বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যু নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া নানা বিভ্রান্তি ও গুজবকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে নাকচ করে দিয়েছেন চিকিৎসকরা। আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে তাঁর মৃত্যুর পর হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মারুফ রায়হান খান এক ফেসবুক পোস্টে দেশনেত্রীর শেষ মুহূর্তের চিকিৎসাকালের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে এসব অপপ্রচারের জবাব দেন।
ডা. মারুফ রায়হান জানান, বেগম জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্যের সাথে তাঁর নিয়মিত যোগাযোগ ছিল এবং তিনি প্রতিদিন ক্লিনিক্যাল প্যারামিটারগুলো পর্যবেক্ষণ করতেন। তিনি বলেন, "সোমবার রাতেই বোঝা যাচ্ছিল পরিস্থিতি চূড়ান্ত অবনতির দিকে যাচ্ছে। ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে যারা প্রচার করতেন যে তিনি অনেক আগেই মারা গিয়েছেন, তাদের তথ্যগুলো ছিল সম্পূর্ণ ভুল। গতকাল রাতেও বেগম জিয়ার ডায়ালাইসিস হয়েছে।"
চিকিৎসকের ভাষ্য অনুযায়ী, সোমবার রাত ১১টার পর থেকেই তাঁর রক্তচাপ বা ব্লাড প্রেশার দ্রুত কমতে শুরু করে। রাত ২টার দিকে চার ধরনের উচ্চমাত্রার ইনজেকশন দেওয়ার পরেও রক্তচাপ স্থিতিশীল করা যাচ্ছিল না। রক্তে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বা টোটাল কাউন্ট মারাত্মকভাবে কমে গিয়েছিল এবং তাঁর শরীরে এমন কিছু ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ধরা পড়েছিল যা অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্ট ছিল। অর্থাৎ কোনো ওষুধই আর কাজ করছিল না।
ডা. মারুফ আরও উল্লেখ করেন, পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হওয়ায় পরিবারের সকল সদস্যকে রাতেই হাসপাতালে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। অনেক শিক্ষিত মানুষ এবং সাংবাদিকও বেগম জিয়ার বেঁচে থাকা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করতেন—এমন মানসিকতার প্রতি তিনি গভীর আফসোস প্রকাশ করেন। তিনি জানান, চিকিৎসাকালীন সময়ে সাময়িক উন্নতির ফলে কয়েকবার তাঁর লাইফ সাপোর্ট খুলে নেওয়ার চেষ্টাও করা হয়েছিল।
একজন প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যু নিয়ে এমন 'নোংরামি ও গুজব' ছড়ানো থেকে বিরত থাকতে পবিত্র কোরআনের উদ্ধৃতি দিয়ে সবাইকে সতর্ক করেন এই চিকিৎসক। তিনি স্পষ্ট করেন যে, আজ ৩০ ডিসেম্বর সকালেই বেগম খালেদা জিয়া শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন এবং এর আগে তিনি জীবিত অবস্থায় যথাযথ চিকিৎসাধীন ছিলেন।
আরএইচ/