ফাঁদে ফেলে সংগঠিত ধর্ষণগুলো মুসলিম তরুণীদের জীবনের নিছক কোনো ট্র্যাজেডি নয় বলে মন্তব্য করেছেন জনপ্রিয় ইসলামী আলোচক ড. মিজানুর রহমান আজহারি। একইসাথে সন্তানরা কেন এত সহজে প্রলোভনের ফাঁদে ধরা দেয় সে প্রশ্নও তুলেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ প্রশ্ন তোলেন।
আজহারি তার পোস্টে বলেন, ‘সম্প্রতি ফাঁদে ফেলে সংগঠিত ধর্ষণগুলো মুসলিম তরুণীদের জীবনের নিছক কোনো ট্র্যাজেডি নয় বরং আমাদের সামগ্রিক নৈতিক অবক্ষয়ের এক অশনিসংকেত।
পাশাপাশি এটি দেশের স্থিতিশীলতা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার এক অপচেষ্টাও বটে। যদি এটি কোনো অপশক্তির ষড়যন্ত্র হয়ে থাকে, তাহলে তা গোটা দেশ ও জাতির নিরাপত্তা এবং শৃঙ্খলার জন্য চরম এক হুমকি। প্রশাসনের রহস্যজনক নীরবতা আমাদের নাগরিক নিরাপত্তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে এসব অপকর্মের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য প্রশাসনের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, ‘কিন্তু একইসঙ্গে আমাদেরও আত্মসমালোচনা দরকার—আমরা কি কেবল অপরাধীদের ধিক্কার দিয়েই দায় শেষ করছি? কেন আমাদের সন্তানরা এত সহজে প্রলোভনের ফাঁদে পড়ে? অভিভাবকরা কি জানেন তাদের সন্তান কার সঙ্গে মিশছে, কী ধরনের চিন্তায় প্রভাবিত হচ্ছে কিংবা কোন ভার্চুয়াল জগতের গহ্বরে হারিয়ে যাচ্ছে? একজন মুসলিম তরুণ বা তরুণী যদি সহজেই প্রলোভনে পড়ে ঈমান ও নৈতিকতার সীমা লঙ্ঘন করে; তবে সেটা শুধু প্রলোভনকারীর দোষ নয়—বরং আমাদের পরিবার ও গোটা সমাজের ব্যর্থতাও বটে।’
আজহারি আরো বলেন, ‘আত্মনিয়ন্ত্রণ, মূল্যবোধ ও নৈতিকতার চর্চা আজ মুসলিম পারিবারিক জীবনে চরম মাত্রায় অবহেলিত হচ্ছে। আমরা সন্তানদের আধুনিক শিক্ষা দিচ্ছি ঠিকই কিন্তু তাদের আত্মিক শক্তি, উন্নত চরিত্র ও ঈমানি দৃঢ়তা গড়ে তুলতে পারছি না। উত্তর আধুনিকতার এই কঠিন সময়ে, নৈতিকতার চর্চা ও পারিবারিক তারবিয়া ছাড়া কোথাও মুসলিম সমাজ নিরাপদ থাকতে পারবে না।
তাই, প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপের পাশাপাশি সমাজের প্রতিটি পরিবারকেই হতে হবে ঈমানি চেতনা ও নৈতিকতার অভেদ্য দুর্গ। এটাই আমাদের আত্মরক্ষার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার।’
এলএইস/