সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫ ।। ৩ কার্তিক ১৪৩২ ।। ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৭

শিরোনাম :
ওমরায় গেলেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ইসলামী আন্দোলন ক্ষমতায় গেলে এক টাকাও লুটপাট হবে না: শায়খে চরমোনাই কোরআন অবমাননার দায় স্বীকার সেই অপূর্ব পালের জামায়াত-ইসলামী আন্দোলনসহ সমমনা দলগুলোর কর্মসূচি ঘোষণা তুরস্কে স্কলারশিপ পেলেন ৫ শিক্ষার্থী, এমবিএম ফাউন্ডেশনের সংবর্ধনা পাকিস্তানের শীর্ষ আলেম মাওলানা ফজলুর রহমান সিলেটে আসছেন ১৭ নভেম্বর জামায়াতের নির্বাচনি সভা ভণ্ডুল করে দিলেন বিএনপির নেতাকর্মীরা মিথ্যা মামলায় দুই মাদরাসা শিক্ষককে হয়রানি, মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন চাঁদা না পেয়ে মসজিদের ইমামকে মারধর, স্ত্রীকে শ্লীলতাহানি ৫ দফা দাবিতে আন্দোলনরত দলসমূহের যৌথ সংবাদ সম্মেলন

ইসলামে মাতৃভাষার গুরুত্ব

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: পৃথিবীর নানা দেশে নানা ভাষাভাষী মানুষের কাছে আল্লাহ অসংখ্য নবি-রসুল পাঠিয়েছেন। সব নবি-রসুলের ওপর আল্লাহ ওহি পাঠিয়েছেন তাদের স্বগোত্রীয় ভাষায়। মহান রব্বুল আলামিন সুরা ইবরাহিমের ৪ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করেন—‘আমি প্রত্যেক রসুলকেই তার স্বজাতির ভাষাভাষী করে পাঠিয়েছি, যেন তারা তাদের সম্প্রদায়ের কাছে সুস্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করতে পারে।’

মানুষের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হওয়ার এবং মনের ভাব প্রকাশ করার অন্যতম প্রধান মাধ্যম হলো ভাষা। তাইতো ভৌগলিক অঞ্চলভেদে প্রত্যেক জাতিগোষ্ঠীর জন্য রয়েছে আলাদা আলাদ ভাষা।

এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলা সুরা রূমের ২২ নং আয়াতে উল্লেখ করেন, ‘আর মহান আল্লাহর নিদর্শসমূহের হতে (একটি নিদর্শন হলো) আসমান ও জমিন সৃষ্টি এবং মানুষের ভাষা ও বর্ণের ভিন্নতা। এর মধ্যে জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য উপদেশ রয়েছে।’

বাঙালি ও বাংলাদেশীদের মুখের ভাষা, প্রাণের ভাষা, আত্মার বন্ধনের ভাষা তথা রাষ্ট্রীয় ভাষা হলো বাংলা ভাষা। ১৯৫২ সালে ভাষার জন্য রক্ত ঝড়িয়েছিলেন রফিক-শফিক-জব্বাররা। বাংলা ভাষাকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে দুই যুগ আগে।

যাদের অবদানে আজ বাংলা ভাষায় ইসলাম ও মুসলিম তাহজিদ তমদ্দুনের দাওয়াত, প্রচার-প্রসারে আমরা বাংলা ভাষাভাষীদের নিকট দ্বীনের দাওয়াত ও কুরআনের বাণী পৌছাতে সক্ষম হচ্ছি। তাই বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অনুশীলন চর্চায় বিকল্প নেই।

ভাষার গুরুত্ব উপলব্দি করেই আল্লাহ তাআলার পয়গাম্বর হজরত মুসা আলাইহিস সালাম তাঁর ভাই হজরত হারুন আলাইহিস সালামকে নিজের সঙ্গি করার জন্য আল্লাহর কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন এই কারণে যে, সুন্দর ও প্রাঞ্জল ভাষায় আল্লাহর একত্ববাদ ও দ্বীনের বক্তব্যকে উত্তম বচন ভঙ্গিতে তৎকালীন সম্রাট ফিরাউন ও তাঁর সঙ্গিদের নিকট তুলে ধরবে।

ভাষার গুরুত্ব বুঝাতে হজরত মুসা আলাইহিস সালামের বক্তব্যকে আল্লাহ তাআলা তা কুরআনে উল্লেখ করে বলেন, ‘আমার ভাই হারূন, তিনি আমার থেকে অনেক বেশি প্রাঞ্জল ভাষী। তাই আপনি তাকে আমার সহযোগী করে প্রেরণ করুন; যাতে সে আমাকে (দাওয়াতের ক্ষেত্রে তার প্রাঞ্জল ভাষার দ্বারা) সত্যায়িত করে। কেননা আমি আশঙ্কা করছি (আমার বক্তব্য সত্য হওয়া সত্বেও) তারা আমাকে মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত করবে।’ (সুরা কাসাস : আয়াত ৩৪)

ভাষার গুরুত্ব অত্যাধিক হওয়ায় আল্লাহ তাআলা হজরত মুসা আলাইহিস সালামের উপর তাওরাত অবতীর্ণ করেছেন হিব্রু ভাষায়, ইউনানি ভাষায় যাবুর অবতীর্ণ করেছেন পয়গাম্বর হজরত দাউদ আলাইহিস সালামের উপর, আর হজরত ঈসা আলাইহিস সালামের উপর ইঞ্জিল অবতীর্ণ করেছেন সুরিয়ানি ভাষায়।

সর্বোপরি সমগ্র জাতির হেদায়েতের জন্য আলোর দিশারী হিসেবে শেষ নবি ও রাসুল হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর শ্রেষ্ঠ ধর্মগ্রন্থ পবিত্র কুরআন মাজিদ অবতীর্ণ করেন তাঁর স্বজাতি ভাষা আরবি ভাষায়।

বর্তমানে বাংলা ভাষায় অনুদিত হয়েছে কুরআনের হাদিসের অগণিত অসংখ্য কপি। রচিত হয়েছে কুরআনে হাদিসের ব্যাখ্যা গ্রন্থসহ অসংখ্য ইসলামি পুস্তকের মহাসম্ভার। যা বাংলা ভাষাভাষী মানুষের জন্য আল্লাহ অশেষ রহমত।

যাদের প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে এ বাংলা ভাষা। সেই দায়বদ্ধতা থেকেই আমাদের উচিত ভাষা শহিদদের জন্য দোয়া করা।  আল্লাহ তাআলা সকল ভাষা শহীদদের সর্বোত্তম প্রতিদান দান করুন। একই সাথে বিশুদ্ধ মাতৃভাষা চর্চা করা, বাংলাকে সব বিকৃতি থেকে রক্ষা করা।

-এসআর


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ