রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ।। ৬ আশ্বিন ১৪৩২ ।। ২৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
সিলেটে ১ মাস ধরে নিখোঁজ আবিদুল মিয়া সিলেট মহানগরীর ২০নং ওয়ার্ড যুব জমিয়তের আহবায়ক কমিটি গঠন সম্পন্ন পেশীশক্তি ও কালো টাকার দৌরাত্ম বন্ধে পিআর পদ্ধতির প্রয়োজন- আহমদ আবদুল কাইয়ূম জেদ্দায় হজ সম্মেলন ও প্রদর্শনী নভেম্বরে আজ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিচ্ছে যুক্তরাজ্য খেলাফত মজলিস বানিয়াচং উপজেলা শাখার ইউনিয়ন প্রতিনিধি সম্মেলন ‘নীলনদের পানি যেমন নীল নয়, তেমনি জামায়াতেও ইসলাম নেই’ কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল, সম্পাদক মাজহারুল ‘ইসলামি শক্তির মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টি করে এমন বক্তব্য থেকে বিরত থাকুন’ গণঅধিকার পরিষদ ও এনসিপির একীভূত হওয়ার আলোচনা, নেতৃত্ব নিয়ে জটিলতা

জাতীয় স্বার্থে বাংলাদেশের আলেমদের ঐক্য জরুরি: আল্লামা কমরুদ্দিন আহমদ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

উপমহাদেশের বিখ্যাত দীনি বিদ্যাপীঠ ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দের প্রবীণ মুদার্রিস হজরত শায়খ আল্লামা কমরুদ্দিন আহমদ গৌরখপুরী (হাফিযাহুল্লাহ৷) যিনি দেওবন্দে একসময় দীর্ঘ দিনের জন্য শিক্ষাসচিবও ছিলেন৷ হাদিস শাস্ত্রের বিখ্যাত কিতাব 'মুসলিম শরিফে'র দরস দিচ্ছেন প্রায় ৪০বছর ধরে৷ ক' মাস আগে তিনি দেওবন্দে শায়খে সানী হিসেবেও দায়িত্বগ্রহণ করেছেন৷

হজরতের বাসা দেওবন্দ মাদরাসা সংলগ্ন মসজিদে 'তাইয়্যিবে'র সাথেই৷ বাংলাদেশী মুসলমানদের চলমান নানা বিভক্তি, মুসলমানদের বিরুদ্ধে দেশি বেশি চক্রান্ত, চলমান আরো নানা সমস্যার সাথে খৃষ্টান মিশনারীর তৎপরতা সম্পর্কেও কথা হয়৷

কথা বলেছেন, দারুল উলুম দেওবন্দের শিক্ষার্থী হাওলাদার জহিরুল ইসলাম

বাংলাদেশের উলামায়ে কেরাম, তাদের দীনি খেদমত ও জাতীয় ইস্যু নিয়ে তাদের প্রয়াস সম্পর্কে জানতে চাই। 

বাংলাদেশে উলামাদের সংখ্যা আশা জাগানিয়ার মতো৷ তাদে দীনি খেদমতও প্রশংসার দাবিদার৷ তবে উলামাদের মাঝে ঐক্যের একটা অভাব রয়েছে৷ ছোট ছোট বিষয়ে মতভেদ করে হকপন্থী উলামাগণ বিভিন্ন দলে বিভক্ত৷ ছোট খাটো বিষয়ে এখতেলাফ থাকতে পারে৷ এটা স্বাভাবিক৷ তবে জাতীয় ও ইসলামি স্বার্থে সবার মাঝে এত্তেহাদ-ঐক্যটা জরুরি৷

বাংলাদেশে জনসংখ্যার দিক থেকে মুসলিম হলো ৯০ শতাংশ৷ কিন্তু রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে উলামাদের কর্তৃত্ব তেমনটা দেখা যায় না৷ এর পেছনে কারণ কী বলে মনে করেন?

ঐ একই কথা৷ এখতেলাফটা কম হতে হবে৷ তাহলে উলামাদের জন্য সংসদে যাওয়া, রাষ্ট্রীয় কাজে অংশগ্রহণ খুবই সহজ৷ দেখো, তোমাদের বাংলাদেশে মওদূদী মতবাদে বিশ্বাসী জামায়াতে ইসলামি রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়ে বড় বড় পদের অধিকারী হয়েছে৷ (যদিও এখন তারা স্বাধীনতাবিরোধী কাজের জন্য ভালো অবস্থানে নেই৷) এটা তাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার ফসল৷ অথচ উচিত তো ছিলো হক্কানী উলামায়ে কেরামের বড় একটা অংশ সংসদে যেতে পারা৷ উলামাদের সংখ্যা তো কম না৷ সাধারণ মানুষরাও উলামাদের ভালোবাসে৷

বাংলাদেশে খৃষ্টান মিশনারী সম্পর্কে সম্ভবত জানা আছে?

বিষয়টা আমরা জানি৷ বাংলাদেশ সফরে গিয়েও শুনেছি৷ বাংলাদেশে চাটগাম-চট্টগ্রাম, নোয়াখালিতে খৃষ্টান মিশনারীগুলো বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কাজের আড়ালে যে হারে 'খৃষ্টবাদ' প্রচার করছে তা খুবই আশঙ্কাজনক। এসব দ্রুত থামিয়ে দেয়া দরকার৷ অন্যথায় তারা আগামীতে ইসলাম ও দেশের জন্য ক্ষতিকর বলেই সাব্যস্ত হবে৷ যেমটি করেছিলো তৎকালীন ব্রিটিশরা৷

এ ব্যাপারে উলামায়ে কেরামের করণীয় সম্পর্কে যদি বলতেন?

আলহামদু লিল্লাহ! বাংলাদেশের উলামায়ে কেরাম দীনের বহুমুখি খেদমত আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছেন৷ দিন দিন মাদরাসা বাড়ছে, আলেমেদের সংখ্যা বাড়ছে৷ তবে মিশনারীগুলোর মোকাবেলা শুধু দীনিভাবে করলেই যথেষ্ট হবে না৷ মিশনারীগুলো সাধারণত গরিব অসহায় মুসলামনদের টার্গেট করে থাকে৷ সে ক্ষেত্রে উলামাদের জন্য করণীয় হলো-দীনদার বিত্তশালী মুসলমানদের সহযোগিতায়,
১৷ বিভিন্ন এলাকায় (যেখানে মিশনারীগুলো কাজ করছে) শিক্ষাকেন্দ্র বা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা৷
২৷ বাচ্চাদের বিনা মূল্যে (দীনি ও আধুনিক) শিক্ষা প্রদান করা৷
৩৷ বড়দের মাঝে দাওয়াতি কাজ জোরদার করা৷
৪৷ প্রাথমিক হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা৷
৫৷ গরবিদের মাঝে বিনা সুদে ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা করা৷
৬৷ সময়ে সময়ে কল্যাণ তহবিল গঠনপূর্বক আর্থিক সহায়তা প্রদান করা৷
এ ধরনের জনকল্যাণমূলক কাজ দিয়েই মিশনারীগুলোর সফল মোকাবেলা সম্ভব৷ এ ক্ষেত্রে সরকারিভাবেও আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মুসলমানদের সহযেগিতা করা প্রয়োজন৷ যাতে তারা অভাবের কারণে ইসলাম ধর্ম ত্যাগ না করে!

উলামায়ে কেরাম ও দীনদার মুসলমানগণ জোরালো ভূমিকা (দীনি ও আর্থিকভাবে) পালন করলে আশা করি সাময়িক সব সমস্যা কেটে যাবে। আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে দীনে ইসলামের জন্য কবুল করুন৷ ইসলামের সেবা করার তাওফিক দিন৷ আমিন!

এআর


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ