে চাকুরি করতাম!! আমার মাথায় রীতিমত বাজ পড়লো যেন! কাজকে কখনো ছোট করে দেখিনা স্যার আর এখন বিলাসিতার সুযোগও নাই। কোথায় যে কি লুকিয়ে থাকে আমরা তার কতটাইবা জানি, মানব চরিত্র এক বিশাল বিস্ময়ের আধার!

সোমার বাবা, চাচা মিয়া দারিদ্র্যের কষাঘাতে পিষ্ট হয়েও নিজের ব্যক্তিত্ব বিকিয়ে দেননি! ব্যক্তিত্বের প্রকাশে তিনি "সামথিং ইজ বেটার দ্যান নাথিং" এই প্রবাদকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছেন।

লেখক: সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (ডেমরা জোন)।
(লেখকের ফেসবুক পেজ থেকে সংগৃহীত)

এসএস/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ